কৃষ্ণগহ্বর খুঁজে পেয়ে ৩ বিজ্ঞানীর পদার্থে নোবেল জয়

মহাবিশ্বের সবচেয়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন অঞ্চলে বিচরণকারী এবং সবকিছু গ্রাস করে নেয়া দানব ব্লাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বরের বিষয়ে আমাদের বোঝাপড়া উন্নত করার স্বীকৃতি হিসেবে এ বছর পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার জয় করে নিয়েছেন তিন বিজ্ঞানী।

নোবেল কমিটি জানায়, কৃষ্ণগহ্বরের অস্তিত্ব থাকা যে আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্বের এক বলিষ্ঠ ভবিষ্যদ্বাণী ছিল তা আবিষ্কারের জন্য এবারের পুরস্কারের অর্ধেক পাবেন ব্রিটেনের রজার পেনরোজ। আর আমাদের ছায়াপথের কেন্দ্রে এক অতিবিশাল নিবিড় বস্তু আবিষ্কারের জন্য পুরস্কারের বাকি অর্ধেক ভাগাভাগি করে নেবেন জার্মানির রাইনহার্ড গ্যানজেল এবং যুক্তরাষ্ট্রের আন্দ্রে গেজ।

কমিটির মতে, মহাবিশ্বের অন্যতম উদ্ভট বস্তু কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে কাজের অবদান হিসেবে এবারের পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেয়া হচ্ছে।

কৃষ্ণগহ্বর সম্ভবত জ্যোতির্বিদ্যায় সবচেয়ে রহস্যময় এবং শক্তিশালী বস্তু। এগুলো প্রতিটি ছায়াপথের কেন্দ্রে রয়েছে এবং ছোটগুলো মহাবিশ্বের চারদিকে ছড়িয়ে আছে। কিছুই, এমনকি আলোও তাদের অবিশ্বাস্য মাধ্যাকর্ষণ থেকে বাঁচতে পারে না। তারা হলো মহাজগতের চূড়ান্ত শেষ গন্তব্য।

মহাবিশ্বে কৃষ্ণগহ্বরের মতো বস্তু যে থাকতে পারে তা আলবার্ট আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্বের ভিত্তিতে গাণিতিকভাবে প্রমাণ করেন রজার পেনরোজ। তার বিস্তারিত গবেষণা প্রকাশ পায় ১৯৬৫ সালে। তবে, ১৯৯০ দশকে আমাদের মিল্কিওয়ে ছায়াপথের কেন্দ্রে প্রথমবারের মতো সত্যিকারের কৃষ্ণগহ্বর খুঁজে পান রাইনহার্ড গ্যানজেল এবং আন্দ্রে গেজ। তারা দেখেন যে এক অতিভারী অদৃশ্য বস্তু নক্ষত্রগুলোকে নিজের দিকে টেনে রেখেছে। এটি সাধারণ কোনো কৃষ্ণগহ্বর ছিল না, ছিল এক অতিবিশাল কৃষ্ণগহ্বর, যার ভর আমাদের সূর্যের ৪০ লাখ গুণ বেশি।

এখন বিজ্ঞানীরা জানেন যে সব ছায়াপথে অতিবিশাল কৃষ্ণগহ্বর রয়েছে। আর ২০১৯ সালে বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো একটি কৃষ্ণগহ্বরের ছবি ধারণ করতে সক্ষম হন।

পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পাওয়া চতুর্থ নারী আন্দ্রে গেজ। তার আগে ১৯০৩ সালে মেরি কুরি, ১৯৬৩ সালে মারিয়া মেয়ার এবং ২০১৮ সালে ডোনা স্ট্রিকল্যান্ড এ সম্মান অর্জন করেন।