কাল শুরু বঙ্গবন্ধু টি-টুয়েন্টি কাপ

বঙ্গবন্ধু টি-টুয়েন্টি কাপ দিয়ে আবারো ঘরোয়া আসরের উন্মাদনায় মেতে উঠছে দেশের ক্রিকেটাররা। পাঁচটি দলকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু টি-টুয়েন্টি কাপের পর্দা উঠছে আগামীকাল।
উদ্বোধনী দিনের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে বেক্সিমকো ঢাকা ও মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে লড়বে জেমকন খুলনা ও ফরচুন বরিশাল। টুর্নামেন্টের সকল ম্যাচ ‘হোম অব ক্রিকেট’ মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে।

প্রথম ম্যাচ শুরু হবে দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে। আর দ্বিতীয় ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে। রাষ্ট্র পরিচালিত বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং দেশের নতুন স্পোর্টস চ্যানেল টি-স্পোর্টস ম্যাচগুলো সরাসরি সম্প্রচার করবে।

দেশের শীর্ষ স্থানীয় ইলেক্টনিক্স ও অটোমোবাইল প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ওয়াল্টন, বঙ্গবন্ধু টি-২০ কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের টাইটেল স্পন্সর হয়েছে।
টুর্নামেন্টের আনুষ্ঠানিক নামকরণ হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু টি-২০ কাপ স্পন্সর বাই ওয়াল্টন’। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে হাই-ভোল্টেজ এই টুর্নামেন্টটির আয়োজন করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
বিসিবির ধারাবাহিক উদ্যোগের অংশও এই টুর্নামেন্টটি। গেল মার্চে করোনার কারনে দেশের ক্রিকেট কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবার পর দেশের ক্রিকেটকে পুনরায় শুরু করতেই এমন পরিকল্পনা বিসিবির।
বিসিবি আশা করছে, বঙ্গবন্ধু টি-টুয়েন্টি কাপ দেশে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে ফিরিয়ে আনতে মূখ্য ভূমিকা পালন করবে।
খেলোয়াড়, কর্মকর্তা এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের নিরাপদ জোনে রাখার জন্য জৈব-সুরক্ষা পরিবেশে এই টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে। পাঁচটি দল এবং ৮০ জন ক্রিকেটারসহ প্রায় ৩০০ জন টুর্নামেন্টের শেষ অবধি জৈব-সুরক্ষা পরিবেশের মধ্যে থাকবেন। জৈব-সুরক্ষা পরিবেশে এত বিপুল সংখ্যক লোককে পরিচালনা করা কঠিন কাজ, তবে বিসিবির লক্ষ্য, টুর্নামেন্টটি সফলভাবে আয়োজন করে বিশ্বকে একটি বার্তা দেয়া।
এর আগে ৭০জনকে জৈব-সুরক্ষা পরিবেশে রেখে ওয়ানডে ফরম্যাটে বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপ আয়োজন করেছিলো বিসিবি। সাফল্যের সাথে ঐ টুর্নামেন্ট শেষও করেছিলো তারা।
বিসিবি মিডিয়া ও কমিউনিকেশন কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস বলেন, ‘টি-টুয়েন্টি টুর্নামেন্টটি বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপের ফলো-আপ টুর্নামেন্ট। যেহেতু সামনে আমাদের অনেক আন্তর্জাতিক ম্যাচ আছে। তাই এই টুর্নামেন্টটি পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে আমাদের সহায়তা করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিদেশি দলগুলোকে জানাতে চাই, আমরা এখানে জৈব সুরক্ষা বলয় পরিবেশ নিশ্চিত করেছি। এই টুর্নামেন্ট ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনে সহায়ক হবে।’
টুর্নামেন্টের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই আসরে শুধুমাত্র স্থানীয় খেলোয়াড়রাই খেলতে পারবে। ১৫৭জন ঘরোয়া খেলোয়াড়কে ড্রাফটে রাখা হয়েছিলো। সেখান থেকে পাঁচটি তাদের দলে নিয়েছে। দলগুলো হলো- বেক্সিমকো ঢাকা, জেমকন খুলনা, মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী, গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম এবং ফরচুন বরিশাল।
এই টুর্নামেন্টটি বর্তমান পরিস্থিতিতে শীর্ষস্থানীয় এবং নতুন ক্রিকেটারদের প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে খেলার সুযোগ করে দিবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিসিবি পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন জানিয়েছেন, নিজেদের প্রতিভা প্রদর্শনে বঙ্গবন্ধু টি-টুয়েন্টি কাপ স্থানীয় খেলোয়াড়দের জন্য বড় একটি প্লাটফর্ম।
তিনি বিশ্বাস করেন, আসন্ন টুর্নামেন্টটি একই সাথে বাংলাদেশ ক্রিকেটকেও উপকৃত করবে। কারণ টিম ম্যানেজমেন্ট অবশ্যই আরও কিছু খেলোয়াড়কে খুঁজে পাবে, যারা জাতীয় দলে কিছু জায়গা পূরণ করবে।
মাহমুদ বলেন, ‘প্রতিভা প্রদর্শনের জন্য এই টুর্নামেন্টটি স্থানীয় খেলোয়াড়দের জন্য একটি ভাল সুযোগ। খেলোয়াড়রা যেমন স্পটলাইটে যেতে সক্ষম হবে, একই সাথে বাংলাদেশের ক্রিকেটও এই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে উপকৃত হবে।’
বিপিএলে বিদেশী খেলোয়াড়দের ছায়ায় থাকতে হয় স্থানীয় ক্রিকেটারদের। এতে স্পটলাইটে আসতে পারে না তারা।
বেশিরভাগ সময় স্থানীয় খেলোয়াড়রা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দলের হয়ে ব্যাটিং বা বোলিংএ নিজেদের মেলে ধরার সুযোগ পায় না। এজন্য তারা এই দক্ষতা অর্জন পারদর্শী নয়।
মাহমুদ বলেন, বিদেশী ক্রিকেটাররা না থাকায় বঙ্গবন্ধু টি-টুয়েন্টি কাপে নিজেদের প্রমাণ করার সুযোগ পাবে তরুণ ক্রিকেটাররা।
বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মাহমুদ বলেন, ‘তরুন ক্রিকেটারদের জন্য এটি খুবই ভালো সুযোগ। যখন বিপিএল শুরু হয়, বিদেশী খেলোয়াড়দের কারনে আমাদের তরুন বোলাররা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বোলিং করতে পারে না। ফলে ডেথ ওভারে আমরা ভালো বোলার খুঁজে বের করতে পারিনি। আমরা এই টুর্নামেন্ট থেকে কিছু প্রতিভাবান ক্রিকেটার পেতে পারি। অনেক তরুন ক্রিকেটারকে এই আসরে নিজেদের বিসিবির সামনে প্রমান করতে হবে।’
মাহমুদ মনে করেন, তরুন খেলোয়াড়দের উন্নতিতে প্রতিযোগিতাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
তিনি বলেন, ‘নিজেদের প্রমানের ভালো সুযোগ পেয়েছে তরুন ক্রিকেটাররা। তারা চার ও পাঁচ নম্বরের মত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ব্যাট করবে এবং ম্যাচ শেষ করে আসতে হবে। এটি তাদের দক্ষতার পরীক্ষা। এই টুর্নামেন্ট থেকে তারা অনেক কিছুই শিখতে পারবে। তারা কিভাবে চাপকে নিতে পারবে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।’