টেলি সামাদের প্রতি সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা : মুন্সিগঞ্জে দাফন

সর্বস্তরের মানুষ শেষ শ্রদ্ধা জানালেন খ্যাতিমান অভিনেতা, চলচ্চিত্র পরিচালক ও সংগীত শিল্পী টেলি সামাদকে। শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পর এই কিংবদন্তি শিল্পীর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয় ঢাকার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন (এফডিসি) প্রাঙ্গণে।
পরে শিল্পীকে দাফন করার জন্য মরদেহ তার জন্মস্থান মুন্সিগঞ্জ সদরের নয়াগাঁও গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
আজ সকাল এগারটায় টেলি সামাদের মরদেহ নিয়ে আসা হয় এফডিসিতে। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র অভিনয় শিল্পী সংসদের উদ্যোগে এখানে শিল্পীকে শেষ শ্রদ্ধাজ্ঞাপনেরআয়োজন করা হয়। এখানে চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতির অঙ্গণের বিভিন্ন সংগঠন ও অভিনেতা,অভিনেত্রী,কলাকুশলীরা শিল্পীর কফিনে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শেষ শ্রদ্ধা জানান।
প্রথমে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। পরে তথ্যসচিব আবদুল মালেক ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং এফডিসির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা শ্রদ্ধা জানান। পরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতি, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের পক্ষ থেকে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানানো হয়। অন্যান্যের মধ্যে আকবর হোসেন পাঠান এমপি ( নায়ক ফারুক) , নায়ক আলমগীর, নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, নায়ক উজ্জ্বল, নায়ক অমিত হাসান, নায়িকা অঞ্জনা, শিল্পী রফিকুল আলম, শিল্পী ফকির আলমগীরসহ চলচ্চিত্র অভিনেতা ও অভিনেত্রীরা শেষ শ্রদ্ধা জানান। এ ছাড়াও চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান গুলজার, চলচ্চিত্র পরিচালক দেলোয়ার জাহান ঝন্টু ও কাজী কামালসহ চলচ্চিজগতের ব্যাক্তিবর্গ শিল্পীর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের পর সংক্ষিপ্ত ভাষণে বলেন, দেশের চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতি জগতের এক মেধাবী শিল্পীকে আমরা হারালাম। তিনি একই সাথে অভিনেতা, গানের শিল্পী, চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রশিল্পী। এতো বড় এক গুণী শিল্পী তার সাধনার মধ্যদিয়ে যে নির্দশন রেখে গেলেন, তার আদর্শকে ধারণ করে নতুন প্রজন্মের শিল্পীরা যদি নিজেদের গড়ে তুলতে পারেন, তাহলেই তার আত্মা শান্তি পাবে।
আকবর হোসের পাঠান এমপি (নায়ক ফারুক) টেলি সামাদের স্মৃতিচারণ করে বলেন , অনেক বড় মাপের একজন অভিনেতা টেলি সামাদ। পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটে। দীর্ঘদিন ছবিও এঁকেছেন। কয়েকশত ছবিতে অভিনয় করেন। গান লিখেছেন, শতাধিক ছবিতে গানে কন্ঠ দিয়েছেন। ছবি পরিচালনা করেছেন। এতো বিষয়ে তার মেধা ছিল কল্পনাই করা যায় না। তার স্মৃতিকে ধরে রাখতে হবে।
টেলি সামাদের ছোট ছেলে দিগন্ত সামাদ বাসসকে জানান, তার বাবা দীর্ঘদিন রোগে ভোগে মারা গেলেন। তার প্রতি যে সর্বস্তরের মানুষের অকৃত্তিম ভালবাসা,তা দেখে তাদের পরিবারের সবাই সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ। তিনি জানান, মুন্সিগঞ্জে গ্রামের বাড়িতে তার পিতাকে দাফন করার জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে পারিবারিক কবস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
দুপুর সাড়ে বারটায় এফডিসিতে জানাজা শেষে টেলিসামাদের মরদেহ নিয়ে পরিবারের লোকজন মুন্সিগঞ্জের উদ্দেশে এফডিসি ত্যাগ করেন।
গতকাল দুপুর দেড়টায় টেলি সামাদ রাজধানীর স্কয়ার হসাপাতালে ইন্তেকাল করেন। তার মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক প্রকাশ করে শোক বানী দেন। গত রাতে ঢাকার বাসভবনের কাছে মসজিদে টেলি সামাদের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। গ্রামের বাড়িতে তৃতীয় জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হবে বলে শিল্পীর ছেলে দিগন্ত সামাদ বাসসকে জানান।