দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে বেসিক ব্যাংক চেয়ারম্যান

বেসিক ব্যাংক থেকে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ অনুসন্ধানে অবশেষে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার ০৪ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। দুদক পরিচালক জায়েদ হোসেন খান ও সৈয়দ ইকবাল হোসেনেরর নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি বিশেষ টিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান বাচ্চুর নেতৃত্বে পরিচালনা পরিষদের ১০ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়, সিজিএ কার্যালয় ও খোদ বেসিক ব্যাংকের নানা প্রতিবেদনে এ লুটপাটের সঙ্গে বাচ্চুসহ অনেকের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এমনকি বিভিন্ন সময়ে শুনানিতে এ বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে দুদককে। মূলত এরপরই দুদক থেকে বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ পরিচালনা পরিষদের সদস্যদের বিষয়ে এ জিজ্ঞাসাবাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

২০০৯ সালে বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে বাচ্চুকে নিয়োগ দেয় সরকার। ২০১২ সালে তার নিয়োগ নবায়নও হয়। কিন্তু ঋণ কেলেঙ্কারির অভিযোগের তীর তার দিকে উঠলে ২০১৪ সালে ব্যাংকটি থেকে চাপের মুখে বাচ্চু পদত্যাগ করেন।

বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারিতে ২০১৫ সালের ২১, ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর তিন দিনে টানা ৫৬টি মামলা করে দুদকের অনুসন্ধান দলের সদস্যরা। রাজধানীর মতিঝিল, পল্টন ও গুলশান থানায় এসব মামলায় মোট আসামি করা হয় ১৫৬ জনকে।

মামলায় ২ হাজার ৬৫ কোটি টাকা অনিয়মের মাধ্যমে ঋণ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্যে রাজধানীর গুলশান শাখার মাধ্যমে ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা, শান্তিনগর শাখা থেকে ৩৮৭ কোটি টাকা, প্রধান শাখা থেকে প্রায় ২৪৮ কোটি টাকা এবং দিলকুশা শাখা থেকে প্রায় ১৩০ কোটি টাকা বের করে নেওয়া হয়।

ভয়াবহ এ ঋণ জালিয়াতির মামলায় আসামিদের মধ্যে বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা রযেছেন ২৬ জন। বাকি ১৩০ জন আসামি ঋণ গ্রহীতা ৫৪ প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী ও সার্ভে প্রতিষ্ঠান। ব্যাংকার ও ঋণ গ্রহীতাদের অনেকেই একাধিক মামলায় আসামি হয়েছেন। এর মধ্যে ব্যাংকের প্রাক্তন এমডি কাজী ফখরুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে ৪৮টি মামলায়।

এ ছাড়া সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া ডিএমডি ফজলুস সোবহান ৪৭টি, কনক কুমার পুরকায়স্থ ২৩টি, মো. সেলিম ৮টি, বরখাস্ত হওয়া ডিএমডি এ মোনায়েম খানকে ৩৫টি মামলায় আসামি করা হয়।
তবে কোনো মামলায় ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চুকে আসামি করা হয়নি।

অাজকের বাজার: আরআর/ ০৪ ডিসেম্বর ২০১৭