গাড়ি হামলার পরিকল্পনা ছিল জঙ্গিদের

ইউরোপের মতো বাংলাদেশেও জঙ্গিরা গাড়ি হামলার পরিকল্পনা করেছিল। তারা প্রশিক্ষণও নিয়েছিল। তবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় হামলা চালাতে পারেনি।

৯০ সেপ্টেম্বর শনিবার বেলা ১১ টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের জঙ্গি বিরোধী বিশেষ শাখা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম(সিটিটিসি) ইউনিটের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম।

এর আগে শুক্রবার রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত থেকে নব্য জেএমবির দুজনকে গ্রেপ্তার করে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ইউনিট। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নাঈম আহমেদ ওরফে আনাস ওরফে আবু হমজা ওরফে আরিশা কুনিয়া এবং আনোয়ার হোসেন।

মনিরুল ইসলাম বলেন, আনোয়ার সাভারের হেমায়েতপুরের একটি মোটরগ্যারেজে কাজ করত। ২০১৫ সালে সে কথিত মাস্টারের মাধ্যমে নব্য জেএমবির দাওয়াত পায়। তার সঙ্গে নব্য জেএমবির সারোয়ার জাহান মানিক, রিপন, নোমা, আল-বানী ও ডনদের যোগাযোগ ছিল। তারা থ্রিমায় যোগাযোগ করত বলে পুলিশের কাছে তথ্য-প্রমাণ রয়েছে। সেও জিজ্ঞাসাবাদে একই কথা জানিয়েছে। আনোয়ার নব্য জেএমবির শুরা সদস্যদের পরামর্শে গাড়ি হামলার জন্য নিজের গ্যারেজে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিল।

মনিরুল ইসলাম বলেন, হলি আর্টিজানের হামলার আগে ওই গাড়ি হামলার জন্য ড্রাইভিং এবং গাড়িবোমা তৈরির প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। তবে আর্টিজানের হামলার পর পুলিশ যে অভিযানগুলো চালিয়েছে এতে তারা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং তাদের পক্ষে হামলা চালানো সম্ভব হয়নি। আনোয়ার নব্য জেএমবির সাভার অঞ্চলের প্রধান আশ্রয়দাতা ছিল। গ্যারেজে কাজ করার পাশাপাশি মাঝে মাঝে সে নব্য জেএমবির সাংগঠনিক কাজ এবং অর্থের যোগানও দিত।

সংবাদ সংস্থা বিবিসি’র তথ্য মতে, গত চার বছরে ইউরোপের ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও সুইডেনে আটটি গাড়ি হামলার ঘটনা ঘটে। এসব হামলায় ১২৯ জন নিহত ও আহত হন প্রায় ১২৭ জন।

মনিরুল ইসলাম বলেন, নাঈম ও বাশারুজ্জামান চকলেট (পুলিশের অভিযানে নিহত) একটি বেসরকারি আইটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করত। তারা দুইজন ২০১৫ সালে একসঙ্গে নব্য জেএমবিতে যোগ দেয়।

সম্প্রতি মিরপুরের দারুসসালামে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে নিহত ‘জঙ্গি’ আবদুল্লাহর বিষয়ে কাউন্টার টেরোরিজমের কাছে কী তথ্য রয়েছে- জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, র‌্যাবের পক্ষ থেকে গত তিনদিনে আবদুল্লাহর বিষয়ে যথেষ্ট তথ্য দেয়া হয়েছে। এখন আমাদের কাছে থাকা তথ্যগুলো বলা সমীচীন হবে না।

গ্রেপ্তারের সময়ে আসামিদের কাছ থেকে বোমা তৈরির ৩০টি ডেটোনেটর এবং উগ্রপন্থী মতাদর্শের কিছু বই উদ্ধার করা হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান মনিরুল ইসলাম।

এদিকে নিজ দেশের সেনাবাহিনীর অত্যাচার আর বর্বরতার মুখে জীবন নিয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্য থেকে কেউ যেন জঙ্গি কার্যক্রমে রিক্রুট না হতে পারে সে বিষয়ে নজরদারি চলছে বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

মনিরুল বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে কেউ যাতে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে এবং ঝিমিয়ে পড়া জঙ্গিরা যাতে চাঙ্গা না হয়ে উঠে এ জন্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নজরদারি ও তৎপরতা রয়েছে।

শুক্রবার রাতে রাজধানীর নিকুঞ্জ ও খিলক্ষেত এলাকায় অভিযান চালিয়ে নব্য জেএমবির দুই সদস্যকে গ্রেফতারের ঘটনায় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ডিএমপি।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে/ ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭