সুহৃদে নয়-ছয়ের অভিযোগ: পর্ষদ ভাঙ্গার দাবি: ব্যাখ্যা চেয়েছে বিএসইসি

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ভেঙ্গে দেওয়ার আবেদন জানিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিতে চিঠি দিয়েছেন এক বিনিয়োগকারী। এ বিষয়ে ৫ কার্যদিবসের মধ্যে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে কোম্পানিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে মাত্র ৯ শতাংশ শেয়ার ধারণ করে আছে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ। বর্তমানে কোম্পানিটি লোকসানে চলছে। ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি। ১ বছরের বেশি সময় ধরে কোম্পানিটি জেড ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে।

চিঠিতে দাবি করা হয়, আইপিওর টাকা দিয়ে মেশিন ও ভবন নির্মাণের কথা থাকলেও তা করা হয়নি। বিএসইসির নির্দেশনা লংঘন আইপিওর বেশিরভাগ টাকা দিয়ে ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে। পরে আবার অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছে। তা থেকে কোটি টাকার ওপর অপরিশোধিত রয়েছে। কিন্তু এই টাকা পরিশোধের কোনো উদ্যোগ বর্তমান চেয়ারম্যানের নেই বলে দাবি করা হয় চিঠিতে। কিছুদিন আগে কোম্পানির প্রধান কার্যালয় ধানমন্ডি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। অথচ এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়নি।

অভিযোগকারীর দাবি, কোম্পানিটি যদি এভাবে চলতে থাকে তবে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ সমস্ত সম্পদ বিক্রি করে বিদেশে পালিয়ে যাবে। এতে কোম্পানির অন্য শেয়ারহোল্ডাররা অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। বিনিয়োগকারী নাজমুন নাহার সানজিদার ওই চিঠির বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে কোম্পানির কাছে। ৫ কর্মদিবসের মধ্যে কমিশনকে অবহিত করতে বলেছে বিএসইসি।

সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ২০০৪ সালের ২৬ মার্চে যাত্রা শুরু করে। কোম্পানাটি ২০০৮ সালের ৩ মে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যায়। ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরিত হয়। আর ২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়।

প্রথম বছরে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ বিনিয়োগকারীদের জন্য ১৪ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করলেও এর পর বাকী ২ বছর কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি। ২০১৪ সালে শেষে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ১ টাকা ৬৪ পয়সা। তবে তার পর বছর কোম্পানিটি লোকসানে পড়ে। ২০১৫ সাল শেষে কোম্পানির শেয়ার প্রতি লোকসান হয় ৩ পয়সা। এসময় কোম্পানির নিট লোকসান হয় সাড়ে ১৬ লাখ টাকা।

২০১৬ সালে লোকসান বেড়ে যায়। এসময় শেয়ার প্রতি লোকসান হয় ৪ পয়সা। আর এই বছরে নিট লোকসানের পরিমাণ দায় ২২ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। কোম্পানিটির বর্তমান রিজার্ভ রয়েছে ১০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৫২ কোটি ১৫ টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির ৫ কোটি ২১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০টি শেয়ার রয়েছে।

কোম্পানির মোট শেয়ারের ৯.৪১ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকের কাছে। বাকী সব শেয়ারই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।