উত্তপ্ত দার্জিলিং:শিলিগুড়িতে বামফ্রন্টের শান্তি মিছিলের ডাক

মেহরাজ মোর্শেদ: পৃথক রাজ্যের দাবীতে চলমান আন্দোলনে অশান্ত পশ্চিমবঙ্গের শৈলশহর দার্জিলিং। এই পরিস্থিতিতে আগামী ৩ জুলাই শিলিগুড়িতে শান্তি মিছিলের ডাক দিয়েছে বামফ্রন্ট। মিছিলে সিপিএম এর পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম ও বাম নেতা সুজন চক্রবর্তীর থাকার কথা রয়েছে। এর আগে কংগ্রেস ও বাম পরিষদীয় দলের পক্ষ থেকে পাহাড়ের মানুষের সঙ্গে কথা বলে তথ্য সংগ্রহ এবং রাজ্যপালের কাছে রিপোর্ট দেওয়ার উদ্দেশ্যে ১ জুলাই দার্জিলিংয়ে বিধায়কদের পাঠানোর কর্মসূচি নেয়া হয়েছিলো। এবিষয়ে কয়েক দফায় পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য স্বরাষ্ট্রসচিব মলয় দে-র সঙ্গে কথা বলছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। তবে প্রশাসনের পরামর্শে এই কর্মসূচী পিছিয়ে দিয়েছে কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট। তার পরিবর্তে আগামী ৩ জুলাই শিলিগুড়িতে বামফ্রন্টের ডাকা শান্তি মিছিলে যোগ দিতে পারে কংগ্রেস।

এদিকে শিলিগুড়ির সিপিএম এর বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্যের সঙ্গে বুধবার আবারও আলোচনায় বসেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। “পাহাড়কে আরও উত্তপ্ত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। শান্তি এবং অখণ্ডতা রক্ষার জন্য আমরা আলোচনা চাই।” বলে মন্তব্য করেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। এব্যাপারে বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “পাহাড়ের আন্দোলনকারীদের সমর্থন করতে আমরা যাচ্ছি না। পৃথক রাজ্যের দাবি সমর্থনেরও প্রশ্ন নেই। শান্তি মিছিল করার পরে আমরা পাহাড়ে যাব। সেই দিনটাও শিগগিরই ঠিক করে ফেলা হবে।” পরিস্থিতি রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে গিয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “জেদ ছেড়ে মোর্চা ও সরকারকে আলোচনায় আসতে হবে। শিলিগুড়ির মেয়র হিসাবে ৩ তারিখের শান্তি মিছিলে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে শাসক দল এখন সমতলে জাতিগত বিভাজন তৈরির চেষ্টা করছে।”

গত ১২ জুন থেকে পৃথক রাজ্য গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার আন্দোলনে উত্তপ্ত রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের পার্বত্য জেলা দার্জিলিং। তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন পশ্চিমবঙ্গ সরকার সেখানে পুলিশ ছাড়াও সেনাবাহিনী এবং আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করেছে। তাদের সাথে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষে আন্দোলনকর্মী, মোর্চা সমর্থক, সাধারণ পাহাড়বাসী, পুলিশ এবং বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। দার্জিলিংয়ে প্রায় অর্ধশতাধিক গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। লাগাতার এই আন্দোলনে এখন পর্যন্ত ৪ জন সদস্যের মৃত্যু হয়েছে বলে মোর্চার পক্ষ থেকে দাবী করা হয়েছে। তবে পৃথক রাজ্যের দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য,পৃথক রাজ্য গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে ২০০৭ সালের ৭ অক্টোবর সকাল ১১ টা ১৯ মিনিটে বিমল গুড়ংয়ের নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করেছিল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা।

আজকের বাজার: এমএম/এলকে ২৯ জুন ২০১৭