নির্বাচনের কারণে কক্সবাজারে পর্যটন ব্যবসায় মন্দা

ভরা মৌসুমেও আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসায় মন্দা অবস্থা বিরাজ করছে।

পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, নির্বাচনকে ঘিরে ডিসেম্বরে অন্যান্য বছর তারা যে ব্যবসা করতেন এ বছর পর্যটন খাতের ব্যবসায় স্থবিরতা নেমে এসেছে। নির্বাচন পরবর্তী অবস্থাও বলা যাচ্ছে না। তাদের মতে, নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হলেও অবাধ ও সুষ্ঠু না হলে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পারে। আর এ কারণে জানুয়ারি মাসেও কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসায় ধসের আশঙ্কা করছেন তারা

শীতকালীন অবকাশ, ইংরেজি বর্ষকে বিদায়-বরণসহ সরকারি বিভিন্ন ছুটি উপভোগ করতে কক্সবাজারে ছুটে আসেন পর্যটকরা । পুরো ডিসেম্বর জুড়ে কক্সবাজারের হোটেল, গেস্ট হাউজ এবং তারকা মানের আবাসিক হোটেল সমুহ আগাম ভাড়া হয়ে যেতো। বিশেষ করে ডিসেম্বরের মাসের শেষ ২০ দিনের জন্য কোনো হোটেলে কক্ষ খালি থাকতো না। পর্যটন মৌসুমের শুরুতেই অভাবনীয় ব্যবসার কারণে ব্যবসায়িদের মুখে ফুটে উঠতো হাসি । পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হতো নানা পদক্ষেপ। কিন্তু এবার ইংরেজি বর্ষ বিদায় তথা থার্টি ফার্ষ্ট নাইটের আগের দিন ৩০ ডিসেম্বর হচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। স্বাভাবিকভাবে নির্বাচনকে সামনে রেখে অনাকাঙ্খিত ঘটনা, হরতাল,ভাঙচুর, নানা নাশকতার ঘটনার শংকায় দেশের মানুষ ভ্রমণে আসবে না বা আসছেন না।

কক্সবাজার হোটেল মোটেল ওনার’স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ও তারকা হোটেল সীগাল এর ব্যবস্থাপক ইমরুল সিদ্দিকী রুমী বলেন, কাজের ভারে ঝিমিয়ে পড়া মানুষ একটু প্রশান্তির খোঁজে প্রতি বছর শীতের মৌসুমে ভীড় করে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে। কিন্তু এ বছর তা ব্যতিক্রম হবে। আগে ডিসেম্বর শেষের ১০ দিন হোটেলের বুকিং নভেম্বর মাসে হয়ে যেতো। কিন্তু এবছর ডিসেম্বর মাসেও আগাম বুকিং এর কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সহ-সভাপতি আলহাজ্ব শফিকুর রহমান জানান, কক্সবাজারের পর্যটন এলাকায় তিন শতাধিক আবাসিক হোটেল রয়েছে। এসব হোটেলে প্রতিবছর সংস্কার ও সাজানো হলেও এ বছরে তা তেমন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। কারণ, পর্যটন মৌসুমকে সামনে রেখে যে ব্যয় করা হবে তা উঠে আসার সম্ভাবনা নেই। এবার লাভের কথা দূরে থাক উল্টো ঘাটতির আশংকা রয়েছে।

ট্যুর ব্যবসায়ী রুহুল কাদের মোর্শেদ জানান, প্রতি বছর কক্সবাজারের পর্যটন স্পট সমুদ্র সৈকত, ইনানী, সেন্টমার্টিন, হিমছড়ি, সোনাদিয়া, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, ডুলহাজারা, বঙ্গবন্ধু সাফারি র্পাক, গুদুম গুহা, রামুর রামকোট, ১০০ ফুট বিশিষ্ট সিংহশয্যা বৌদ্ধমূর্তি ভ্রমণ করতে পর্যটকরা আগাম বুকিং দিয়ে রাখতো। এবার পর্যটক আগমনের তেমন কোনো আভাস পাওয়া যাচ্ছের না।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন জানান, কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প উন্নয়নে নানাভাবে কাজ করা হচ্ছে। পর্যটকদের নিরাপদ ও স্বাছন্দ্যে ভ্রমণের জন্য নেয়া হয়েছে সব প্রস্তুতি। সব পর্যটন স্পর্টে পর্যটক যাতায়াতে বিশেষ নজরদারি রয়েছে। এবার পর্যটক আসুক বা না আসুক তবে পর্যটকদের স্বাগত জানাতে জেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।

তিনি বলেন, এ জন্য জেলা প্রশাসনের আলাদা একটি পর্যটন সেল রয়েছে। যা একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পর্যটকদের সুবিধার্থে বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়মিত তত্ত্বাবধান করা হচ্ছে। তথ্য-ইউএনবি

আজকের বাজার/এমএইচ