ব্যাংক চেক প্রতারণা করতেন সাহেদ

রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মোহাম্মদ সাহেদের প্রতারণার আরো কৌশল বেরিয়ে এসেছে। দেনা মেটাতে ব্যাংক চেক দিয়ে দিতেন সাহেদ। পরে সেই চেক নিয়ে ব্যাংকে গিয়ে টাকা তুলতে পারতেন না কেউই। কারণ, ওই অ্যাকাউন্টে কোনো টাকাই থাকতো না। এ নিয়ে, ভুক্তভোগীরা যোগাযোগ করলে মামলা করার পরামর্শ দিতেন সাহেদ।

রিজেন্ট হাসপাতাল সিলগালা করে দেয়ার আটদিন পর ধরা পড়েন প্রতিষ্ঠানটির মালিক মোহাম্মদ সাহেদ। একদিন পর আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকা থেকে সাহেদের দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। এদের মধ্যে একজন হলো সাহেদের আস্থাভাজন রিজেন্টের এমডি মাসুদ পারভেজের আত্মীয় গিয়াসউদ্দীন জালাল ও তার গাড়ি চালক মাহমুদুল হাসান। আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে সাহেদের সই করা প্রিমিয়ার ব্যাংকের ৪৮টি চেক বইয়ের পাতা ও ডাচ বাংলা ব্যাংকের চেক বই পাওয়া গেছে। এছাড়া গিয়াসউদ্দীন জালালের প্রাইভেট কার থেকে ২ হাজার পিস ইয়াবা ও বেশকিছু ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে।

র‌্যাব বলছে, পাওনাদারদের টাকা পরিশোধে ব্যাংক চেক দিতেন সাহেদ। সেই চেক নিয়ে ব্যাংকে গিয়ে হতাশ হয়ে ফিরতে হতো ভুক্তভোগীদের। শুক্রবার (১৭ জুলাই) বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-এর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘এই চেকগুলো বিভিন্ন প্রতারণার কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে। পাওনাদাররা সাহেদের কাছে গেলে এই ভুয়া চেকগুলো দিতেন তিনি। এই চেক থেকে ব্যাংক থেকে যখন টাকা তোলা যেত না, তখন সাহেদ ভুক্তভোগীদের বলতেন মামলা করার জন্য।’

র‌্যাব-এর দাবি অনুযায়ী, সহযোগীদের কাছ থেকে উদ্ধার করা গাড়িতে করেই গা ঢাকা দিতে বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছিলেন সাহেদ। আশিক বিল্লাহ আরও বলেন, ‘সাহেদ করিম এই গাড়িতে চড়েই প্রথমে মহেশখালী চলে যান। পরবর্তীতে কুমিল্লা আসেন এই গাড়িতে করে। এরপরে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় আসেন। আমরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এটা্ জানতে পেরেছি যে এই গাড়িতে করেই সাহেদকে আরিচা পর্যন্ত নামিয়ে দেয়া হয়েছে।’

এদিকে, সাহেদের প্রতারণার সম্পর্কে জানতে হটলাইন চালু করেছে র‌্যাব। ভুক্তভোগীরা ০১৭৭-৭৭২০২১১ নম্বরে ফোন করে অথবা rabhq.invest@gmail.com এই আইডিতে অভিযোগ জানাতে পারবেন। এ বিষয়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানান, ‘আমরা একটি হটলাইন চালু করেছি। এই নাম্বারে কল করলে যারা সাহেদ করিমের মাধ্যমে প্রতারণার শিকার হয়েছেন তাদের আমরা আইনগত সহায়তা দিতে প্রস্তুত আছি।’

এছাড়া, গোয়েন্দা পুলিশের কাছ থেকে সাহেদের মামলার তদন্তভার পেতে পুলিশ সদর দপ্তরের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে র‌্যাব।