রপ্তানির লক্ষ্য অর্জনে উৎপাদন বাড়াতে হবে আরও ২০ ভাগ

রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে উৎপাদনশীলতা বা প্রোডাকটিভিটি আরও বাড়ানোর প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তার মতে, উৎপাদনশীলতায় বাংলাদেশের সক্ষমতা ৭০ ভাগ। এই উৎপাদন সক্ষমতা দিয়ে রপ্তানি লক্ষ্য অর্জন কঠিন।

তিনি বলেন, আমার মনে হয় আমরা যদি দেশের বর্তমান উৎপাদন সক্ষমতা আরও ২০ ভাগ বাড়িয়ে ৯০ ভাগ করা যায় তবে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব।

২ অক্টোবর সোমবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘টেকসই উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির জন্য উৎপাদনশীলতা’ বিষয়ক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় উৎপাদনশীলতা দিবস’ ২০১৭ উপলক্ষে এ সেমিনারের আয়োজন করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশন (এনপিও)।

এ সময় উৎপাদনশীলতার সক্ষমতা বৃদ্ধিতে আমাদের আরও কাজ করার আহবানও জানান মন্ত্রী।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাণিজ্য সহজীকরণের জন্য সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাণিজ্যে পেপারলেস ট্রেডের সক্ষমতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশন (এনপিও কে যথাযথ দায়িত্ব পালন করে ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল মধ্য আয়ের দেশ গড়ে তুলতে সহযোগিতা করতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্ববাণিজ্যে আগের চেয়ে অনেক বেশি সক্ষমতা অর্জন করেছে।ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে হিসেবে ব্যবসা ক্ষেত্রে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সূচকে ১৩৭ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ সাত ধাপ এগিয়ে ১০৬তম অবস্থান থেকে ৯৯তম অবস্থানে উঠে এসেছে। এখন অর্থনৈতিক, সামাজিকসহ সব ক্ষেত্রে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মাধ্যমে দেশব্যাপি প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিএকসময় কৃষি নির্ভর ছিল। ১৯৭২-৭৩ সালে জিডিপিতে কৃষির অবদান ছিল প্রায় ৭৮ ভাগ, এখন তাহয়েছে ১৫ ভাগ। শিল্পখাতে অবদান ছিল খুবই সামান্য আজ শিল্পখাতের অবদান ৩২ ভাগ। এক সময় আমাদের জাতীয় বাজেট বৈদেশিক সাহোয্যের উপর নির্ভর ছিল ৯০ ভাগ। আজ নিজের অর্থেই বাজেট ঘোষণা করা হয়।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, সরকার ও রপ্তানিকারকদের বিশেষ উদ্যোগে বাংলাদেশের পোশাককারখানাগুলো গড়ে উঠছে কমপ্লায়েন্স ফ্যাক্টরি হিসেবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনাইটেড স্টেটস গ্রীণবিল্ডিং কাউন্সিল প্রয়োজনীয় তথ্য অনুসন্ধানের পর সর্বোচ্চ পয়েন্টের ভিত্তিতে বিশে^র ১০টি তৈরিপোশাক ফ্যাক্টরিকে এনার্জি অ্যান্ড ইনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন সার্টিফিকেট দিয়ে থাকে। এবার ইউএসগ্রীন বিল্ডিং কাউন্সিল যে ১০টি তৈরি পোশাক ফ্যাক্টরিকে এলইইডি সার্টিফিকেট দিয়েছে তারমধ্যেরয়েছে বাংলাদেশের ৭টি। শ্রমিকরা নিরাপদ ও কর্মবান্ধব পরিবেশে কাজ করছে। অনেক উন্নত দেশবাংলাদেশকে পণ্য রপ্তানি ক্ষেত্রে ডিউটি ও কোটা ফ্রি সুবিধা দিচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যবেড়েই চলছে। গত অর্থ বছর পণ্য ও সেবা রপ্তানি হয়েছে ৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২১ সালেরপ্তানির পরিমান হবে ৬০ বিলিয়নর মার্কিন ডলার।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ্ এর সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেনবাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের(বুয়েট) উপাচার্য প্রফেসর ড. সাইফুল ইসলাম। বিশেষ অতিথিরবক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট মো. শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন) এবং সেমিনারে স্বাগতবক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশন-এর পরিচালক এস এম আশরাফুজ্জামান।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে ২ অক্টোবর ২০১৭