ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শীতের পিঠা বিক্রির ধুম

এ শীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাস্তায় (ফুটপাতে) পিঠা বিক্রির ধুম পড়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে পিঠা বিক্রি। প্রতিটি দোকানেই থাকে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। জেলা শহরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ হরেক রকমের পিঠা রাস্তায় দাঁড়িয়ে খাওয়ার পাশাপাশি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন বাসা-বাড়িতেও।
জেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়কের ফুটপাত ছাড়াও বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার অলি-গলিতে ভাসমান বিক্রেতারা পিঠা বিক্রি করছেন। শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে দোকানের সংখ্যা।

সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে তাদের পিঠা বিক্রি। শহরের শ্রমজীবী মানুষই তাদের প্রধান ক্রেতা। তবে বিভিন্ন এলাকা থেকে উচ্চ বিত্তরাও এসে তাদের পরিবার-পরিজনের জন্য ফুটপাত থেকে হরেক রকমের পিঠা কিনে নিয়ে যান। পিঠার জন্য প্রচুর ক্রেতা থাকায় অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও পিঠা কিনতে হয়।
সরজমিনে দেখা যায়, এ কনকনে শীতে জেলা শহরের মেড্ডা বাসস্ট্যান্ড, কুমারশীল মোড়, ট্যাংকেরপাড়, পৌর সুপার মার্কেট, সিটি সেন্টার, আধুনিক পৌর সুপার মার্কেট, কোর্ট রোড, মসজিদ রোড, হাসপাতাল রোড, সাবেরা সোবহান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সড়ক, রেলওয়ে স্টেশন রোড, কান্দিপাড়া মাদরাসা রোড, কাজীপাড়া জেলা ঈদগাহ ময়দান, ডা. ফরিদুল হুদা রোড, কাউতলী জেলা পরিষদের মার্কেটের সামনেসহ জেলা শহরের বিভিন্ন রাস্তার মোডের ফুটপাত ও শহরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার রাস্তার মোড়ে পিঠা বিক্রি হচ্ছে।
দোকানিরা ফুটপাতে মাটির চুলা, এলপি গ্যাস ও কোরোসিনের চুলা নিয়ে বসে যান। এসব দোকানে চিতই পিঠা, মেরা পিঠা (চোয়াপিঠা)তবে এ শীতে চিতই পিঠা ও ভাপা পিঠারই কদর বেশি।

ক্রেতাদের অর্ডার অনুযায়ী খেজুরের গুড়, ধনেপাতা ও কাঁচা মরিচ দিয়ে ভাঁপা পিঠা তৈরি করে দেওয়া হয়। এছাড়া চিতই পিঠার সম্পর্কে ক্রেতাদেরকে সরিষার ভর্তা ও শুটকির ভর্তা দেওয়া হচ্ছে। গরম গরম পিঠা পেয়ে ক্রেতারাও দারুন খুশি। প্রতিটি বড় ভাঁপা পিঠা ১৫ টাকা ও প্রতিটি ছোট ভাঁপা পিঠা ১০ টাকা ও চিতল পিঠা ১০ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিটি বড় সাইজের চিতই পিঠা ১০ টাকা এবং ছোট সাইজের চিতই পিঠা ৫ টাকা করে বিক্রি করা হয়।
জেলা শহরের আধুনিক পৌর সুপার মার্কেটের সামনের পিঠা বিক্রেতা রফিক মিয়া জানান, প্রতিদিন তিনি দুই থেকে তিন হাজার টাকার পিঠা বিক্রি করেন। এতে তার লাভ হয় ৪০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা।

শহরের কাজীপাড়া জেলা ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন রাস্তার পাশে পিঠা বিক্রিতা আসমা বেগম বলেন, চিতই পিঠার সঙ্গে ক্রেতাদের চাহিদানুযায়ী সরিষার ভর্তা ও শুটকির ভর্তা দেন তিনি। পিঠা নিতে আসা  শাহজাহান মিয়া সাজন জানান, তাদের বাড়ি জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার সীমনা গ্রামে। তিনি বলেন, শীতের দিনে বাড়িতে মা-চাচিরা তাদেরকে হরেক রকমের পিঠা বানিয়ে খাওয়াতেন। এখন সুযোগ পেলেই শহরের ফুটপাত থেকে চিতই পিঠা ও ভাঁপা পিঠা কিনে নিয়ে যান।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. মোশারফ হোসেন জানান জেলা শহরের ভাসমান প্রতিটি পিঠার দোকান আমাদের নজরধারিতে রয়েছে। পিঠা তৈরিতে ক্ষতিকর কোন উপাদান ব্যবহার করলে, অভিযোগ পেলে সাথে সাথে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। (বাসস)