রেকর্ড ভারতের দিকে! আবার রেকর্ডই ভরসা জোগাচ্ছে বাংলাদেশকে

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এই প্রথম মুখোমুখি ভারত-বাংলাদেশ। তাও আবার সেমিফাইনালে। অতীতেও একাধিকবার মুখোমুখি হয়েছে এই দুই দল। সব হিসেব দেখলে এগিয়ে রয়েছে ভারতই। কিন্তু কখন যে মাঠে নেমে গেম বদলে দেবে বাংলাদেশ তাই বা কে বলতে পারে। ঠিক যেমনটি হয়েছিল ২০০৭ বিশ্বকাপে। বাংলাদেশের এটাই প্রথম বড় আন্তর্জাতিক জয়। পোর্ট অফ স্পেনে বাংলাদেশের কাছে হেরে যেতে হয়েছিল ভারতকে। আবার দুই দল মুখোমুখি। এক নজরে দেখে নেওয়া যা আইসিসির টুর্নামেন্টে ভারত-বাংলাদেশের ফলাফল।

২০০৭ বিশ্বকাপ (বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জিতেছিল)
বাংলাদেশের জন্য এটাই ছিল প্রথম সব থেকে বড় আন্তর্জাতিক জয়। সাফল্যের শুরু প্রথমে বল হাতেই। পোর্ট অফ স্পেনে ভারতকে ১৯১ রানে অল আউট করে প্যাভেলিয়নে পাঠিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশের বোলাররা। সর্বোচ্চ রান ছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ৬৬। মাশরাফি মোর্তাজার ৪, আবদুর রজ্জাকের ৩ ও মহম্মদ রফিকের ৩ উইকেটের দাপটেই শেষ হয়ে যায় ভারতের ব্যাটিং। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৪৮.৩ ওভারেই জয়ের রান তুলে নিয়েছিল বাংলাদেশ। হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান।

২০০৯ টি২০ বিশ্বকাপ (২৫ রানে ভারতের জয়)
নটিংহ্যামের ট্রেন্ট ব্রীজে সেদিন মুখোমুখি হয়েছিল দুই প্রতিবেশি দেশ। প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ওভারে ৫ উইকেটে ১৮০ রান তুলেছিল ভারত। গৌতম গম্ভীর একমাত্র হাপ সেঞ্চুরি করেছিলেন। যুবরাজ সিংহর ব্যাট থেকে এসেছিল ৪১ রান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ওভারে ১৫৫ রানেই শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। জুনেইদ সিদ্দিকির ৪১ রানের ইনিংস ছাড়া আর কেউই লড়াই দিতে পারেনি। সেই ম্যাচে ভারতের হয়ে ৪ ওভারে ২১ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন প্রজ্ঞ্যান ওঝা। ম্যাচের সেরাও হয়েছিলেন তিনি।

২০১১ বিশ্বকাপ (৮৭ রানে জয় ভারতের)
২০১১র বিশ্বকাপ তো আগে থেকেই লেখা হয়ে গিয়েছিল ভারতের নামে। জোড়া সেঞ্চুরিও ছিল ভারতের দখলে। মীরপুরের শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বিরাট রানের লক্ষ্যই বুঝিয়ে দিয়েছিল এটাকে ছাপিয়ে যাওয়া সহজ হবে না। পারেওনি হোম টিম। ওপেন করতে এসে ১৭৫ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলেন বীরেন্দ্র সহবাগ। চার নম্বরে নেমে অপরাজিত ১০০ রানের ইনিংস খেলেন বিরাট কোহালি। তাতেই ভারতের রান পৌঁছয় ৪ উইকেটে ৩৭০এ। জবাবে ব্যাট করতে এসে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৮৩ রানই তুলে পেড়েছিল টাইগারসরা। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৭০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তামিম ইকবাল। ভারতের হয়ে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন মুনাফ পটেল।

২০১৪ টি২০ বিশ্বকাপ (ভারতের ৮ উইকেটে জয়)

এ বারও ভারতের জয় লেখা ছিল এই ম্যাচে। প্রথমে ব্যাট করেছিল বাংলাদেশ। নির্ধারিত ওভারে ৭ উইকেটে ১৩৮ রান তুলেছিলেন তামিম, সাকিবরা। ব্যাক্তিগত সর্বোচ্চ ৪৪ এসেছিল আনামুল হকের ব্যাট থেকে। অপরাজিত ৩৩ রান করেছিলেন মাহমুদুল্লাহ। ভারতের হয়ে তিন উইকেট নিয়েছিলেন অমিত মিশ্রা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৮.৩ ওভারে ২ উিকেটে জয়ের রান তুলে নেয় ভারত। ওপেন করতে এসে রোহিত শর্মা ৫৬ রানের ইনিংস খেলে ভিতটা তৈরি করেই দিয়েছিলেন। অপরাজিত ৫৭ রান করে শেষ কাজটি করে যান বিরাট কোহালি।

২০১৫ বিশ্বকাপ (১০৯ রানে ভারতের জয়)
এই বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল দুই দেশ। জিতেছিল ভারত। নির্ধারিত ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩০২ রান তোলে ভারত। রোহিত শর্মার ব্যাট থেকে আসে ১৩৭ রানের ইনিংস। সুরেশ রায়না করেন ৬৫। বাংলাদেশের হয়ে ৩ উিকেট নেন তাসকিন আহমেদ। জবাবে ব্যাট করতে এসে ৪৫ ওভারে ১৯৩ রানেই শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশ। কেউই বড় রানের ইনিংস খেলতে পারেননি। ভারতের হয়ে ৪ উইকেট নেন উমেশ যাদব। ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন রোহিত শর্মা। বড় রানে হারতে হয়েছিল বাংলাদেশকে।

২০১৬ টি২০ বিশ্বকাপ (১ রানে ভারতের জয়)
এই দুই দলের মধ্যে এই ম্যাচটি ছিল সব থেকে রোমহর্ষক। মাত্র ১ রানে ম্যাচ জিতে নিয়েছিল ভারত। প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪৬ রান তুলেছিল ভারত। বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে হয়েছিল এই ম্যাচ। লক্ষ্যটা এমন কিছু বেশি ছিল না। জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম থেকেই জয়ের ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিল বাংলাদেশ। শেষ বলে মুস্তাফিজুর রান আউট না হলে ফল অন্যরকম হতে পারত। শেষ বলে জয়ের রান নিতে গিয়ে তিনি আউট হয়ে ফেরেন। ১৪৫ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস।

সূত্র:আনন্দবাজারপত্রিকা

আজকের বাজার:এলকে/এলকে/ ১৫ জুন ২০১৭