বাড্ডায় ৬৫টি হাতবোমা উদ্ধার, আটক ৩

রাজধানীর পূর্ব-বাড্ডার টেকপাড়া এলাকার একটি বাড়ি থেকে ৬৫টি শক্তিশালী হাতবোমা উদ্ধার করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।
এ ঘটনায় জড়িত ৩  জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা  হলো- মো. ফাহিম রহমান আব্দুল্লাহ (২২),  মো. লিমন (২০) ও মো. আকুল মিয়া (২১)।
রাজধানী  ঢাকার নিমতলী, বরিশালের কাজীরহাট ও রংপুরের পীরগঞ্জ এলাকায় তাদের বাড়ি বলে জানা গেছে।
তাদের কাছ থেকে হাতবোমা তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামাদিও জব্দ করা হয়েছে।
র‌্যাব বলছে, আটক তিন জনই বোমা তৈরির কারিগর। বিপজ্জনক বোমাগুলো শূন্যে বিস্ফোরণ ঘটানো সম্ভব।
বুধবার  রাতে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৩ এর কমান্ডিং অফিসার (অধিনায়ক) লে. কর্নেল মো. ফিরোজ কবীর।
এরআগে বুধবার রাত ৯টার দিকে  বাড্ডা থানার পূর্ব-বাড্ডার হাজী বাড়ি এলাকায়  বোমা তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়ে বাড়িটি ঘিরে রাখে এলিট ফোর্স র‌্যাব।
লে. কর্নেল মো. ফিরোজ কবীর জানান, আটকরা সবাই জুতার কারখানায় কাজ করেন। বোমা তৈরির জন্য সজীব নামে একজনের মাধ্যমে ২৬ হাজার টাকার বিনিময়ে তাদের চুক্তি হয়। অনাবিল বাসে করে বুধবার রাতেই বোমাগুলো গাজীপুর পাঠানোর কথা ছিল। তাদের কাছে শুধু তথ্য ছিল যে, এ বোমাগুলো মাছুম নামে একজন সংগ্রহ করবে। মাছুমই ক্রেতা ঠিক করে দেয়। এর আগেও ডেমরা, সাভার ও বাড্ডায় বোমা তৈরির চেষ্টা করেছিলেন সজীব। এসব বোমা তারা সারাদেশে সরবরাহ করে।
তিনি জানান, বোমার গঠন, আকার ও ওজন বিবেচনা করে বোম্ব ডিস্পোজাল ইউনিট বুঝতে পেরেছে যে, এগুলো ককটেলের মতো নয়। এসব বোমা অনেক শক্তিশালী। এগুলো ট্রিগার মেকানিজমের বোমা । হাওয়াতেই ব্লাস্ট করা সম্ভব ও অত্যন্ত বিপজ্জনক।
লে. কর্নেল মো. ফিরোজ কবীর বলেন, ধারণা করা হচ্ছে উপজেলা নির্বাচন ও ঈদকে ঘিরে নাশকতার পরিকল্পনা ছিল। সজীবকে খুঁজে বের করা হবে। এছাড়া বাড়ির মালিককে খোঁজা হচ্ছে।
এদিকে, র‌্যাব-৩ এর সহকারী পুলিশ সুপার স্টাফ অফিসার (মিডিয়া) মো. শামীম হোসেন বাসসকে জানান, আটক তিনজনের মধ্যে একজন এর আগেও বোমা তৈরির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলো।
এই বোমাগুলোর সঙ্গে জঙ্গিদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জঙ্গিরা মূলত ‘কাট আউট’ পদ্ধতিতে কাজ করে। মূলত আজ যারা আটক হয়েছে, তারা টাকার বিনিময়ে কাজটি করে আসছিল। কোথায় এগুলোর ব্যবহার হবে- তা তারা আমাদের জানাতে পারেনি। আমরা ধারণা করছি, আজই বোমাগুলো পাঠানোর কথা ছিল।’
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও  তথ্যঅনুসন্ধানে জানা যায়, এ চক্রটির  অন্যতম হোতা মাসুম ও সজিব বোমা বানানোর প্রয়োজনীয় জর্দার কৌটায় কাচের গুড়া, স্পিন্টার, সাইকেলের বল, বারুদ, গানপাউডার, তারকাটা ও  অন্যান্য কেমিক্যাল ও সরঞ্জামাদি জোগাড় করে গ্রেফতারকৃত ফাহিম, লিমন, ও আকুল মিয়াকে টাকার বিনিময়ে হাতবোমা তৈরীর জন্য ভাড়া করে। তারা বোমা তৈরীর জন্য বাড্ডা এলাকার একটি মেস বাড়ির কর্ণারের একটি রুম ভাড়া করে।
উদ্ধারকৃত বোমা ও বোমা তৈরির সরঞ্জামাদি ধ্বংস করা হয়।
তাদের বিরুদ্ধে বাড্ডা থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। (বাসস)