মুসার বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত

বিতর্কিত ব্যবসায়ী, কথিত পিন্স মুসা বিন শমসেরের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। বিলাসবহুল গাড়ির শুল্ক ফাঁকি ও মুদ্রাপাচারের অভিযোগে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

রোববার ৭ মে বিকালে রাজধানীর কাকরাইলে অধিদপ্তরের কার্যালয়ে মুসাকে তলব করে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মহাপরিচালক মইনুল খান এ তথ্য জানান।

মইনুল খান বলেন, মুসার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হবে। তার মধ্যে শুল্প ফাঁকি ও মুদ্রাপাচারের অভিযোগে দুটি মামলা করবে শুল্ক বিভাগ। আরেকটি মামলা হবে দুদক আইনে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির আলামত আমরা পেয়েছি। দুদক আইনে মামলা করার জন্য সেগুলো আমরা দুদকে প্রেরণ করব। তারা পরবর্তীতে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে।

জিজ্ঞাসাবাদের মুসা কী জানিয়েছেন সে বিষয়ে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, তিনি বলেছেন, ‘আমি কোনো অন্যায় করিনি, আমার বৈধ কাগজপত্র আছে। সময় হলে পেয়ে যাবেন।

মইনুল বলেন, তার বক্তব্য শুনে দায় এড়ানোর মতো মনে হয়েছে।তদন্ত কর্মকর্তার কাছে যে তথ্য আছে সে অনুযায়ী আমরা পদক্ষেপ নেব।

দেড় মাস আগে জনৈক ফারুক উজ-জামান চৌধুরীর নামে নিবন্ধিত শুল্ক ফাঁকি দিয়ে একটি বিলাসবহুল গাড়ি মুসা বিন শমসেরের বাড়ি থেকে জব্দ করার পর সেবিষয়ে তদন্তের জন্য তাকে তলব করে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর।

জিজ্ঞাসাবাদে সেই ফারুক উজ-জামানের বিষয়েও মুসা তথ্য দিয়েছেন জানিয়ে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের শীর্ষ এই কর্মকর্তা বলেন, তিনি অনেকগুলো ক্লু দিয়েছেন। অটো ডিফাইন নামের একটি কোম্পানির নাম এখানে এসেছে।

তিনি বলেছেন, ফারুক উজ-জামানের কাছ থেকে তিনি গাড়িটি কিনেছেন। আর ফারুক উজ-জামান ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে অটো ডিফাইন থেকে ভুয়া রেজিস্ট্রেশন নিয়েছেন। আমরা সেটা খতিয়ে দেখছি।

এর আগে বেলা ৩টার দিকে ডজনখানেক ব্যক্তিগত নিরাপত্তাকর্মী পরিবেষ্টিত হয়ে শুল্ক গোয়েন্দা কার্যালয়ে আসেন মুসা। সেময় সাংবাদিকরা তাকে ঘিরে ধরলেও তিনি কোনো কথা বলেননি।

গত ২১ মার্চ শুল্ক গোয়েন্দার দল মুসার গুলশানের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা ওই ‘রেন্জ রোভার’ জব্দ করে।

এঘটনা তদন্তে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের উপপরিচালক এইচ এম শরিফুল হাসানের নেতৃত্বে দুই সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি গত ২০ এপ্রিল মুসা বিন শমসেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে।

কিন্তু আংশিক পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে বাকশক্তি হারিয়েছেন দাবি করে সময় চাইলে তাকে ১৫ দিনের সময় দিয়ে ৭ মের মধ্যে হাজির হতে সমন দেওয়া হয়।

মুসা বিন শমসেরের সম্পদ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনও তদন্ত চালাচ্ছে।

১৯৫০ সালের ১৫ অক্টোবর ফরিদপুরে জন্ম নেওয়া মুসা ড্যাটকো গ্রুপের মাধ্যমে জনশক্তি রপ্তানির ব্যবসা শুরু করেন। তবে তার পরিচিতি তুলে ধরতে গিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো অস্ত্র ব্যবসার কথাই আগে আনে।

আজকের বাজার: আরআর/ ০৭ মে ২০১৭