পাকিস্তানের মাজারে বোমা হামলায় নিহত অন্তত ৫, আহত ২৪

পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় নগরী লাহোরের একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় প্রাচীন সুফি মাজারে বুধবার শক্তিশালী বোমা হামলায় অন্তত পাঁচ জন নিহত ও ২৪ জন আহত হয়েছে।
রমজান মাস চলাকালে এ হামলা চালানো হল।
পুলিশ জানিয়েছে, তারা এই হামলায় কি ধরনের বোমা বা বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে তা তদন্ত করছে।
খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।
১১ শতাব্দির বিখ্যাত সুফি মাজার দাতা দরবারের নারী পুণ্যার্থীদের প্রবেশ দ্বারের কাছে এ বিস্ফোরণ ঘটে। এটি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ সুফি মাজার।
এই মাজারটি দীর্ঘদিন ধরেই সুফি উৎসবের কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এটা দেশটির মারেফতি মুসলিমদের প্রধান প্রার্থণাস্থল। এ কারণেই মারেফাত বিরোধী জঙ্গিরা একে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। এর আগেও এই মাজারে হামলা চালানো হয়।
২০১০ সালে মাজারটিতে একটি আত্মঘাতী হামলায় ৪০ জনের বেশি লোক প্রাণ হারায়।
এরপর থেকে মাজারটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।
দর্শনার্থীদের মাজারের মূল ফটকে প্রবেশের আগে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় পার হতে হয়।
মারেফাত অনুসারী সুফিবাদীরা পাকিস্তানে প্রায়ই ইসলামিক স্টেটসহ চরমপন্থী জঙ্গিদের হামলার শিকার হন।
ইসলাম ধর্মের একটি অংশের অনুসারীরা সুফিবাদ এবং সুফিদের মাজারে বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানকে ইসলাম ধর্মের মূল বিশ্বাস তাওহিদের পরিপন্থী মনে করে।
জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশফাক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মাজারের নিরাপত্তা কর্মীদের লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয়।
তবে তিনি এই ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে বলে উল্লেখ করেন।
আশফাক আরো জানান, এই হামলায় তিন পুলিশ কর্মকতা, একজন নিরাপত্তা রক্ষী ও একজন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে।
প্রাদেশিক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়াসমিন রশিদ এই হামলায় নিহতদের সংখ্যার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ কর্মকর্তা মুহাম্মদ কাশিফ বলেন, এটি নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়ির উপর একটি ‘আত্মঘাতী হামলা’ হতে পারে।
২০১৪ সালে পেশোয়ারের একটি স্কুলে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তান সরকার চরমপন্থী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। স্কুলে হামলার ঘটনায় ১৫০ জনের বেশি নিহত হয়। এদের অধিকাংশই ছিল শিশু।
জঙ্গিদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান জোরদারের পর থেকে দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নাটকীয়ভাবে উন্নতি লাভ করে। তবে জঙ্গিরা এখনো এ ধরনের ভয়াবহ হামলা চালাতে সক্ষম।