খোলা বাজারে চালের দাম দ্বিগুণ, আটা ‘মানহীন’

বাজারে দাম বাড়ায় খোলা বাজারে বিক্রির (ওএমএস) চালের দাম দ্বিগুণ বাড়িয়েছে সরকার। আগে এ বাজারে ১৫ টাকা দরে বিক্রি হলেও মোটা চালের দাম বাড়িয়ে ৩০ টাকা করেছে সরকার।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ঘোষণা দিয়েছিলেন খোলা বাজারের আগের মতোই ১৫ টাকা কেজিতে চাল এবং ১৭ টাকা কেজিতে আটা বিতরণ করা হবে। তবে কর্মসূচি চালুর প্রথম দিন দ্বিগুণ দামে চাল বিক্রি করা হচ্ছে।

কর্মসূচির আওতায় ঢাকা মহানগরীতে ১২০টি ট্রাকে করে চাল বিক্রি হচ্ছে। আগামী দুই একদিনের মধ্যে সারা দেশের ৬২৭টি ট্রাক থেকে ওএমএসের চাল ও আটা বিক্রি করা হবে।

১৭ সেপ্টেম্বর রোববার রাজধানীর আজিমপুর, মোহাম্মাদপুর ও মহাখালীতে দেখা যায়, সরকার নির্ধারিত বাড়তি দামেই চাল কিনছেন নগরবাসী। তবে আটার মান ভালো না এমন অভিযোগে আটা নেননি।

আজিমপুরে চাল ও আটা কিনতে আসা রহীম ব্যপারী অভিযোগ করেন, তিনি চালের সঙ্গে সঙ্গে আটাও কিনতে চাচ্ছিলেন। কিন্তু আটার মান ভালো না থাকায় নিতে পারছেন না।

ওএমএস এর ট্রাকে চাল ও আটা বিক্রেতা মুন্সী নূর মোহাম্মাদ সেলিমও আটার মানের বিষয়ে সংশয়ে থাকায় বস্তাই খুলেন নি। তিনি জানান, গুদাম থেকে তাদের এই আটা দেওয়া হয়েছে। অথচ এর মান তেমন ভালো না।

চালের দ্বিগুণ দাম সম্পর্কে মুন্সী নূর মোহাম্মাদ সেলিম বলেন, চালের দাম সরকার যা নির্ধারণ করে দিয়েছে তাই তারা রাখছেন। দেশে এখন চালের ‘অভাব’ বলেই সরকার দাম বাড়িয়েছে।

তিনি জানান, প্রতি কেজি চালের গুদাম মূল্য সাড়ে ২৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে আটা আগের দামেই বিক্রি করা হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে চালের দাম বাড়ানোর বিষয়ে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. বদরুল হাসান বলেন, আগে ওএমএসের চালের দাম ২৪ টাকা থেকে কমিয়ে ১৫ টাকায় করা হয়। অনেক দিন হয়ে গেছে, চালের দামও বেড়েছে, আগের দাম রাখলে তো আর হয় না। আকাশ-পাতাল পার্থক্য তো রাখা যায় না। বেশি পার্থক্য থাকলে লিকেজের সম্ভাবনা রেড়ে যায়, নানান রকমের সমস্যা হয়।

অন্যদিকে কালোবাজারি হওয়ার আশঙ্কায় খোলা বাজারে চালের দর দ্বিগুণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। তিনি জানান, ‘বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দাম বাড়ানো হয়েছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বাজারে যখন চালের দাম ৩০ টাকা ছিল, তখন ওএমএসের চালের দাম ১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। বর্তমানে বাজারে চালের দাম ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। তাই এখন আগের দাম রাখা যুক্তিসঙ্গত নয় বলে মনে করেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, ‘এখন যদি আগের দামই রাখা হয়, তাহলে কালোবাজারি হওয়ার শঙ্কা থাকে। তাই যাতে কালোবাজারি না হয়, সঠিকভাবে বিক্রি হয়, সে জন্যই ওএমসের চালের দাম বাড়ানো হয়েছে।’

১৭ সেপ্টেম্বর রোববার থেকে সারা দেশে ওএমএস চালু হওয়ার কথা থাকলেও, সব জায়গায় চালু হয়নি। খাদ্যমন্ত্রী জানান, আশা করছি দুই-এক দিনের মধ্যে সব জায়গায় ওএমএস চালু হবে।

৬২৭টি ট্রাক থেকে ওএমএসের চাল ও আটা বিক্রি করা হবে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ঢাকা মহানগরীতে ১২০টি ট্রাকে করে চাল ও আটা বিক্রি করা হবে, প্রতি ট্রাক থেকে দুই টন আটা ও এক টন চাল বিক্রি করা হবে। ঢাকার বাইরে বিক্রি হবে শুধু চাল। ওএমএসের প্রতি কেজি চালের গুদাম মূল্য সাড়ে ২৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, ওএমএসে আগের মতোই ১৫ টাকা কেজিতে চাল এবং ১৭ টাকা কেজিতে আটা বিতরণ করা হবে। কিন্তু কর্মসূচি চালুর দিন দ্বিগুণ দামে চাল বিক্রি করছে সরকার।

আজকের বাজার : এলকে/এলকে ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭