চট্টগ্রামে ২০৮ জন করোনায় আক্রান্ত

চট্টগ্রামে টানা চারদিন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দুইশ’র বেশি শনাক্ত হয়েছে। গতকাল আরো ২০৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পরে। সংক্রমণ হার ১১ দশমিক ১১ শতাংশ। তবে একটানা আট দিন মৃত্যুশূন্য থাকার পর করোনায় আক্রান্ত এক রোগী মারা গেছেন।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিবেদনে দেখা যায়, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নগরীর ছয়টি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ১ হাজার ৮৭২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন আক্রান্ত ২০৮ জনের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ১৭৪ জন এবং নয় উপজেলার ৩৪ জন। জেলায় মোট সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৩৮ হাজার ৫শ’ জন। এর মধ্যে শহরের ৩০ হাজার ৫৩২ জন ও গ্রামের ৭ হাজার ৯৬৮ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে হাটহাজারীতে ১৩ জন, সীতাকু- ও ফটিকছড়িতে ৫ জন করে, লোহাগাড়া ও রাউজানে ৩ জন করে, মিরসরাইয়ে ২ জন এবং রাঙ্গুনিয়া, বোয়ালখালী ও বাঁশখাালীতে ১ জন করে রয়েছেন।
গতকাল চট্টগ্রামে করোনায় এক রোগীর মৃত্যু হয়। ফলে মৃতের সংখ্যা এখন ৩৮৪ জনে দাড়িয়েছে। এতে শহরের বাসিন্দা ২৮১ জন ও গ্রামের ১০৩ জন। সুস্থ্যতার ছাড়পত্র পেয়েছেন ৪৯ জন। মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা এখন ৩৩ হাজার ৬৬৭ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন ৪ হাজার ৫৭২ জন এবং হোম আইসোলেশেনে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ্য হয়ে ওঠেন ২৯ হাজার ৯৫ জন। হোম আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ২৫ জন ও ছাড়পত্র নেন ১৩ জন। বর্তমানে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ১ হাজার ১০৯ জন।
উল্লেখ্য, একটানা আটদিন পর গতকাল করোনায় এক রোগীর মৃত্যু হয়। সর্বশেষ ২ জন মারা যান ১৫ মার্চ। সেদিন ১ হাজার ৯৮৩ নমুনা পরীক্ষায় ১৩০ জন পজিটিভ পাওয়া যায়। সংক্রমণ হার ছিল ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ। এদিকে, টানা চারদিন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুইশ’র ওপরে রয়েছে। এর মধ্যে, ২২ মার্চ চট্টগ্রামে সাড়ে তিন মাসে করোনাভাইরাসের সর্বোচ্চ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এদিন ১ হাজার ৯৪৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৭২ জনের শরীরে করোনা জীবাণুর উপস্থিতি পাওয়া যায়। সংক্রমণ হার ১৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ। সংখ্যা ও হার দু’ক্ষেত্রেই এ সময়ের মধ্যে এটা ছিল একদিনের সর্বোচ্চ। একই দিনে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৮ হাজার অতিক্রম করে।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, গতকাল সবচেয়ে বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে। এখানে ৯৬৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ৯ জনসহ ৫১ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৪৪৬টি নমুনা পরীক্ষা হলে গ্রামের ৩টিসহ ৪২টি নমুনায় ভাইরাসের উপস্থিতি মিলে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১শ’ জনের মধ্যে শহরের ১৮ জন ও গ্রামের ১৬ জনের নমুনায় জীবাণুর অস্তিত্ব ধরা পড়ে। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএলে ৬৪ জনের নমুনার মধ্যে ২৬ জনের নমুনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। এরা সবাই শহরের বাসিন্দা।
নগরীর বেসরকারি তিন ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ১৩৮ নমুনায় গ্রামের ৪টিসহ ৪৮টি এবং মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ২৩ নমুনায় গ্রামের ১টিসহ ৬টিতে ভাইরাস চিহ্নিত হয়।
এছাড়া, চট্টগ্রামের ১৩৮টি নমুনা এদিন কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় একটি ছাড়া বাকী সবগুলোরই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
তবে, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ও শেভরনে গতকাল কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট পর্যবেক্ষণে বিআইটিআইডি’তে ৫ দশমিক ২৯, চমেকে ৯ দশমিক ৪২, চবি’তে ৩৪, আরটিআরএলে ৪০ দশমিক ৬২ শতাংশ, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৩৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ, মা ও শিশু হাসপাতালে ২৬ দশমিক ০৯ এবং কক্সবাজার মেডিকেলে শূন্য দশমিক ৭২ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।