১০০০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে বেজা

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) চাঁদপুর জেলার বাহের চরে ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন একটি সৌর বিদ্যুৎ জোন স্থাপনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ও ‘ভিশন-২০২১’ এবং ‘ভিশন-২০৪১’ বাস্তবায়ন করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন,প্রায় ৪ হাজার একর জমির উপর আমরা সৌর বিদ্যুৎ জোন (সোলার পাওয়ার জোন) স্থাপন করতে যাচ্ছি। এই জোন স্থাপনের জন্য জমি অধিগ্রহনের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের অনুমোদনের পর জোনের নাম নির্ধারণ করা হবে। তবে এ সৌর বিদ্যুৎ জোনের নাম ‘বঙ্গবন্ধু সোলার পাওয়ার জোন’ হওয়ার কথা আছে বলে তিনি জানান।

পবন চৌধুরী জানান, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং পাওয়ার চায়না দেশের সর্ববৃহৎ সোলার জোন বাস্তবায়নে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তিনি বলেন, সোলার জোনটি দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডকে ১ হাজার একর ও পাওয়ার চায়নাকে ৩ হাজার একর জমি বরাদ্দ দেওয়ার পরিকল্পনা করছি।

সোলার জোন বাস্তবায়নের কাজ শিগগিরই শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করে বেজা প্রধান বলেন, আগামী বছরের মধ্যে জোনটি’র আংশিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা আছে। এ চরাঞ্চলের বালুচর চাষাবাদের উপযুক্ত নয় বলে এই অঞ্চলগুলোতে বিদ্যুৎ জোন তৈরি হলে জমিগুলোর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত হবে বলে মত দেন বেজা প্রধান। তিনি বলেন, পাওয়ার জোনের জন্য নির্বাচিত জমি কোনো শষ্য চাষের উপযোগী নয়। তবে এগুলো নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বেশ উপযোগী।

এক প্রশ্নের জবাবে বেজা প্রধান বলেন, দ্রুত শিল্পায়নের জন্য বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে ও নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে পাওয়ার জোনকে জাতীয় গ্রিডের সাথে সংযুক্ত করা হবে। তিনি বলেন, ২০২১ সালে ২৪ হাজার মেগাওয়াট ও ২০৪১ সালে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে সরকারের।

বিদ্যুৎ বিভাগের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট (২০০৯) থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১৫ হাজার ৩৭৯ মেগাওয়াটে উন্নীত হওয়ার মাধ্যমে দেশের বিদ্যুৎ খাত ব্যাপক সফলতা লাভ করেছে। বর্তমানে দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে।

এদিকে বহুমাত্রিক শিল্প, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, উৎপাদন ও রপ্তানির মাধ্যমে দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০৩০ সালের মধ্যে সারা দেশে ১০০ টি অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছে বেজা।

অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে, আইনি প্রতিবন্ধকতা দূর করতে সরকার ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় আইন এবং নিয়ম-নীতি তৈরি করেছে।

বিনিয়োগকারীদের জন্য হয়রানিমুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে, ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টারের অধীনে গ্যাস, পানি এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতসহ অর্থনৈতিক ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদানে সহযোগিতার জন্য সরকার প্রয়োজনীয় নিয়ম-নীতিও তৈরি করেছে। অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগকারীদের বিদ্যুতের উপর ভ্যাট ও আয়কর অব্যহতি দেওয়ার পাশাপাশি, সরকার বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনাও ঘোষণা করেছে।

আজকের বাজার: এলকে/এলকে ২৪ জুন ২০১৭