ফেসবুকে মহানবীকে (সা.) নিয়ে ‘অবমাননাকর স্ট্যাটাস’

বোরহানউদ্দিনে বিজিবি মোতায়েন, ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

ফেসবুক পোস্ট নিয়ে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে ৪ জন নিহত হওয়ার পর ভোলার বোরহানউদ্দিনে বিজিবি ও কোস্টগার্ড মোতায়েন করা হয়েছে।

বোরহানউদ্দিন থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা এসআই জাফর ইকবাল জানান, একজন মেজরসহ ৪০ সদস্যের একটি বিজিবি’র দল এরইমধ্যে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছেছে। এছাড়া রাস্তায় রয়েছে আরও ৬০ জনের একটি দল।

তিনি বলেন, সংঘর্ষের পর পুলিশের ডিজিপি এবং র‍্যাব বোরহান উদ্দিনে পৌঁছেছে। এছাড়া অন্য জেলাগুলো থেকেও অতিরিক্ত বাহিনী নিয়ে আসা হচ্ছে।

সংঘর্ষের পর দুপুরের পর থেকেই বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হতে শুরু করে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলেও জানান জাফর ইকবাল।

এদিকে, আন্দোলনকারীদের একজন ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এক নেতা মাওলানা তরিকুল ইসলাম জানান, রোববারের সংঘর্ষের পর ফেসবুক আইডি’র মালিক ওই যুবকের ফাঁসি, স্থানীয় থানার এসপি এবং ওসিকে অপসারণসহ ৬ দফা দাবি তুলে ধরেছেন বিক্ষোভকারীরা।

তরিকুল ইসলাম জানান, সবশেষ দাবিতে বলা হয়েছে যে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের এই দাবি-দাওয়া বাস্তবায়ন করা না হলে আরো জনসভা এবং আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা।

বিক্ষোভের কারণ কি জানতে চাইলে পুলিশ জানিয়েছে, ফেসবুকে ইসলামের নবীকে নিয়ে কটুক্তি করে দেয়া কথিত একটি পোস্টকে ঘিরে বোরহানউদ্দিনে গত তিনদিন ধরে বিক্ষোভ চলছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা গ্রামবাসীর সঙ্গে কয়েক দফায় আলোচনা চালিয়ে আসছেন।

রোববার সকালে এরকম এক বৈঠকের সময় পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষ বেধে গেলে, এক পর্যায়ে পুলিশ গুলি চালায়। এতে চারজন মানুষ নিহত হয়েছে বলে বোরহানউদ্দিন থানার সাবইন্সপেক্টর মোহাম্মদ জাফর ইকবাল নিশ্চিত করেছেন। এছাড়াও ১০ জন পুলিশ ও ১৯ জন গ্রামবাসী আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।

মোহাম্মদ জাফর ইকবাল জানান, আজ সকাল দশটা থেকেই ঈদগাহ ময়দানে হাজার হাজার মানুষের বিক্ষোভ করছিল। গতকাল হতে বিভিন্ন ইসলামী সংস্থা এই সমাবেশের পক্ষে মাইকে প্রচারণা চালায়। অন্যদিকে ঈদগাহ মাঠের কাছেই একটি মাদ্রাসার কক্ষে পুলিশের এডিশনাল ডিআইজি সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা বৈঠক করছিলেন। এসময় একজন পুলিশ সদস্য টয়লেটে যাওয়ার জন্য নীচে নামলে তার দিকে স্যান্ডেল ছুড়ে মারে বিক্ষোভকারীরা এবং ‘ধর ধর’ বলে ছুটে আসে। এরপরই সংঘর্ষ বেধে যায়।

এদিকে, পুলিশ জানিয়েছে, যার ফেসবুক পোস্ট থেকে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। তবে স্থানীয় সাংবাদিক আদেল হোসেন তপু জানান, ওই যুবক থানায় গিয়ে এক অভিযোগে বলে যে, তার আইডি হ্যাক করে তার নামে অন্য কেউ এসব তথ্য ছড়িয়েছে। এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে ওই যুবককে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয় বলে জানান তিনি। তথ্যসূত্র-বিবিসি বাংলা

আজকের বাজার/লুৎফর রহমান