নীলফামারীতে এলাকাবাসীর সচেতনতায় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেলো সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেন

জেলার ডোমারে রেললাইনের ফিসপ্লেট ক্লিপ খুলে নেয়ার সময় সজাগ এলাকাবাসীর ধাওয়ায় পালিয়ে যায় দুস্কৃতিকারীরা। এসময় চিলাহাটি-খুলনাগামী সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে থামিয়ে বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করে এলাকাবাসী।
বুধবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে জেলার ডোমার উপজেলার বোড়াগাড়ি ইউনিয়নের বাগডোকরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর দেড় ঘন্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে ডোমার-চিলাহাটি রেলপথে।

এলাকাবাসী জানায়, বুধবার রাতে ওই এলাকায় রেললাইনের লোহালস্কর খোলার শব্দ হচ্ছিলো। স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তারা দলবদ্ধ হয়ে সেখানে এগিয়ে যান। এসময় ধাওয়া করলে একদল দুস্কৃতিকারী পালিয়ে যায়। পরে ওই এলাকার বিভিন্ন স্থানে রেললাইনের ফিসপ্লেট ক্লিপ খোলা অবস্থায় দেখতে পান।
ওই গ্রামের রাজেশ^র রায় (৩০) বলেন, ‘ঘটনার পর চিলাহাটি থেকে খুলনাগামী সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনটি আসছিল। এসময় ঘটনাস্থলে তিন থেকে চারশত লোকজন উপস্থিত ছিলেন। তারা সকলে বিভিন্নভাবে সংকেত দিলে ট্রেনটি থেমে যায়। এতে করে বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় ট্রেনটি’।

বোড়াগাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম রিমুন বলেন, এলাকাবাসীর ধাওয়া করলে দুস্কৃতিকারীরা পালিয়ে যায়। পরে তাদের ফেলে যাওয়া একটি বস্তায় ফিসপ্লেট ক্লিপ উদ্ধার হয়। অল্প সময় পর খুলনাগামী সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনটি চিলাহাটি থেকে ছেড়ে ওই পথে আসছিল। এলাকাবাসী বিভিন্ন সংকেত দিয়ে ট্রেনটিকে থামাতে সক্ষম হয়। এরপর রেলের লোকজন এসে লাইন মেরামত করলে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর খুলনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় ট্রেনটি’।

জোড়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাখাওয়াৎ হোসেন বাবু বলেন, ঘটনাটি আমার ইউনিয়নের সীমানায় ঘটেছে। আমি গিয়ে রেললাইনের বিভিন্নস্থানে ফিসপ্লেট ক্লিপ খোলা দেখতে পেয়েছি। এলাকাবাসীর সচেতনতায় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে ট্রেনটি’।
নীলফামারী স্টেশন মাস্টার ওবায়দুর রহমান রতন বলেন,‘লাইন মেরামতের পর প্রায় দেড় ঘণ্টা বিলম্বে ট্রেনটি সেখান থেকে ছেড়ে আসে। অপরদিকে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা বরেন্দ্র একপ্রেস টেনটিও দেড় ঘণ্টা আটকা পড়ে ডোমার রেল স্টেশনে।’

সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনের পরিচালক (গার্ড) মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘ট্রেনটি ওই এলাকায় আসলে স্থানীয়রা ট্রেনটি থামায়। তারা জানায়- রেললাইনের ফিসপ্লেট পিন খুলে রাখা আছে। যারা খুলেছে তারা পালিয়ে গেছে। রেলের কর্মীরা রেললাইন মেরামত কাজ করার পর আমরা ট্রেন চলানোর অনুমতি পাই। এ সময় ওই ট্রেনে দুই থেকে আড়াই শত যাত্রী ছিলেন’।

সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাকিউল আযম বলেন, রেললাইনের বিভিন্নস্থানে ক্লিপগুলো খুলেছে দুস্কৃতিকারীরা। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় একটি বস্তা থেকে ৩১ পিস ফিসপ্লেট ক্লিপ উদ্ধার করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় সৈয়দপুর জিআরপি থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করা হয়েছে।

ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল আলম বলেন, ঘটনার পর রাতেই আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছি। প্রাথমিকভাবে নাশকতা নয় বলে মনে হচ্ছে। কারণ তারা একটি বস্তায় ফিসপ্লেট পিন নিয়ে পালিয়েছে। আর একটি বস্তা এলাকাবাসী আটক করেছে। তারপরেও আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। (বাসস)