ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ঘোষিত তফসিলের কার্যক্রম আগামী তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। এর ফলে উপ-নির্বাচন আপাতত স্থগিত হয়ে গেল বলে জানিয়েছেন রিটকারীর পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার আহসান হাবীব ভূঁইয়া। বিচারপতি নাইমা হায়দারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এই আদেশ দেন।
একই সঙ্গে করপোরেশনে নতুন সংযুক্ত হওয়া এলাকাগুলোর ভোটার তালিকা প্রকাশ হওয়ার আগে নির্বাচনে ঘোষিত তফসিল কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছে আদালত। এই সময়ের মধ্যে রুলের জবাব দিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও স্থানীয় সরকার সচিবসহ বিবাদীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উপ-নির্বাচন স্থগিত চেয়ে করা এই রিটের ওপর শুনানি হয়েছে গতকাল মঙ্গলবার। আজ আরও শুনানি শেষে এই আদেশ দেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আহসান হাবীব ভূঁইয়া। আজ আদালত থেকে বের হয়ে এসব তথ্য জানান তিনি।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেসুর রহমান। তিনি জানান, তারা গতকালই রিট আবেদন করেছিলেন। শুনানি শেষে আদেশের জন্য আজ বুধবার দিন ধার্য করে আদালত। তিনি আরো জানান, একই আদালতে আরো একটি রিট আবেদন করা হয়েছিল। দুটি আবেদনেই নির্বাচনের জন্য ঘোষিত তফসিলের কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়। দুটি আবেদনের বিষয়েই আদেশের জন্য দিন ধার্য ছিল আজ বুধবার।
রিট আবেদনে বলা হয়, নির্বাচনী এলাকায় সংযুক্ত হওয়া তাদের এলাকায় এখনো নতুন ভোটার তলিকা (সিটি করপোরেশন) প্রকাশ হয়নি। তালিকাভুক্ত ভোটার না হলে কেউ প্রার্থী হতে পারবেন না। অর্থাৎ রিটকারী প্রার্থী হতে পারছেন না। তাছাড়া মনোনয়ন দাখিল করতে হলে ৩০০ ভোটারের স্বাক্ষরসহ তা জমা দিতে হবে। কিন্তু, রিটকারীর এলাকার ভোটাররা এখনো তালিকাভুক্তই হননি, যার ফলে তিনি স্বাক্ষর নিতে পারছেন না।
এ ছাড়া নতুন এলাকায় কাউন্সিলর নির্বাচন না হওয়ায় মেয়র পদই এখনো সৃষ্টি হয়নি আবেদনে বলা হয়। এসব বিষয়ের সুরাহা না হওয়ায় তফসিল বাতিল চাওয়া হয়েছে রিট আবেদনে। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ভোট হয়। আওয়ামী লীগের সমর্থনে ওই নির্বাচনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন সদ্য প্রয়াত আনিসুল হক। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতবছরের ৩০ নভেম্বর তার মৃত্যুতে স্থানীয় সরকার বিভাগ ১ ডিসেম্বর থেকে ওই পদটি শূন্য ঘোষণা করে।
এরপর গত ৯ জানুয়ারি ডিএনসিসির মেয়র পদে উপ-নির্বাচন, সম্প্রসারিত ১৮টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর ও ৬টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর এবং ডিএসসিসির (ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন) সম্প্রসারিত ১৮টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর ও ৬টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
তফসিল অনুযায়ী, এই নির্বাচনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র কেনা ও জমা দেওয়ার জন্য নির্ধারিত ছিল আগামীকাল ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। আবেদনকারী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাছাই ২১ ও ২২ জানুয়ারি, তা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৯ জানুয়ারি নির্ধারিত ছিল। নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী, প্রতীক বরাদ্দের আগে কোনো প্রচার চালানো যায় না। সে অনুযায়ী ৩০ জানুয়ারি থেকে প্রার্থীরা প্রচারণা শুরু করতে পারার কথা ছিল।
আজকের বাজার: সালি / ১৭ জানুয়ারি ২০১৮
