দেখে নিন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নেওয়া ১১টি পদক্ষেপ

আজ সোমবার সারাদেশে শুরু হয়েছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। আর এই পরীক্ষা সুষ্ঠু, নকলমুক্ত ও ইতিবাচক পরিবেশে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে শিক্ষামন্ত্রণালয় ও সরকার সবধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। প্রশ্নফাঁস রোধে বাংলাদেশ ব্যাংক, পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীতে নিয়োজিত ২৮টি ইউনিট কাজ করছে। এছাড়াও প্রশ্নফাঁসের তথ্য দিতে জরুরি সেবার ‘৯৯৯’ নম্বরে কল করা যাবে।

এই নম্বরে কল করতে কোনো টাকা খরচ হবে না। মোবাইল ফোনে টাকা না থাকলেও দেশের যে কোন প্রান্ত থেকে কল করা যাবে। ল্যান্ডফোন থেকেও এই নম্বরে কল করা যাবে।

বিভিন্ন পরীক্ষায় ধারাবাহিকভাবে প্রশ্নফাঁস নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে শিক্ষামন্ত্রণালয় ও সরকারকে। তাই এবার উচ্চ মাধ্যমিকে (এইচএসসি) প্রশ্নফাঁস রোধে কঠোর অবস্থানে সরকার। প্রশ্নফাঁস রোধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নেওয়া ১১টি পদক্ষেপ। পদক্ষেগুলোর মধ্যে রয়েছে-

# প্রশ্নফাঁস এবং নকলে সহায়তার দায়ে চিহ্নিত শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হবে। এক্ষেত্রে সরকারি কলেজশিক্ষকদের বিরুদ্ধে মামলাসহ নেওয়া হবে বিভাগীয় প্রক্রিয়া (ডিপি)। আর বেসরকারি কলেজশিক্ষকের এমপিও বাতিলসহ চাকরিচ্যুত করা হবে। চাকরিচ্যুতির জন্য সংশ্লিষ্ট কলেজ-মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটিকে (জিবি) বলা হবে। তারা ব্যবস্থা না নিলে জিবি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠন করা হবে। এরপর সেই কমিটির মাধ্যমে চাকরিচ্যুতি নিশ্চিত করা হবে।

# ১৪৪ ধারার মধ্যে মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ। শিক্ষক তো নয়ই, কোনো কর্মকর্তাও ১৪৪ ধারার মধ্যে মোবাইল ফোন নিয়ে যেতে পারবেন না। কারও কাছে মোবাইল ফোন পাওয়া গেলে বেআইনি কর্মকাণ্ড ঘটানোর অপরাধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

# দুইয়ের অধিক সেট প্রশ্ন ছাপানো হয়েছে। প্রত্যেকটি সেটই পাঠানো হবে কেন্দ্রে। তবে কোন সেটে পরীক্ষা হবে তা পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে কেন্দ্রীয়ভাবে লটারির মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে। এরপর তা কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে জানিয়ে দেওয়া হবে।

# এখন থেকে প্রশ্নপত্র দুই প্যাকেটে যাবে। এর মধ্যে ভেতরের প্যাকেট থাকবে সিলগালা। বাইরের প্যাকেট থাকবে বিশেষ সিকিউরিটি কোডের টেপ লাগানো।

# এসএসসির মতো এইচএসসিতেও পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলকভাবে হলে প্রবেশ করতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে পরীক্ষার্থীকে আর কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হবে না।

# যদি বিশেষ কারণে কোনো পরীক্ষার্থীর কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেরি হয়, তবে রেজিস্টার খাতায় তার সব তথ্য সংগ্রহ করে তাকে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে। একাধিক দিন এমন হলে আর তাকে ঢুকতে দেয়া হবে না। এসব তথ্য কেন্দ্র থেকে সংশ্লিষ্ট বোর্ডে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

# ট্রেজারি থেকে বের করার পর কেন্দ্রে পৌঁছানো পর্যন্ত প্রশ্নপত্রের সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন।

# পরীক্ষা কেন্দ্রের দূরত্ব অনুযায়ী ট্রেজারি থেকে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হবে।

# পরীক্ষাকালীন বিকাশ, রকেটসহ মোবাইল ব্যাংকিং কঠোর নজরদারিতে থাকবে। সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিশেষ করে নিকটের থানায় অবহিত করতে হবে। নইলে সংশ্লিষ্ট এজেন্টের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা।

# ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও থাকবে নজরদারিতে।

# ট্রেজারি থেকে বের হওয়ার পর প্রশ্নফাঁসের প্রথম উদ্দেশ্য থাকে নকল। উপজেলা সদরের বাইরে বা প্রত্যন্ত অঞ্চলের উপজেলার কেন্দ্রগুলো এক্ষেত্রে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এ কারণে ওইসব কেন্দ্রও থাকবে বিশেষ নজরদারিতে।

আজকের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ১৩ লাখ ১১ হাজার ৪৫৭ জন শিক্ষার্থী। তত্ত্বীয় পরীক্ষা চলবে ১৩ মে পর্যন্ত। আর ১৪ থেকে ২৩ মে’র মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে ব্যবহারিক পরীক্ষা। সারাদেশের মোট আট হাজার ৯৪৩টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এবার দুই হাজার ৫৪১টি কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবে।

এস/