মঙ্গলবার থেকে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারণা, আদালতে থাকবেন খালেদা

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মঙ্গলবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করতে যাচ্ছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্যদিকে মাঠের বিরোধী দল হিসেবে পরিচিত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া একই দিন দুর্নীতির মামলায় থাকবেন আদালতের কাঠগড়ায়।

তিন পীরের মাজার জিয়ারতের মধ্যদিয়ে মঙ্গলবার সিলেট থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন শেখ হাসিনা। বেলা ১১টায় হযরত শাহজালাল (রহ.), হযরত শাহপরাণ (রহ.) এবং হযরত গাজী বোরহান উদ্দিন (রহ.) এর মাজার জিয়ারতের মধ্যদিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন তিনি।

এসময় প্রধানমন্ত্রী সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। পরে বিকেল ৩টায় সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় যোগদান করবেন তিনি।

জনসভায় সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরার পাশাপাশি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি নেতাকর্মীদের দিক-নির্দেশনা দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাজিরা দিতে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় আদালতে যাবেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসায় স্থাপিত বিশেষ আদালত-৫ এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৮ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন।

বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেছেন, প্রধানমন্ত্রী অনেক আগ থেকেই সরকারি টাকা খরচ করে দলের নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। অন্যদিকে নতুন নতুন মামলা দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের আদালতের এজলাশে ব্যস্ত রাখছেন। এতে প্রমাণিত হয় সরকার বিএনপিকে বাইরে রেখে আরেকটি একতরফা নির্বাচন করতে চায়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারে গিয়ে সরকারি সুবিধা নিয়ে প্রচারণা করবেন আর বিরোধী নেত্রী আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘুরবেন- এটা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি হতে পারে না। এটা সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের অন্তরায়।

বিষয়টি জনগণের উপর ছেড়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত আছে। কিন্তু আমাদের দাবি নিরপেক্ষ সরকার, সংসদ ভেঙে দিয়ে সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। এগুলো আদায় করার পর আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণায় যাব।’

বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘সরকার আমাদেরকে আদালতে যেতে বাধ্য করছে। সারা দেশের মানুষ এটা জানে। বেগম জিয়াকে সপ্তাহে তিন আদালতে যেতে হচ্ছে। জনগণের কাছে এটাই খালেদা জিয়ার বার্তা।’

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, ‘এটা সহজ বিষয়। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। খালেদা জিয়ার মামলার বিচারকাজ অনেক আগে থেকেই চলছে। এরসঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে প্রত্যেকটা দলই মাজার থেকে দোয়া নিয়ে তাদের নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করে। আমরাও শুরু করছি। খালেদা জিয়া চাইলে তিনিও মাজার থেকে দোয়া নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করতে পারেন। এতে কোনো বাধা নেই।’

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, নাচতে না জানলে উঠান বাঁকা। বিএনপি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ও নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে বিভিন্ন কথা বলে। এটা তাদের নিজেদের অযোগ্যতার কারণে। দুর্নীতি কারণে আদালতে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া। আদালত আর রাজনীতি এক জিনিস নয়।

তিনি বলেন, বিএনপি আগেও সভা-সমাবেশ করেছে। চাইলে তারাও নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারে। তাতে আমরা কোনো বাধা দিচ্ছি না।

আজকের বাজার: সালি / ২৯ জানুয়ারি ২০১৮