ঢাকা-নেপিদো ‘অ্যারেঞ্জমেন্ট’বাস্তবায়নে সাহায্য করবে জাতিসংঘ

মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে থেকে দেশটির সেনাবাহিনীর হত্যা ও নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরাতে ঢাকা-নাইপিদোর মধ্যে প্রত্যাবাসন চুক্তি সই হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ২৩ নভেম্বর দুপুরে মায়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মধ্যে এই সমঝোতাকে চুক্তি বলা হচ্ছে না, অ্যারেঞ্জমেন্ট বলা হচ্ছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানা গেছে।

দু’পক্ষই রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার (ইউএনরিচসিআর) সহায়তা নিতে সম্মত হয়েছে। দুই দেশের স্বাক্ষরিত এই দলিলে উল্লেখিত কিছু শর্ত হচ্ছে-

৯ই অক্টোবর ২০১৬ এবং ২৫শে আগস্ট ২০১৭ – এর পরে বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণকারী ‘বাস্তুচ্যুত রাখাইন রাজ্যের অধিবাসীদের’ ফেরত নিবে মায়ানমার। দলিল স্বাক্ষরের দুই মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে। সমঝোতা দলিল স্বাক্ষরের তিন সপ্তাহের মধ্যে দুই দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হবে এবং মাঠ পর্যায়ে প্রত্যাবাসনের শর্তাবলী চূড়ান্ত করা হবে।

দু’পক্ষই রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার (ইউএনরিচসিআর) সহায়তা নিতে সম্মত হয়েছে। বাংলাদেশ এখনই এই সংস্থাটির সহায়তা পাবে। মায়ানমার প্রয়োজন অনুযায়ী ইউএনরিচসিআরকে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় যুক্ত করবে।

প্রত্যাবাসনকারীদের নাগরিকত্ব পরিচয় যাচাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিশ্চিত করা হবে। প্রক্রিয়ায় জটিলতা দেখা দিলে বাংলাদেশ ও মায়ানমার আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করবে। ১৯৯২ পরবর্তী প্রত্যাবাসন চুক্তি এক্ষেত্রে যাচাই প্রক্রিয়ার আদর্শ হিসেবে ধরা হবে।
শুধুমাত্র স্বেচ্ছায় মায়ানমার ফিরতে আগ্রহী প্রত্যাবাসনকারীরা এই সমঝোতার আওতাধীন।

অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় জন্ম নেওয়া (রাখাইনে ধর্ষণের কারণে) শিশুদেরকে বাংলাদেশের আদালতের মাধ্যমে প্রত্যায়িত (সার্টিফাইড) করতে হবে।
প্রত্যাবাসনকারীদের প্রাথমিকভাবে সীমিত সময়ের জন্য অস্থায়ী আশ্রয়স্থলে রাখা হবে। নাগরিকত্বের প্রমাণ উপস্থাপন করার সাপেক্ষে সকল প্রত্যাবাসনকারীকে ফেরত নেবে মায়ানমার।

এর আগে ১৯৭৮ সালে দু’দেশ চুক্তি করেছিল। সেই চুক্তির অধীনে ২ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা ৬ মাসের মধ্যে ফেরত গিয়েছিল। পরে ১৯৯২ সালে দু’দেশের মধ্যে আরেকটি সমঝোতা হয়, যার অধীনে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ২ লাখ ৩৬ হাজার রোহিঙ্গা মায়ানমারে ফেরত যায়।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে ২৬ নভেম্বর ২০১৭