পৌর নির্বাচনকে ঘিরে সরগরম মোংলা শহর

প্রচার-প্রচারণায় জমে উঠেছে বাগেরহাটের মোংলা পোর্ট পৌরসভার নির্বাচন। আগামী ১৬ জানুয়ারির নির্বাচনকে ঘিরে প্রার্থীরা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। ভোটারদের মন জয় করতে দিচ্ছেন নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিও। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আ: রহমান ও বর্তমান মেয়র ও বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আলহাজ্ব মো: জুলফিকার আলী প্রচারণা চালাচ্ছেন পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায়। এছাড়া কাউন্সিলর প্রার্থীরাও নিজ নিজ এলাকায় প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে পৌর শহর জুড়ে শোভা পাচ্ছে প্রার্থীদের পোস্টার। পোস্টারে ছেয়ে গেছে পৌর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ছাড়াও সকল অলিগলি।
প্রচারণাকালেনৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী শেখ আ. রহমান বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর পর মোংলা পোর্ট পৌরসভার নির্বাচন হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌকা প্রতীক দিয়ে আমাকে পৌরবাসীর কাছে পাঠিয়েছেন। মোংলার যত উন্নয়ন তা জননেত্রী শেখ হাসিনা, খুলনা সিটি মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক ও স্থানীয় সাংসদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহারের মাধ্যমেই হয়েছে। সেই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে মোংলাবাসীর কাছে যাচ্ছি, তাদের কাছে ভোটের আহবাণ জানাচ্ছি। ব্যাপক সাড়াও পাচ্ছি, নৌকায় ভোট দিবে বলে তাদের কাছ থেকে সেই প্রতিশ্রুতিও পাচ্ছি। আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। আমি নির্বাচিত হলে জনগণ যে দুর্দশায় আছে তা ঘোচাতে চেষ্টা করবো। যেহেতু আমার সরকার ক্ষমতায় আছে, তাই আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে এবং এ এলাকার অভিভাবক তালুকদার আব্দুল খালেক তার মাধ্যমে এ পৌরবাসীর প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবো।
ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র আলহাজ্ব মো. জুলফিকার আলী বলেন, আমি দীর্ঘ ১০ বছর মেয়রের দায়িত্ব পালনকালে পৌরবাসীকে সেবা করে আসছি। ১৬ জানুয়ারির নির্বাচনকে ঘিরে প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যদিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রথম দিকে একটু সমস্যা থাকলেও বর্তমানে সুষ্ঠুভাবে প্রচার-প্রচারণা করছি। তবে দল মত নির্বিশেষে সাধারণ জনগণ যাতে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে এ ব্যাপারে নিরাপত্তাসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকবে বলে প্রত্যাশা করছি। যেহেতু আমি ১০ বছর সেবা দিয়েছে, শহরের উন্নয়ন করেছি, অন্ধকার থেকে আলোকিত করেছি এ পৌর শহরকে। যার ফলশ্রুতিতে ১৬ জানুয়ারি আমি জনগণের রায় পাবো ইনশাল্লাহ।
মোংলা পোর্ট পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে তিনজন, ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৩৫ জন ও সংরক্ষিত তিনটি মহিলা ওয়ার্ডে ১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। ৯টি ওয়ার্ডের ১২টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে ভোট গ্রহণ।
এবারই প্রথম ইভিএম পদ্ধতি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মোংলা পোর্ট পৌরসভার নির্বাচন। এবারের নির্বাচনে পৌরসভার সাধারণ ভোটারের সংখ্যা ৩১ হাজার ৫২৮জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১৬ হাজার ৬৮১ আর নারী ভোটার ১৪ হাজার ৮৪০ জন। এর আগে ২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে এ পৌরসভায় ভোটারের সংখ্যা ছিল ২৫ হাজার ৯৫১জন।
এর আগে ২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় পৌর নির্বাচন। এরপর সীমানা জটিলতার মামলার কারণে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন না হওয়ায় দীর্ঘ ১০ বছর পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
নির্বাচনকে ঘিরে ইতিমধ্যে তিনজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া নির্বাচনের দিন দেয়া হবে আরো নয় জন ম্যাজিস্ট্রেট। নির্বাচনকে ঘিরে সকল প্রার্থীকে বিধি নিষেধ মেনে প্রচার-প্রচারণা চালানোর নিদের্শনা দিয়েছে উপজেলা নির্বাচন অফিসার।
উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সকল প্রার্থীকে নির্বাচনী আচরণ বিধি মেনে প্রচার-প্রচারণা চালানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্বাচনী আচরণ বিধি লংঘন করলে কাউকেই কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবেনা। তিনি আরো বলেন, আচরণ বিধি লংঘনের দায়ে ইতিমধ্যে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর কর্মীদেরকে নগদ জরিমানা করা হয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ করার লক্ষ্যে সকল ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।