বাখমুতে সর্বশেষ রুশ হামলার জবাব দিয়েছে ইউক্রেন

ইউক্রেন বিরোধপূর্ণ পূর্বাঞ্চলীয় শহর বাখমুতে একটি নতুন রুশ আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। দেশটির নেতারা শনিবার বলেছেন, বিতর্কিত দোনেৎস্ক অঞ্চলে গোলাবর্ষণের একটি নতুন জোরালো হামলা মোকাবেলা করেছে তারা।
কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে দুই ব্রিটিশ স্বেচ্ছাসেবকের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে, যারা পূর্ব যুদ্ধ অঞ্চল থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিতে সাহায্য করার চেষ্টাকালে নিহত হয়েছিল।
দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ওডেসায় একটি যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনে দুর্ঘটনার পরে অর্ধ মিলিয়ন পরিবার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
ইউক্রেনের উপ-প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হান্না মালিয়ার বলেছেন, ‘এই সপ্তাহে, রাশিয়ান দখলদার বাহিনী আমাদের প্রতিরক্ষা ভেঙ্গে বাখমুতকে ঘিরে ফেলার জন্য তাদের সমস্ত প্রচেষ্টা চালাচ্ছে এবং লাইমান সেক্টরে একটি শক্তিশালী আক্রমণ শুরু করেছে।’
‘কিন্তু আমাদের সৈন্যদের সমন্বিত প্রতিরোধের জন্য ধন্যবাদ, রুশ সেনারা সফল হয়নি।’
ইউক্রেনের বর্ডার গার্ড সার্ভিস জানিয়েছে, তাদের সৈন্যরা সর্বশেষ হামলা প্রতিরোধ করেছে। এই হামলায় চারজন নিহত এবং প্রতিপক্ষের সাতজন আহত হয়েছে।
রাশিয়া শনিবার সকালে পূর্ব ফ্রন্ট লাইন জুড়ে নতুন করে ব্যাপক বোমা হামলা শুরু করেছে। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা চেরনিগিভ, জাপোরিঝিয়া, ডিনিপ্রোপেট্রোভস্ক, খারকিভ লুগানস্ক, দোনেৎস্ক এবং মাইকোলাইভ অঞ্চলে গোলাবর্ষণের কথা জানিয়েছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার সন্ধ্যার ভাষণে স্বীকার করেছেন, পরিস্থিতি আরও কঠিন হচ্ছে।
তিনি বলেছিলেন, রাশিয়া আমাদের প্রতিরক্ষা ভেঙে দেওয়ার জন্য আরও বেশি শক্তি নিয়োগ করছে।

তিনি দেশের পূর্বের প্রথম সারির শহরগুলির উল্লেখ করে বলেন, ‘এখন বাখমুত, ভুগলেদার, লাইমান এবং অন্যান্য অঞ্চলে এটি খুব কঠিন।
ফ্রান্স, ইতালি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শুক্রবার ইউক্রেনে নতুন অস্ত্র সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
জার্মানির নেতা রবিবার একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, পশ্চিমাদের সরবরাহ করা অস্ত্র রাশিয়ান ভূখন্ডে আক্রমণ করার জন্য ব্যবহার করা হবে না বলে চুক্তি হয়েছে।
চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ সাপ্তাহিক বিল্ড অ্যাম সোনট্যাগের সাথে একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, এই বিষয়ে একটি ঐকমত্য রয়েছে।
ইতিমধ্যে প্রতিশ্রুত অস্ত্রের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার সময় কিয়েভ যুদ্ধবিমানসহ আরও কিছু অস্ত্রের জন্য চাপ দিচ্ছে।
কিয়েভের কর্মকর্তারা শনিবার বলেছেন, পূর্ব যুদ্ধ অঞ্চল থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিতে সাহায্য করার চেষ্টা করার সময় নিহত দুই ব্রিটিশ নাগরিকের মৃতদেহ বন্দী বিনিময়ের মাধ্যমে উদ্ধার করা হয়েছে।
ক্রিস প্যারি (২৮) এবং অ্যান্ড্রু বাগশ (৪৭) ইউক্রেনের দোনেৎস্ক অঞ্চলের সোলেদারে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করছিলেন, তাদের গাড়িতে একটি শেলের আঘাতে তারা নিহত হন বলে জানা গেছে।
বিস্তৃত বিনিময়ের অংশ হিসাবে তাদের মৃতদেহ ইউক্রেন কর্তৃপক্ষের কাছে ফেরত দেওয়া হয়েছে, বন্দী বিনিময়ে কিয়েভ ১১৬ এবং রাশিয়া ৬৩ জন বন্দী ফেরত পেয়েছে।
জেলেনস্কির চিফ অফ স্টাফ অ্যান্ড্রি ইয়ারমাক দুই বৃটিশ নাগরিকের নাম উল্লেখ করে বলেছেন, ‘আমরা মৃত বিদেশী দুই স্বেচ্ছাসেবকের মৃতদেহ ফিরিয়ে দিতে পেরেছি।’
ওডেসা আঞ্চলিক প্রশাসনের ম্যাকসিম মার্চেনকো বলেছেন, ‘আজ পর্যন্ত প্রায় ৫০০,০০০ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।’ জ্বালানি মন্ত্রী হারমান গালুশচেঙ্কো বলেছেন, সেখানে ‘ভোক্তাদের প্রায় এক তৃতীয়াংশ’ বিদ্যুৎবিহীন রয়েছেন।
ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্যামিগাল মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে বলেছেন, পরিস্থিতি জটিল, ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা ব্যাপক।