বন্যায় তিন দেশে ৫০০ মানুষের মৃত্যু

দক্ষিণ এশিয়ার তিন দেশের মানুষ বন্যায় জর্জরিত। গত কয়েক দিনে বাংলাদেশ, নেপাল ও ভারতে বন্যায় মারা গেছে ৫০০ জনের বেশি মানুষ। এছাড়া মৌসুমি এই বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তিন দেশের প্রায় এক কোটি ৬০ লাখ মানুষ। খবর: বিবিসি।

আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা রেড ক্রিসেন্টের বরাত দিয়ে বিবিসি বলছে, বন্যায় এখনও ৫০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়বে।

আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট ফেডারেশন (আইসিআরসি) বলছে, বন্যা কবলিত এলাকায় খাদ্য সংকট ও রোগ মারাত্মক আকারে ছড়িয়ে পাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

আইসিআরসি এই বন্যাকে চলতি বছরের দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় মানবিক বিপর্যয় হিসেবে উল্লেখ করেছে।

আইসিআরসি’র আঞ্চলিক উপ পরিচালক মার্টিন ফলার বলেছেন, বাংলাদেশ ও নেপালের এক তৃতীয়াংশের বেশি এখন প্লাবিত। এছাড়া ভারতের উত্তর-পূর্ব এলাকার চারটি রাজ্যের প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ মানুষ এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের লাখো মানুষ তীব্র খাদ্য সংকটের মুখে পড়েছে। বন্যার দূষিত পানির কারণে রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তারা।

এদিকে সেভ দ্যা চিলড্রেনের পরিচালক মার্ক প্রাইস বলেছেন, কোনো কোনো এলাকায় বন্যার তীব্রতা এতোটাই ভয়াবহ যে, যথা সময়ে সেইসব এলকায় ত্রাণও পৌছানো সম্ভব হচ্ছে না।

এদিকে আজ শুক্রবার বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, দেশের দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চলের মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মুঞ্জিগঞ্জ ও শরীয়তপরের নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হতে। তবে উত্তরাঞ্চলসহ সারা দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।

আজ শুক্রবার পাউবো’র এক বিশেষ বুলেটিনে জানানো হয়েছে, গঙ্গা অববাহিকার পানি বৃদ্ধি পেলেও তা বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মধ্যাঞ্চলের ঢাকার চতুর্দিকের ৫টি নদীর পানি বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার হতে ১২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বাংলাদেশ সরকারের হিসাব মতে, গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্যায় সারা দেশের ২১ জেলার ৩২ লাখ ৮৭ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ফসলি জমির ক্ষতি হয়েছে ১ লাখ ৭২ হাজার ২১৭ হেক্টর। এছাড়া প্রায় ৭ লাখ ৫২ হাজার পরিবার আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে ১ হাজার ৫৯৯টি। এসব কেন্দ্রে ৪ লাখ ১১ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।

আজকের বাজার: আরআর/ ১৯ আগস্ট ২০১৭