সবচেয়ে বড় ভারতীয় ঋণ পাচ্ছে বাংলাদেশ, বৈঠক বুধবার

বাণিজ্য সম্প্রসারণসহ দু’দেশের সর্ম্পক মজবুত করতে ঢাকা দিল্লি দ্বি-পক্ষীয় বৈঠক বসছে আগামী ৪ অক্টোবর বুধবার। এদিন সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নেতৃত্ব দিবেন বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ভারতের পক্ষে উপস্থিত থাকবেন দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী অরুণ জেটলি, অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিভাগের সচিব সুভাষ চন্দ্র গর্গ, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল ও ঢাকাস্থ হাইকমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা। এছাড়া বাংলাদেশ সরকারের একাধিক মন্ত্রী পরিষদ সদস্য, সচিবসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকতে পারেন বলে অর্থমন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।

গত এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে বাংলাদেশকে সাড়ে ৪০০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণরেখা ঘোষণা করা হয়। বৈঠকে  তৃতীয় এলওসি বা নমনীয় চুক্তির ঋণরেখা বাস্তবায়নের জন্য ডলার ঋণরেখা চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর ফলে  ভারতের কাছ থেকে এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় ঋণ পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ভারতীয় ঋণের অর্থদিয়ে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের প্রকল্পের কাজ করা হবে। এজন্য ব্যয় হতে পারে ৮০০ থেকে ১ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া অন্যান্য ১৭টি প্রকল্পসহ ঘোষিত সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার বা ৩৬ হাজার কোটি টাকার ঋণ সহায়তা দেয়ার চূড়ান্ত রুপরেখা ঘোষণা আসতে পারে।

১৭ টি প্রকল্পের অন্যতম হচ্ছে- রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ অন্য স্থানে নেয়ার অবকাঠামো উন্নয়ন, বুড়িগঙ্গা রিভার রেস্টুরেশন প্রজেক্ট, চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ, পায়রা বন্দরের টার্মিনাল নির্মাণ,বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত দ্বৈতগেজ  রেলপথ নির্মাণ, ফরিদপুর-বেনাপোল মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা, মিরসরাই – খাগড়াছড়ির রামগড়  সড়ক চার  লেনে উন্নীত করা, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে এক লাখ এলইডি বাল্ব সরবরাহ, ঈশ্বরদীতে রেল ও সড়কপথের জন্য আইসিডি নির্মাণ, মংলায় ১০০ মেগাওয়াট  সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের তরল বর্জ্য শোধনাগারের যন্ত্রপাতি ক্রয়,  কুমিল্লা  – ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর- সরাইল পর্যন্ত চার লেন সড়ক নির্মাণ প্রকল্প।

এছাড়া বৈঠকে দু ‘দেশের বিনিয়োগ বৃদ্ধি  ও সুরক্ষার জন্য ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চুক্তির উপর যৌথ ব্যাখ্যামূলক নোটসমূহ ও স্বাক্ষরিত হবে।

ইআরডির অতিরিক্ত সচিব শহিদুল ইসলাম জানান, তৃতীয় এলওসি চুক্তির মাধ্যমে ভারত থেকে বড় অঙ্কের ঋণ সহায়তা পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ইতোমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে।

তথ্য মতে, ভারতের প্রথম এলওসি’র ১৫টি প্রকল্পের মাধ্যমে গত ৭ বছরে এসব প্রকল্পের বিপরীতে ৩৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার ছাড় করেছে ভারতীয় এক্সিম ব্যাংক। প্রথম এলওসির আওতায় ৮৬ কোটি ২০ লাখ ডলার ঋণ দেওয়ার কথা। ওই এলওসির ৩টি প্রকল্পের কাজ এখনো চলমান। প্রথম এলওসির পর এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে আরও দুটি এলওসি চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় এলওসির ১৪টি প্রকল্পের ১২টিতে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে ভারত। তবে প্রকল্পগুলোর মাঠ পর্যায়ের কাজ এখনো শুরু হয়নি।

উল্লেখ, ভারত সরকারের অর্থ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী অরুণ জেটলি ৩ দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন আগামীকাল মঙ্গলবার। সফর সঙ্গী হিসেবে আসবে দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক বিষয়ক বিভাগের সচিব সুভাষ চন্দ্র গর্গ ও অন্যান্য উর্ধতন কর্মকর্তা এবং ভারতীয় শিল্প ও বণিক সমিতি (এফআইসিসিআই)-র ৩০ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল।

আজকের বাজার : সালি / ০২ অক্টোবর ২০১৭