ব্রিটিশ ব্যাংকে কাতারি রিয়াল লেনদেন নিষিদ্ধ

যুক্তরাজ্যের বেসরকারি খাতের বাণিজ্যিক ব্যাংক ‘টেসকো ব্যাংক’ কাতারি রিয়ালের লেনদেন বন্ধ ঘোষণা করেছে। আজ শুক্রবার থেকে ব্যাংকটির সকল শাখায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির মুদ্রার কেনা-বেচা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক খবরে বলেছে, যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বড় খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান টেসকো গ্রুপের একজন কর্মকর্তা তাদের ব্যাংকিং শাখায় কাতারি মুদ্রা আর বিনিময় যোগ্য নয় বলে জানিয়েছেন।

টেসকোর মূল ব্যবসা যুক্তরাজ্যে। পাঁচ লাখের বেশি লোক টেসকোতে কাজ করে। ক্রেতাদের সবধরণের সেবা প্রদান করা প্রতিষ্ঠানটির আছে একটি ব্যাংক। ১৯৯৭ সালে টেসকো ব্যাংক চালু করা হয়। প্রথমে এটি একটি ক্রেডিট কার্ড সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে চালু হয়। বর্তমানে ব্যাংকটি ৭৬ লাখ লোককে সেবা প্রদান করছে। প্রতিষ্ঠানটি রিটেইল ব্যাংকিং সহ বিভিন্ন ধরণের সেবা প্রদান করে থাকে।

তবে ঠিক কী কারণে কাতারি রিয়ালের লেনদেন টেসকো নিষিদ্ধ করেছে সে সম্পর্কে পরিস্কার জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে সৌদি আরব, আরব আমিরাত, মিশর ও বাহরাইনের নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাজ্যের ব্যাংকটি এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকতে পারে।

উল্লেখ, গত ৫ জুন মধ্যপ্রাচ্যে চরমপন্থীদের মদদের অভিযোগ তুলে কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিশর।

তবে কাতার সেই পদক্ষেপকে বিবেচনা বর্হিভূত সিদ্ধান্ত হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল। দোহার পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ইসলামিক স্টেট বা ব্রাদারহুডের সঙ্গে তাদের কোনো আতাত নেই। তারা কোনো চরমপন্থী সংগঠনকে মদদ দিচ্ছে না।

তবে সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়াত্ত বার্তা সংস্থা এসপিএ জানায়, সন্ত্রাসের হাত থেকে সৌদির জাতীয় সুরক্ষাকে নিশ্চিত করতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।কাতারের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

ইসলামী চরমপন্থীদের আন্দোলনে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগে ২০১৪ সালেও একবার সৌদি আরবের নেতৃত্বে দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে আবুধাবী ও সংযুক্ত মানামা।

রিয়াদের অভিযোগ, সৌদির কোয়াতিফ প্রদেশ এবং বাহরাইনসহ কয়েকটি দেশের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে অর্থ ও তথ্য দিয়ে মদদ দিচ্ছে কাতার। কাতারের এই কর্মকাণ্ড দেশগুলোর নিরাপত্তা ও ঐক্য ধ্বংস করছে।

এর কয়েক দিন আগেই সৌদি আরব, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মিশরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে উসকানি ও সহায়তার অভিযোগে কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা নিষিদ্ধ করে। তখন অভিযোগ করা হয় কাতারের রাষ্ট্রীয় মদদে আল জাজিরা ইসলামীক স্টেট, ব্রাদারহুড ও আল কায়দার মতো সংগঠনগুলোকে মদদ দিচ্ছে।

তখন বলা হচ্ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে টানাপড়েনের কারণে সৌদি আরব, কুয়েত, বাহরাইন, মিশর এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে কাতার।

এদিকে কাতারের এই সংকটে ইরান ও তুরস্ক দেশটির পাশে এসে দাঁড়ায়েছি। ওই দুই দেশ কাতারে খাদ্য পাঠিয়েছে। এছাড়া শক্তি প্রদর্শনের জন্য তুরস্ক সেনা ও সামরিক যান পাঠিয়েছে।

যদিও আঞ্চলিক উত্তেজনা প্রশমনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান সৌদি আরবের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন বলেও জানা গেছে।

আজকের বাজার: এলকে/এলকে ১ জুলাই ২০১৭