গাড়িতে আর সিএনজি নয়,আসছে অটো-গ্যাসের বিধান

চলমান গ্যাস সংকট কাটাতে সরকার যানবাহনে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস বা সিএনজির পরিবর্তে অটো-গ্যাস চালুর জোরালো উদ্যোগ নিচ্ছে। এর অংশ হিসেবে মূল্যবৃদ্ধিসহ নানা উপায়ে সিএনজি ব্যবহারকে নিরুৎসাহিত করা হবে। এমনকি এক পর্যায়ে যানবাহনে সিএনজি ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, বর্তমান সরকার সিএনজির পরিবর্তে অটো-গ্যাস প্রচলনের উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি বলেন, ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রেক্ষিতে প্রাকৃতিক গ্যাসের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে সরকার এ উদ্যোগ নিয়েছে।

তিনি আরও জানান, সরকার ইতোমধ্যে রি-ফুয়েলিং স্টেশন ও রূপান্তর ওয়ার্কশপ স্থাপন, পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ নীতিমালা-২০১৬ জারি করেছে। এর আওতায় চারটি প্রতিষ্ঠানকে অটো-গ্যাসের রিফুয়েলিং স্টেশন স্থাপনের অনুমতিও দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠান চারটি হচ্ছে-ওমেরা, বসুন্ধরা, ওরিয়ন ও বেক্সিমকো।

রি-ফুয়েলিং স্টেশন ও রূপান্তর ওয়ার্কশপ স্থাপন, পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ নীতিমালা-২০১৬ এ বলা হয়েছে, যানবাহনে অকটেন, পেট্রোল ও ডিজেলের পরিবর্তে অটো গ্যাস একটি পরিবেশবান্ধব বিকল্প জ্বালানি হিসেবে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা লাভ করছে। যানবাহনে অটো গ্যাস ব্যবহারের ব্যয় তরল জীবাশ্ম জ্বালানির তুলনায় কম।

নীতিমালা অনুসারে, সরকার অটো-গ্যাসের মূল্য ঠিক করে দেবে।

উল্লেখ, অটো-গ্যাস হচ্ছে লিকুফায়েড পেট্রোলিয়াম গ্যাস বা এলজিপির একটি বিশেষ ধরণ। এলপিজি সাধারণত দুটি কাজে ব্যবহার করা হয়; গৃহস্থালী বা রান্না-বান্নার কাজে, অন্যটি হচ্ছে যানবাহন চালনা। গৃহস্থালী-এলপিজি ও অটো-এলপিজি (অটো-গ্যাস) এর মধ্যে উপাদানগত কিছু পার্থক্য আছে। দুটিরই প্রধান উপাদান প্রোপেন ও বুটান। গৃহস্থালী-এলপিজিতে সালফার বা ওই জাতীয় অন্য কোনো উপাদন মেশানো হয় গ্যাসে কটু গন্ধ সৃষ্টি করার জন্য, যাতে পাইপলাইনে কোনো ছিদ্র বা অন্য কোনো উপায়ে গ্যাস বের হলে টের পাওয়া যায়। রান্নাঘরে আগুন লাগার ঝুঁকি কমাতে এটি করা হয়।

অটো-গ্যাসকে বিশ্বব্যাপী সবুজ জ্বালানি (Clean Fuel) হিসেবে অভিহিত করা হয়। এই জ্বালানিতে পেট্রোল ও ডিজেলের তুলনায় ১০ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত কম কার্বনডাই অক্সাইড উৎপন্ন হয়।

অন্যদিকে অকটেনের তুলনায় অটো-গ্যাস মূল্যের দিক থেকে সাশ্রয়ী। অটো-গ্যাস ব্যবহারে জ্বালানি ব্যয় ১০ শতাংশের মতো কম হয়।

উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়, অটো-গ্যাস ব্যবহারে বিশ্বে শীর্ষ পাঁচটি দেশ হচ্ছে- তুরস্ক, দক্ষিণ কোরিয়া, পোল্যান্ড, ইটালি ও অস্ট্রেলিয়া।

ভারত ২০০ সালে অটো-গ্যাস ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। তবে দেশটিতে এখনো অটো-গ্যাস জনপ্রিয় হতে পারেনি। এর কারণ ভারতে বেশীরভাগ গাড়ি ডিজেলে চলে। অটো-গ্যাসের খরচ ডিজেলের চেয়ে বেশ বেশি।

আজকের বাজার: এলকে/এলকে ২৪ জুন ২০১৭