ওজন বাড়ায় ওষুধ!

ওষুধ আমাদের জীবনের সঙ্গে অতপ্রোত ভাবে জড়িয়েই আছে। কোন রকম পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই যে কোন সময় অসুস্থ হয় মানুষ। আর অসুস্থা থেকে মু্ক্তি পেতে হলে সর্ব প্রথম চাই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ সেবন। সুস্থু শরীর পেতে হলে আমাদের অনেক ওষুধই খেতে হয়। কিন্তু ওষুধ আমাদের অসুস্থ শরীরকে সুস্থ করতে পাররেও এমন কিছু ওষুধ রয়েছে যা আমাদের মোটা হওয়ার জন্য দায়ী। এমনই কিছু বিষয় রয়েছে আমাদের এই আয়োজনে।

স্টেরয়েড ও হরমোন : সম্ভবত সবচেয়ে বেশি এ ঘটনাটি দেখা যায় স্টেরয়েড নিয়ে। বিশেষ করে হাঁপানি বা অ্যালার্জি হঠাৎ বেশি বেড়ে গেলে, প্রচণ্ড ব্যথা-বেদনা কমাতে কিংবা ত্বকের ও হাড়সন্ধির নানা সমস্যায় চিকিৎসকেরা স্টেরয়েড দিয়ে থাকেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এ ওষুধ হয়তো কয়েক দিনের জন্য খেতে দেয়া হয়। কিন্তু রোগীরা উপশম পেয়ে বারবার বা একটানা দীর্ঘ দিন খেতে থাকেন। ফলে ওজন বাড়তে থাকে। বাজারে প্রচলিত অনেক হারবাল, টোটকা বা ভেষজ ওষুধ আসলে কিছুই নয়, এই স্টেরয়েড। তাই এসব থেকে সাবধান।

খেলোয়াড় ও অ্যাথলেটরা শক্তি বাড়ানোর জন্য টেস্টোস্টেরন বা নানা ধরনের হরমোন সেবন করেন, সেগুলো ওজন বাড়ায়। ওজন বাড়ায় জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়িও। তবে বর্তমানে যেসব স্বল্পমাত্রার বড়ি বা কেবল ইস্ট্রোজেন বড়ি পাওয়া যায়, তাতে এ ওজন বাড়ার হার কম।

ডায়াবেটিসের ওষুধ : সালফোনাইলইউরিয়া ও গ্লিটাজন গ্রুপের ডায়াবেটিসের ওষুধ রোগীর ওজন বাড়ায়। টাইপ ২ ডায়াবেটিসে এমনিতেই ওজনাধিক্য একটি বড় সমস্যা, তাই স্থূল রোগীদের এসব ওষুধের বিকল্প খোঁজা উচিত। কেননা, একই সাথে ওজন কমায় ও কার্যকর নানা নতুন ওষুধ, যেমন মেটফরমিন, ডিপিপি ৪ ইনহিবিটর প্রভৃতি এখন বাজারে রয়েছে। ইনসুলিনও ওজন বাড়ানোর দায়ে অভিযুক্ত। এখানেও ওজন কম বাড়ায় এমন আধুনিক অ্যানালগ ইনসুলিনের কথা ভাবতে পারেন।

মানসিক রোগের ওষুধ : বিষন্নতার নানা ওষুধ, মানসিক রোগ ও মৃগীরোগের বিভিন্ন ওষুধও ওজন বাড়ায়। যেমন অ্যান্টিডিপ্রেশেন্ট, সোডিয়াম ভ্যালপ্রোয়েট বা লিথিয়াম। কিন্তু প্রয়োজনে এ ধরনের ওষুধ আপনাকে খেতে হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ওজন কমানোর জন্য অন্য দিকে সচেষ্ট হোন।

একটা ধারণা আছে যে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম প্রভৃতি খেলে ওজন বাড়ে, কিন্তু আসলে তা নয়। এসব ওষুধের সাথে ওজন বাড়ার সম্পর্ক নেই। সব ধরনের ঘুমের ওষুধেও ওজন বাড়ে না। আর ওজন বাড়ার জন্য হয়তো আপনার জীবনাচরণই বেশি দায়ী, সে দিকটাও লক্ষ করুন।

আজকের বাজার : আরএম/৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮