৭ ঘন্টার মধ্যে ধর্ষণ মামলার রায় মধ্যপ্রদেশে

একটি ধর্ষণ মামলার চার্জশিট দাখিলের মাত্র সাত ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্ত ১৪ বছরের এক কিশোরকে দু’বছরের সাজা দিল মধ্যপ্রদেশের এক আদালত। এত কম সময়ে ধর্ষণের মামলায় সাজা ঘোষণার রেকর্ড ভারতে আর নেই। এদিকে মন্দসৌরে সাত বছরের এক বালিকাকে ধর্ষণ ও খুনের চেষ্টার দায়ে মঙ্গলবার দু’জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে রাজ্যের আরও একটি আদালত। চার্জশিট দাখিলের পর দু’মাসেরও কম সময়ের মধ্যে আদালত এ রায় দিল। এই নিয়ে গত ৮ মাসে ১৩ জনকে ফাঁসির রায় দিয়ে নজির সৃষ্টি করল মধ্যপ্রদেশ।

বিচার প্রক্রিয়ায় গতি আসার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। বহুবার ধর্ষণের মতো মামলার দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এবার ‌এতে গতি আনতে অভিনব পদ্ধতি নিয়েছে মধ্যপ্রদেশের ডিরেক্টরেট অফ পাবলিক প্রসিকিউশন। ধর্ষণের মামলার শুনানি দ্রুত শেষ করার জন্য আইনজীবীদের মধ্যে পয়েন্ট ব্যবস্থা চালু হয়েছে। ধর্ষণের মতো ঘটনায় দ্রুত শুনানি শেষ করে মৃত্যুদণ্ডের পক্ষো সাজা শোনাতে পারলে ১ হাজার পয়েন্ট। যাবজ্জীবন হলে মিলবে ৫০০ পয়েন্ট। অন্যান্য সাজায় ১০০-২০০ পয়েন্ট। রাজ্যের আইনজীবীদের কাজের ওপর নজর রাখতে চালু হয়েছে ‘ই-প্রসিকিউশন’ অ্যাপ। কোনও আইনজীবীর পয়েন্ট ৫০০ এর কম হলেই তাঁকে সতর্ক করা হচ্ছে। ফলে অযথা বিচারপ্রক্রিয়া বিলম্বিত করার ঘটনা কমেছে। তবে মৃত্যুদণ্ডের সাজার ক্ষেত্রে একমাত্র হাইকোর্ট রায় দিলে তবেই পয়েন্ট মিলবে। এছাড়াও চার্জশিট জমা পড়া, অপরাধীর অপরাধ লঘু করে দেখানোর চেষ্টা সবটাই মনিটর করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে।

ধর্ষণের ঘটনার রেকর্ড মধ্যপ্রদেশে

নথিভুক্ত ধর্ষণের ঘটনায় দেশে রেকর্ড গড়েছে মধ্যপ্রদেশ। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি)-র তথ্য বলছে, ২০১৬ সালে দেশে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল ৩৮ হাজার ৯৪৭টি। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটেছিল মধ্যপ্রদেশে, ৪ হাজার ৮৮২টি। শিশু ধর্ষণের ক্ষেত্রেও রেকর্ড গড়েছে মধ্যপ্রদেশ। ২০১৬-য় শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২ হাজার ৪৭৯টি। তার আগের বছরও ধর্ষণের ঘটনার শীর্ষে ছিল মধ্যপ্রদেশ। সে বছর মধ্যপ্রদেশে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল ৪ হাজার ৩৯১টি। গত নভেম্বরে এ দেশে প্রথম মধ্যপ্রদেশ মন্ত্রিসভাই ১২ বছরের কম বয়সীদের ধর্ষণে মৃত্যুদণ্ডের সুপারিশ করেছিল।