চট্টগ্রামে সাবেক ইউপি সদস্যকে হত্যা এবং বরিশালে গ্রেপ্তার করা হয় ৪ জনকে

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে সাবেক ইউপি মেম্বার আবুল বশর তালুকদারকে দুই পা বিচ্ছিন্ন করে নৃশংসভাবে হত্যার সাড়ে ৫ মাস পর বরিশাল থেকে মামলার প্রধান আসামি আবদুল কাদেরসহ একই পরিবারের চারজনকে গ্রেপ্তারকরেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টেগেশন (পিবিআই)।

রবিবার রাতে পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পিবিআই জানিয়েছে, রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব এবং জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে বর্তমান ইউপি সদস্যের পরিকল্পনায় ও নেতৃত্বে তাকে খুন করা হয়। খুনের পর গ্রেপ্তার এড়াতে চার আসামি বরিশালে আত্মগোপন করে বাসা ভাড়া করে বসবাস শুরু করেন।

রবিবার দিনভর বরিশাল শহর ও বাবুগঞ্জ উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার চারজন হচ্ছেন- আবদুল কাদের (৫০), তার স্ত্রী হাছিনা বেগম ও ছেলে মো. রিদুয়ান (২৪) এবং জামাতা তৌহিদুল ইসলাম। তাদের বাড়ি বাঁশখালী উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের পূর্ব চাপাছড়ি গ্রামে।

জানা গেছে, বাঁশখালীর বাহারছড়া ইউনিয়নের পূর্ব চাপাছড়ি গ্রামের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আবুল বশর তালুকদারকে (৪৫) গত ১৯ মার্চ শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে সন্ত্রাসীরা দুই পা বিচ্ছিন্ন করে কুপিয়ে নৃশংসভাবে আহত করে। পরদিন শনিবার (২০ মার্চ) সকালে নিহত আবুল বশরের ডান পায়ের অংশ ধান ক্ষেত থেকে পাওয়া যায়। বাম পায়ের অংশ পাওয়া যায়নি। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আবদুল জব্বার (৫৫), মোজাক্কিদ (৩০) সাইদুর রশিদকে (৪০) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়।

পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার (চট্টগ্রাম জেলা) নাজমুল হাসান জানান, ঘটনার পর বাঁশখালী থানা পুলিশ বর্তমান ইউপি সদস্য নাছিরকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার চারজনের মধ্যে আবদুল কাদের ও তার ছেলে রিদুয়ান পালিয়ে বরিশাল চলে যান। পরবর্তীতে তাদের জামাতা তৌহিদুল বরিশাল মহানগরে গিয়ে একটি বাসা ভাড়া নেন। এরপর আবদুল কাদেরের স্ত্রী হাছিনাকেও নিয়ে যাওয়া হয়। তারা চারজন সেখানে আত্মগোপন করে ছিলেন।

তিনি জানান, হত্যাকাণ্ডের কারণ হিসেবে ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি, আবুল বাশার বিএনপির রাজনীতি করেন। তাকে হটিয়ে ইউপি সদস্য হন আওয়ামী লীগের নাছির। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধ ছিল। এর আগে থেকে দুই পরিবারের মধ্যে জমিজমা নিয়ে বিরোধ ছিল। আবুল বাশারের বিরুদ্ধে থানায় মামলাও হয়েছিল। এসব বিরোধের জেরে নাছিরের পরিকল্পনায় আবুল বাশারকে খুন করা হয়।’

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ১৯ মার্চ গভীর রাতে বাড়ি ফেরার পথে চাপাছড়ি গ্রামে আবুল বাশারের পথরোধ করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে দুই পা বিচ্ছিন্ন করে তাকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এরপর পায়ের দ্বিখণ্ডিত অংশ নিয়ে তারা উল্লাস করে গ্রামে। আবুল বাশার (২৬) বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চাপাছড়ি ওয়ার্ডের সদস্য ছিলেন।গ্রেপ্তার চারজনকে রবিবার বিকালে আদালতে হাজিরের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। খবর-ইউএনবি

আজকের বাজার/আখনূর রহমান