পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহারের আহ্বান কাদেরের

পরিবহন ধর্মঘটকে অযৌক্তিক আখ্যায়িত করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আদালতের রায়ের সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাই এ রায়ে জনগণ কেন ভোগান্তিতে পড়বে? কাজেই আপনাদের (আন্দোলনকারী) এ অযৌক্তিক ধর্মঘট জনস্বার্থে দ্রুত প্রত্যাহার করে নেওয়া উচিত।

মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে এ আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও ভাষা শহীদদের স্মরণে এর আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা ছাত্রলীগ।

হরতাল দাবি আদায়ের কার্যকর হাতিয়ার নয়

মানিকগঞ্জের আদালতে তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীর নিহত মামলায় একজন বাসচালকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের প্রতিবাদে বাস ধর্মঘট পালন করছিলেন কয়েকটি অঞ্চলের শ্রমিকরা। সরকারি পর্যায়ে বৈঠকের পর সেই ধর্মঘট প্রত্যাহার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল সোমবার। ওই বৈঠকের সময় আসে ট্রাকচালকের মৃত্যুদণ্ডের খবর। ফলে নতুন করে পরিবহন ধর্মঘট ডাকেন শ্রমিকরা। সাভারের একটি সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নারী নিহত হওয়ার মামলায় সোমবার ঢাকার জজ আদালত মীর হোসেন নামের একজন চালকের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন।

রাস্তায় চলাচলের সময় মোবাইল ফোনে কথা বলার সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাস্তায় চলাচল করার সময়ও মধুর আলাপে ব্যস্ত থাকে। এর মধ্যে অনেকই গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়। একটা পরিবার ধ্বংস হয় এতে চালক বেপরোয়া, পথচারীও যদি বেপরোয়া হয় তাহলে এ দেশে দুর্ঘটনা কে রোধ করবে? তাই সবাইকে সতর্কভাবে চলাচল করতে হবে।

বাংলাদেশে হরতাল দিয়ে গণতান্ত্রিক দাবি আদায় করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘আজকে ঢাকা শহরে হরতালের যে দৃশ্য দেখা গেছে তাতে কোথাও হরতাল ছিল না। তাহলে এটা কি হরতাল ছিল না ভয়তাল? আর সেটা ভয়তাল হলেও তো কেউ ভয় পায়নি। বাংলাদেশে হরতাল এখন গণতান্ত্রিক দাবি আদায়ের কার্যকর হাতিয়ার নয়।’

ছাত্রলীগ নেতাদের গডফাদার সুলভ আচরণ বন্ধ করতে হবে

ছাত্রলীগ নেতাদের দলের যে কোন নেতার পাহারাদার না হওযার পরামর্শ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজনীতিতে গডফাদারের উত্থান যেমন ভয়ঙ্কর তেমনি পরিণতিও অস্বাভাবিক। আমাদের পার্টিতে গডফাদার চাই না। যোগ্যতা সম্পন্ন নেতা চাই। কেউ গডফাদারের ভাবমূর্তি তৈরি করবেন না। তাহলে ভাবও থাকবে না মূর্তিও থাকবে না। ছাত্রলীগ নেতাদের গডফাদারসুলভ আচরণ পরিহার করতে হবে। কেউ গডফাদার সুলভ আচরণ করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দলের নেতাদের খুশি করার জন্য পিছু পিছু ভির জমানো পরিত্যাগ করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘নেতাদের খুশি করার প্রবণতা দূর করতে হবে। নেতাদের পাহারাদার হয়ে পিছুপিছু ছোটার প্রয়োজন নাই।’

সংগঠনের সভাপতি বায়েজিদ আহমেদের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক মিরাজ হোসেন, উপ-প্রচার সম্পাদক মামুনুর রশীদ শুভ্র, সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ প্রমুখ।

সুত্র: দ্য রিপোর্ট