পোশাক শ্রমিকদের মজুরি ১৬ হাজারের দাবি আইবিসি’র

অবিলম্বে পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১৬ হাজার টাকা ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছে ইন্ডাস্ট্রিঅল-বাংলাদেশ কাউন্সিল (আইবিসি)। এত বছরে ১০ শতাংশ হারে মজুরি বৃদ্ধিসহ ৫টি প্রেড নির্ধারণপূর্বক তাদের বেতন এই হারে নির্ধারণ করতে বলা হয়।

বুধবার (১৬ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন এ দাবি জানান সংগঠনটির মহাসচিব মো. তৌহিদুর রহমান।

সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ইন্ডাস্ট্রিঅল-বাংলাদেশ কাউন্সিল (আইবিসি), বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদ, গার্মেন্টস শ্রমিক ও শিল্পরক্ষা জাতীয় মঞ্চ, গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলন, গার্মেন্টস শ্রমিক মজুরি আন্দোলন, গার্মেন্টস শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ।

লিখিত বক্তব্যে তৌহিদুর রহমান বলেন, পোশাক শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি নির্ধারণে সরকার গত জানুয়ারি ২০১৮ গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠন করেছে। জুন মাসের মধ্যে মজুরি বোর্ডের মজুরি রোয়েদাদ চূড়ান্ত করার কথা। কিন্তু কার্যক্রম ধীর গতিতে চলছে। এতে করে শ্রমিকদের মধ্যে আশঙ্কা বিরাজ করছে, মজুরি বোর্ড আগামী জুন মাসের মধ্যে মজুরি রোয়েদাদ চূড়ান্ত করতে পারবে না। আমরা জানতে পেরেছি, মালিক পক্ষের আন্তরিকতার অভাবে মজুরি বোর্ড তার কার্যক্রমে গতি সঞ্চার করতে পারছে না।

তিনি বলেন, মজুরি বোর্ডকে জুন মাসের মধ্যেই মজুরি রোয়েদাদ চূড়ান্ত করতে হবে। কারণ খসড়া রোয়েদাদ ঘোষণায় সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মতামত সময় দিতে হবে। আর সবার মতামতের ভিত্তিতে মজুরি বোর্ড তার খসড়া রোয়েদাদ চূড়ান্ত করে গেজেট প্রকাশ করে বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। এটাই আইনি বিধান।

তিনি আরো বলেন, আশঙ্কা হচ্ছে মালিকপক্ষ কালক্ষেপণের মাধ্যমে মজুরি রোয়েদাদ ঘোষণার সময় বিলম্ব করার পায়তারা করছে। যদি আমাদের আশঙ্কা সত্যি হয় তাহলে তৈরি পোশাক শিল্পে নৈরাজ্য সৃষ্টি হতে পারে। যা কারোই কাম্য নয়। আমরা এ ব্যাপারে সরকার ও মালিকপক্ষকে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। মজুরি বোর্ডের কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন অবিলম্বে গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি রোয়েদাদ ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি।

এ বছর গার্মেন্টস শ্রমিকেরা তাদের ন্যূনতম মজুরি ১৬ হাজার টাকা এবং বর্তমান ৭টি গ্রেডের পরিবর্তে ৫টি গ্রেড এবং বছরে ১০ শতাংশ হারে মজুরি যথা-খাদ্য, বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা খাতে খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। নির্দিষ্ট ও যৌক্তিক সময়ে ব্যবধানের পর সব গ্রেডের শ্রমিকদের পদোন্নতি করতে হবে। এ দাবি কেবল যৌক্তিকই নয়, ন্যায্যও বটে। একজন শ্রমিকের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য ৩ হাজার ক্যালরি প্রয়োজন। যার বাজার মূল্য ১০০ টাকা। বর্তমান বাজারে শ্রমিকের জীবনধারণ ব্যয় বৃদ্ধি, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, সরকারি কর্মচারীদের ন্যূনতম বেতন ১৭ হাজার ৫০০ টাকা। এরপরও কথা থেকে যায়, শ্রমিকের ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য সঞ্চয় এবং প্রতিযোগী দেশগুলো যথা-ভারত ১৬৮ ডলার, ভিয়েতনাম ১৫৪ ডলার, কম্বোডিয়া ১৭০ ডলার, পাকিস্তান ১২৪ ডলার। এ বিবেচনায় আমরা ২০০ ডলার সমমূল্যে ১৬ হাজার টাকা দাবি করেছি যা খুবই যৌক্তিক।

তিনি আরো বলেন, আমরা আশা করি, মালিক পক্ষ এ দাবি মেনে নিয়ে শিল্পে উৎপাদন ও উন্নয়নের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতকরণে গার্মেন্টস শ্রমিকদের ৫ম গ্রেডের সহকারি অপারেটর শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি ১৬ হাজার টাকা ঘোষণা করবেন।

এ দাবি ঈদের আগে বাস্তবায়ন না হলে, ঈদের পরে বৃহত্তর আন্দোলন-কর্মসূচি পালনেরও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় সংগঠনটির পক্ষ থেকে।

আজকের বাজার/ এমএইচ