রোহিঙ্গা ইস্যূতে প্রধানমন্ত্রীকে চীন-ভারত সফরের পরামর্শ বিএনপির

মায়ানমারে গণহত্যা বন্ধ ও নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে দেশটির ওপর চাপ প্রয়োগ করতে ভারত, চীনসহ বিভিন্ন দেশে প্রধানমন্ত্রীকে সফরের পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ভারত ও চীন মায়ানমারের রোহিঙ্গা নীতির পক্ষে কথা বলছে। তাই তাদের বোঝাতে হবে।

রোববার রাজধানীতে বিএনপির ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

ফখরুল বলেন, ‘মায়ানমারের সেনাবাহিনী আরাকানের রোহিঙ্গাদের দেশত্যাগ করতে বাধ্য করছে। এটা শুধু মানবিক বা রাজনৈতিক ব্যাপার নয়। একটি মানবগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র। শান্তিতে যাকে নোবেল দেয়া হয়েছিল, সেই সু চি মানবতার সব নিয়ম-কানুন ধ্বংস করে অসহায় মানুষদের ‍ওপর নির‌্যাতন করছেন।’

রোহিঙ্গ নির্যাতনের বিরুদ্ধে আজ বিশ্ববিবেক জেগে উঠছে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘মায়ানমার সরকারকে বাধ্য করতে হবে রোহিঙ্গাদের ওপর নির‌্যাতন বন্ধ করতে। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে হবে তাদের।’

বাংলাদেশ সরকারকে তারা (বিএনপির নেতারা) এসব কথাই বলেছেন বলে জানান বিএনপির মহাসচিব। তিনি অভিযোগ করেন, ‘কিন্তু তাতে সরকারের গাত্রদাহ হয়েছে। যা করা দরকার তা তারা (সরকারের) করছে না। তারা কাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত তা আমরা জানি না।’

এ সময় ১৯৭৮ সালে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আমি সরকারকে মনে করিয়ে দিতে চাই, ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমানের সময় এমন সমস্যা হয়েছিল। রোহিঙ্গাদের এ দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি (জিয়া) দ্রুততার সঙ্গে চারদিক থেকে কূটনৈতিক চাপ তৈরি করে মায়ানমার সরকারকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করেছিলেন।’ কিন্তু এবার সরকার সঠিক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারায় এত বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পেরেছে বলে দাবি করেন ফখরুল।

রোহিঙ্গাদের অমানবিক নির‌্যাতন ও দুর্দশার কথা তুলে ধরে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বিশ্ববিবেকের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে মায়ানমার সরকারকে গণহত্যা বন্ধ ও রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে কূটনৈতিক চেষ্টা শুরু করতে হবে। তাদের বাধ্য করতে হবে। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীকে বিভিন্ন দেশ সফর করতে হবে। বারবার বলা হচ্ছে ভারত, চীনের কথা। তাদের কাছে যেতে হবে বোঝাতে হবে। কূটনৈতিক আলাপ শুরু হলে এই সমস্যার সমাধান হবে বিশ্বাস করি।’

বর্তমান সরকারকে বিনা ভোটের ও অনির্বাচিত দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘আগামীতেও এমন নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু সেই নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। কিন্তু সরকার সেদিকে যেতে চায় না। কারণ নির্বাচনে তাদের ভয়। কিন্তু বিএনপি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে চায়।’

মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে সভায় মহিলা দলের কেন্দ্রীয় ও মহানগরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে/ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭