মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিষয়ে কোর্টের মতামত নিয়ে সুপারিশ

মুক্তিযোদ্ধা কোটার ব্যাপারে আদালতের মতামত নিয়ে কোটা সংরক্ষণ কিংবা বাতিলের সুপারিশ করা হবে বলে জানিয়েছেন সরকারিভাবে গঠিত কোটা পর্যালোচনা কমিটির প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।

সোমবার (১৩ আগস্ট) সচিবালয়ে কমিটির সভাপতি ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মাদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, কোটা নিয়ে কমিটির সুপারিশ প্রায় চূড়ান্ত। আমরা মেরিটকে (মেধা) প্রাধান্য দিয়ে অলমোস্ট (প্রায়) কোটা উঠিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করবো।

সরকারি চাকরিতে বাংলাদেশে মোট ৫৬ শতাংশ কোটা আছে। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য ৩০ শতাংশ, জেলা ও নারী কোটা ১০ শতাংশ করে, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কোটা পাঁচ শতাংশ এবং এক শতাংশ আছে প্রতিবন্ধী কোটা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই মুক্তিযোদ্ধা কোটা প্রবর্তন করা হয়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর এই কোটার সুবিধা সন্তানদেরকেও দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে তা নাতি-নাতনিদেরকেও দেয়া হয়।

তবে এবার কোনো বিশেষ কোটার কথা না বলে সংস্কারের দাবিতে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে গত ফেব্রুয়ারিতে থেকে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। তারা সব মিলিয়ে কোটা ১০ শতাংশ করার দাবি জানাচ্ছে।

গত ৮ থেকে ১১ এপ্রিল নানা ঘটনার পর ১১ এপ্রিল সংসদে প্রধানমন্ত্রী বলেন কোনো কোটা থাকবে না। তবে গত ১২ জুলাই প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণের বিষয়ে উচ্চ আদালতের রায় রয়েছে। এখন এটি বাতিল হলে তিনি আদালত অবমাননায় পড়বেন। তাহলে কমিটি যে কোটা তুলে দেয়ার সুপারিশ করতে যাচ্ছে, তা কীভাবে সম্ভব?

এমন প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, হ্যাঁ, এ বিষয়ে তবে কোর্টের একটা রায় রয়েছে, মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা সংরক্ষণ করতে হবে। যদি খালি থাকে তবে খালি রাখতে হবে। এটার ব্যাপারে কোর্টের মতামত চাইব, কোর্ট যদি এটাকেও ওয়েব করে দেয় তবে কোটা থাকবে না।

শফিউল আলম বলেন, কোর্ট যদি মুক্তিযোদ্ধা কোটা রাখার পক্ষে মত দেন, তাহলে ওই অংশটুকু সংরক্ষিত রাখার সুপারিশ করা হবে। বাকি সব কোটা উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এটা হলো প্রাথমিক প্রপজিশন।

এসময় মেধাকে গুরুত্ব দিয়ে সব ধরনের কোটা তুলে দেওয়ার ওপর জোর দেন সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।

পিছিয়ে পড়া জেলাগুলোর নাগরিকরা কীভাবে সুবিধা পাবে- এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছি, ওনারা (পিছিয়ে পড়া জেলার চাকরিপ্রার্থীরা) অগ্রসর হয়ে গেছেন।

আজকের বাজার/এমএইচ