ভিআইপিদের ট্রাফিক আইন মানার অনুরোধ কাদেরের

সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও সুশৃঙ্খল সড়কের জন্য সবাইকে সচেতন হওয়ার আহবান জানিয়েছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সমাজের নেতৃস্থানীয় বা ভিআইপি ব্যক্তিদের ট্রাফিক আইন মেনে চলার অনুরোধ করেছেন।

তিনি বলেন,দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ও সুশৃঙ্খল সড়কের জন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। সড়ক নিরাপদের কাজ একা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পারবেন না, একা ইলিয়াস কাঞ্চন পারবেন না, একা ওবায়দুল কাদেরও পারবেন না। এজন্য সবার সহযোগিতা দরকার। সাধারণ পথচারী থেকে উচ্চ পর্যায়ের সবার মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে।

সড়ক পরিবহনমন্ত্রী রোববার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

‘সাবধানে চালাবো গাড়ি, নিরাপদে ফিরবো বাড়ি’ বিষয় স্লোগান সামনে রেখে এদিন বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে ‘জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস ২০১৭’ পালিত হচ্ছে। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উদ্যোগে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

ওবায়দুল কাদের বলেন,আমাদের কিছু অসাধারণ নেতা আছেন, অসাধারণ মানুষ আছেন যারা সড়কে নিয়ম মানতে চান না। রাস্তায় ফুটওভার ব্রিজ থাকতেও হামাগুড়ি দিয়ে ডিভাইডার পার হন। এমনকি ফ্লাইওভারেও দৌঁড়ে ডিভাইডার দিয়ে পার হতে দেখা যায়। তখন দুর্ঘটনা ঘটলে এর জন্য কি চালককে দোষারোপ করা যায়?

সমাজের প্রভাবশালীদের উদ্দেশ্যে কাদের বলেন, আপনারা উল্টোপথে গাড়ি চালাবেন না। আইন মেনে গাড়ি চালান সমাজের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা ট্রাফিক আইন মেনে চললে সাধারণ মানুষও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে।

তিনি বলেন, রাস্তাকে নিরাপদ করতেই হবে। আমাদের বাঁচতে হলে, ভবিষ্যত প্রজন্মকে নিরাপদ রাখতে হলে রাস্তা নিরাপদ করতেই হবে। আমরা অবশ্যই পারব, তবে এজন্য সবার মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, পরিসংখ্যানের দিক দিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা কমে আসছে। তবে এতে আত্মতৃপ্তিতে ভোগার কোনো সুযোগ নেই। প্রতিটি প্রাণই মূল্যবান। আমরা চাই না সড়কে আর কোনো প্রাণ অকালে ঝরে যাক। গাড়ি চালকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,বেপরোয়া গাড়ি চালালে যেমন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে তেমনি নিজের জীবনও ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে।

তিনি বলেন, ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক একসময় মৃত্যুফাঁদ হিসেবে পরিচিত ছিল। দুর্ঘটনাপ্রবণ স্পটগুলো প্রশস্ত ও সড়ক বিভাজক স্থাপনের ফলে এখন এ মহাসড়কে দুর্ঘটনা নেই বললেই চলে। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে প্রকৌশলগত সমাধানের পাশাপাশি ট্রাফিক আইন বাস্তবায়ন এবং সড়ক ব্যবহারকারীদের সচেতনতা হওয়া জরুরি।

এ সময় ভবিষ্যত বংশধরদের জন্য নিরাপদ সড়ক গড়ে তুলতে যানজট,সড়ক দুর্ঘটনা ও পরিবহণে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সমন্বিত ও পরিকল্পিত উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেন মন্ত্রী। তিনি বলেন,জনপ্রতিনিধিদের এলাকায়ই নসিমন করিমন তথা বেটারি চালিত গাড়ির কারখানা। যে গাড়িতে মানুষ প্রতিনিয়ত প্রাণ দিচ্ছে। সড়ক ঝুঁকিপূর্ণ করছে। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।

বিআরটির চেয়ারম্যান মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ এর সভাপতি চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য মনিরুল ইসলাম এমপি, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সাবেক সচিব এম. এন. সিদ্দিক, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম,জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান ও পরিবহণ মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে ২২ অক্টোবর ২০১৭