নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে চায় বিএনপি: ফখরুল

ফাইল ছবি

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি ‘দৃঢ়ভাবে’ অংশগ্রহণ করতে চায় বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, রবিবার ঢাকায় সমাবেশ করে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও ডিসেম্বরের নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানানো হবে।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘নির্বাচনে অংশগ্রহণে আমাদের সব প্রস্তুতি রয়েছে। কিন্তু আমাদের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দরকার, যা এখন নেই। আমরা তাই নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি জানাচ্ছি। আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, কোনও রাজনৈতিক দলের অধীনে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।’

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, এই প্রথম বিএনপি জাতীয় নির্বাচন নিয়ে স্পষ্টভাবে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আশা করছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারও।

বার্তা সংস্থাটি জানায়, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে নির্বাচনকে ঘিরে প্রায়ই আন্দোলন ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ডিসেম্বরের নির্বাচনেও সহিংসতার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিএনপির নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা কারাগারে রয়েছেন।

এরআগে, ২০১৪ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি তুলে জাতীয় নির্বাচন বয়কট করেছিল বিএনপি। ২০০৯ সাল থেকেই ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ। এখনও তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নেয়নি।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ হাসিনা-খালেদা জিয়া বৈরী সম্পর্ক অনেকদিনের। ফেব্রুয়ারিতে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় খালেদা জিয়াকে। তার ছেলে তারেক রহমানকে দেওয়া হয় ১০ বছরের জেল। এছাড়া বিএনপির আরও বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা জেলে রয়েছেন।

এ প্রেক্ষিতে মির্জা ফখরুল রয়টার্সকে জানান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সঙ্গে আলোচনা করেই ঠিক করা হবে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে এবার কে লড়বেন।

এদিকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ভূয়সী প্রশংসা পেলেও তার বিরুদ্ধেই বাকস্বাধীনতা হরণের অভিযোগ উঠেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। গত মাসে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত স্কুলশিক্ষার্থীদের ওপর টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ব্যবহার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আন্দোলনের কারণে কয়েকজন শিক্ষার্থী ও বিশিষ্ট আলোকচিত্রী শহীদুল আলমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও সংস্থা আলোকচিত্রী শহীদুলের মুক্তির দাবি জানিয়েছে।

রয়টার্স আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শুরু হওয়া মাদকযুদ্ধে অনেক বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জুলাই থেকে শুরু হওয়া এই মাদক বিরোধী অভিযানে অন্তত ২০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। সম্প্রতি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে সাংবাদিকরা এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন ও সংশোধনের দাবি তুলেছেন। তাদের মতে এই আইনের কারণে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হবে।

তবে সরকারের দাবি, তারা ছাত্র আন্দোলনে মিশে যাওয়া বিএনপিকে লক্ষ্য করে অভিযান চালিয়েছে। তারা (বিএনপি) এই আন্দোলনকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে চাইছিলো। এছাড়া বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ অস্বীকার করেছে সরকার। বিএনপি নেতাদের মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে এমন অভিযোগও উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।