নিউক্যাসলের কাছে হেরে আরো পিছিয়ে গেল ইউনাইটেড, উল্ফসকে হারিয়ে শীর্ষস্থান মজবুত আর্সেনালের

নিউক্যাসলের কাছে ১-০ গোলে পরাজিত হয়ে প্রিমিয়ার লিগে আরো পিছিয়ে গেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। এ নিয়ে লিগে ১৪ ম্যাচে ষষ্ঠ পরাজয়ে টেবিলের সাত নম্বরে নেমে গেছে এরিক টেন হাগের দল ম্যান ইউ। দিনের আরেক ম্যাচে উল্ফসকে ২-১ গোলে পরাজিত করে আর্সেনাল তাদের শীর্ষস্থান আরো শক্তিশালী করেছে।
সেন্ট জেমস পার্কে স্বাগতিক নিউক্যাসলের হয়ে ৫৫ মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেছেন এ্যান্থনি গর্ডন। এই জয়ে টেবিলের পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে নিউক্যাসল। শীর্ষ চারের থেকে তারা এই মুহূর্তে দুই পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছে।
এদিকে এবারের মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে শীর্ষ নয় দলের বিপক্ষে এখনো জয় নিশ্চিত করতে পারেনি ইউনাইটেড। ইনজুরি ও নিষেধাজ্ঞার কারনে প্রথম পছন্দের ১১ জন খেলোয়াড়কে হারিয়েও এডি হাউয়ের দল আরো বড় ব্যবধানে জিততে পারতো। কাঁধের সমস্যার কারনে ৮৫ মিনিটে গোলরক্ষক নিক পোপ বদলী বেঞ্চে চলে গেলে নিউক্যাসল চাপে পড়ে যায়। কিয়েরান ট্রিপিয়ারের ফি-কিক বারে লেগে ফেরত আসে, আলেক্সান্ডার ইসাকের শটটি ডিফ্লেকটেড হয়ে অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। দ্বিতীয়ার্ধের ১০ মিনিটে শেষ পর্যন্ত গর্ডন ডেডলক ভাঙ্গেন।

এনিয়ে এক সপ্তাহের ব্যবধানে চেলসি, পিএসজি ও ইউনাইটেডের বিপক্ষে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় খর্বশক্তির নিউক্যাসল ৭ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে। ম্যাচ শেষে হাউ বলেছেন, ‘আজ আমি খেলোয়াড়দের পারফরমেন্সে দারুন খুশী। শীর্ষ তিন দলের বিপক্ষে আমরা যেভাবে কেলেছ তা সত্যিই অসাধারন। এর ফলে আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেকগুন বেড়েছে। অন্য খেলোয়াড়রা যখন দলে ফিরে আসবে তখন আমরা আরো ভাল করতে পারবো।’
এমিরেটস স্টেডিয়ামে শুরুটা ভাল হলেও শেষ পর্যন্ত কঠিন লড়াই করে জিততে হয়েছে আর্সেনালকে। ১৩ মিনিটে বুকায়ো সাকা ও মার্টিন ওডেগার্ডের গোলে গানার্সরা ২-০ গোলে এগিয়ে যায়। কিন্তু উল্ফস ফরোয়ার্ড মাথিয়াস কুনহা ৮৬ মিনিটে কোনাকুনি শটে বল জালে জড়ালে আর্সেনাল শিবিরে অস্বস্তি নেমে আসে। যদিও শেষ পর্যন্ত গত বছরের রানার্স-আপ আর্সেনালের ১৪ ম্যাচে ১০ম জয় তুলে নিতে আর কোন বাঁধা আসেনি। এই জয়ে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি থেকে চার পয়েন্ট এগিয়ে শীর্ষে থাকলো আর্সেনাল।

আর্সেনাল বস মিকেল আর্তেতা বলেছেন, ‘আমি শুধুমাত্র খেলোয়াড়দের প্রশংসা করতে পারি। তারা দুর্দান্ত খেলেছে। আমরা সত্যিকার অর্থেই ভাল একটি দলের বিপক্ষে খেলেছি। নিজেদের স্বাভাবিক খেলা খেলেই আমরা এগিয়ে গেছি। স্কোরলাইন আমাদের কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলেছিল। তিনবার আমাদের শট পোস্টে লেগেছে, এতে বলতেই হয় ভাগ্য আজ আমাদের সহায় ছিলনা। ম্যাচের শেষ দিকে একটি ভুলে আমাদের গোল হজম করতে হয়েছে। প্রিমিয়ার লিগে এই ধরনের ভুলে শাস্তি পেতেই হবে। সব মিলিয়ে আবারো বলছি যেভাবে আমরা খেলেছি তাতে আমি দারুন খুশী।

টেবিলের অন্যপ্রান্তে থাকা বার্নলি ৫-০ গোলে শেফিল্ড শিল্ডকে  উড়িয়ে দিয়ে ঘরের মাঠে মৌসুমের প্রথম জয় নিশ্চিত করেছে। ম্যাচ শুরুর মাত্র ১৫ সেকেন্ডের মধ্যে জে রড্রিগুয়েজ গোল করে স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন। এবারের মৌসুমে এটাই সবচেয়ে দ্রুততম সময়ের গোল। জ্যাকব ব্রুন ২৯ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করেন। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে ওলি ম্যাকবার্নি দ্বিতীয় হলুদ কার্ডের কারনে মাঠত্যাগে বাধ্য হলে ব্লেডদের কাজ আরো কঠিন হয়ে ওঠে। শেষ ১৭ মিনিটে স্কোরশিটে নাম লিখিয়েছেন জেকি আমদুনি, লুকা কোলেশো ও জশ ব্রাউনহিল। এবারের মৌসুমে তিন ম্যাচে পাঁচ কিংবা তার থেকে বেশী গোল হজম করলো পল হেকিংবটমের দল। এই জয়ে শেফিল্ডকে দুই পয়েন্টের ব্যবধানে তলানিতে পাঠিয়ে বার্নলি। মৌসুমের মাত্র দ্বিতীয় জয়ে বার্নলি এখন সেফটি জোন থেকে দুই পয়েন্ট দুরে রয়েছে। কোচ ভিনসেন্ট কোম্পানি বিসিসিকে বলেছেন, ‘এই জয়টা আমাদের দলের প্রাপ্য ছিল। এখনো পর্যন্ত লিগে আমার কঠিন সময় পার করছি।’

ব্রেন্টফোর্ডের কাছে ৩-১ গোলের পরাজয়ে ড্রপ জোনের ঠিক আগের স্থানে রয়েছে লুটন। বিসদের হয়ে গোলগুলো করেছেন নিল মপে, বেন মি ও শ্যানডন ব্যাপ্টিস্ট।
নটিংহ্যাম ফরেস্টের সাথে ১-০ গোলে জয়ী হয়ে ১০ পয়েন্টের শাস্তি পাওয়া এভারটন লিগে টিকে থাকার ক্ষীণ আশা ধরে রেখেছে। দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝিতে জয়সূচক গোলটি করেন ডুয়াইট ম্যাকনিল। এনিয়ে টানা তৃতীয় এ্যাওয়ে ম্যাচে জয় নিশ্চিত করলো এভারটন।
এভারটন বস সিন ডায়চে বলেছেন, ‘এটা এমন একটি বিষয়, আমাদের যেন নতুন করে সবকিছু শুরু করতে হচ্ছে। সঠিক পথে যাবার এবার একটি পদক্ষেপ। তবে এখনো অনেকটা পথ বাকি।’ (বাসস/এএফপি)