পারমাণবিক কর্মকাণ্ড শুরুর ঘোষণা দিচ্ছে ইরান

জাতিসংঘের কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে ইরান জানাতে যাচ্ছে যে, তারা আবার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের ক্ষমতা বাড়াতে যাচ্ছে।

দেশটি বলছে, তারা ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লুরাইড তৈরির ক্ষমতা বাড়াবে, যেটি আসলে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার একটি অন্যতম প্রধান উপাদান।

ইরানের সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা, আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেছেন, ২০১৫ সালের ইরান পারমাণবিক চুক্তি ব্যর্থ হলে তিনি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

গত মাসে ওই চুক্তিটি থেকে বেরিয়ে আসার ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ইউরোপীয় দেশগুলো ওই চুক্তিটি বহাল রাখবে কিনা, তা এখনো পরিষ্কার নয়।

কি ঘটছে মঙ্গলবার?

ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থা একটি চিঠি দিতে যাচ্ছে জাতিসংঘের পারমাণবিক সংস্থা, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সিকে, যেখানে তারা এই ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লুরাইড তৈরির সিদ্ধান্তের কথা জানাবে।

”ইউএফ৬ (ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লুরাইড) তৈরি করার সামর্থ্য বৃদ্ধি করার ঘোষণা দিতে যাচ্ছে ইরান, যা মঙ্গলবার থেকে শুরু হবে.” জানিয়েছেন ইরানের পারমাণবিক এজেন্সির মুখপাত্র বেহরোজ কামালভান্দি।

”আমাদের নেতা (আয়াতুল্লাহ খামেনি) নির্দেশ দিয়েছেন যেন আমরা এই সামর্থ্য বৃদ্ধির প্রক্রিয়াটি দ্রুত শুরু করি, যাতে দরকার হলে পারমাণবিক কার্যক্রম দ্রুত করা যায়।” বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলছেন।

বিবিসির কূটনৈতিক সংবাদদাতা জোনাথন মার্কাস বলেছেন, এর মাধ্যমে ইরান একটি পরিষ্কার বার্তা দিতে যাচ্ছে যে, পারমাণবিক চুক্তি ব্যর্থ হলে ইরান শুধুমাত্র দাঁড়িয়ে দেখবে না, বরং তাদের হাতে বিকল্প কিছু রয়েছে।

এই ঘোষণা এমন সময় এলো, যখন প্রধান ইউরোপীয় দেশগুলো ওই চুক্তিটি বহাল রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ভয়ে বড় আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলো এর মধ্যেই ইরান থেকে নিজেদের সরিয়ে নিচ্ছে।

ইরানের এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে উত্তেজনা আরো বাড়াবে আর অনেক দেশকে ঐ চুক্তিটি বহাল রাখতে তাগিদ জোগাবে।

ইরানের অবস্থা আসলে কেমন?

পারমাণবিক চুক্তিতে বহাল থাকতে বেশ কয়েকটি শর্ত জুড়ে দিয়েছেন আয়াতুল্লাহ খামেনি। যার মধ্যে রয়েছে ইরানের তেল বিক্রি অব্যাহত থাকতে হবে আর ইরানের বাণিজ্যের নিশ্চয়তা দেশে ইউরোপীয় ব্যাংকগুলো। পাশাপাশি ইরানের ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচী আর আঞ্চলিক কর্মকাণ্ড নিয়ে কোন আলোচনা করতে চাইবে না যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স আর জার্মানি।

ইরানের কর্তৃপক্ষ বলেছে, ইউরোপীয় দেশগুলো যদি চুক্তিটি বহাল রাখতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তেহরানের হাতে বেশ কিছু বিকল্প রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ইউরেনিয়াম অন্তত কুড়ি শতাংশ সমৃদ্ধ করা।

২০১৫ সালের ওই চুক্তি অনুযায়ী ইরান মাত্র ৩.৬৭ শতাংশ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারে।

ইরানের সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা, আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেছেন, যদি যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স আর জার্মানি এসব শর্ত রক্ষা করতে না পারে, তাহলে ইরান আবার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার কর্মসূচী শুরু করবে।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আর কোন আলোচনা হবে না বলেও তিনি জানিয়ে দিয়েছেন। সূত্র: বিবিসি বাংলা।

আজকের বাজার/ এমএইচ