অতিরিক্ত লবণ গ্রহণে পাঁচ অপকারিতা

খাবারে স্বাদ আনতে লবণের বিকল্প নেই।লবণ ছাড়া খাবার কথাটা চিন্তাও করা যায় না। নিশ্চয় ছোটবেলায় নুনের মতো ভালোবাসা গল্পটি কমবেশি সবাই শুনেছেন। ছোট মেয়ে তো রাজাকে নুনের মতো ভালোবাসে এ কথা শুনে রাজা রেগে মেয়েকে বনবাসে পাঠিযে দেন।

সেই বনেই একটা সময় রাজা পথ হারিয়ে গেলে মিষ্টি সহযোগে সকল মজার মজার খাবার রাজার সামনে পরিবেশন করা হয়। রাজার সব পছন্দের খাবার অথচ রাজা কিছুই খেতে পারছিলেন না। তার মানে নুনের বা লবণের কতগুণ রাজাও বুঝতে পারলেন ।

নুনের কতোইনা  গুণ। এই যে নুনের  এতো গুণ সেই নুনই  পরিমিত পরিমাণে না খেলে শরীরে হতে পারে নানা রোগশোক। বিশেষজ্ঞরাও তাই মনে করেন।

পরিমাণ মতো লবণ গ্রহণে খাবারের স্বাদ অক্ষুণ্ণ থাকে এবং শরীরের কোনো ক্ষতি হওয়ার সুযোগ থাকে না।

মাত্রাতিরিক্ত লবণের উপস্থিতি শরীরের জন্য ক্ষতিকর। কারণ আমাদের শরীরে সোডিয়াম ক্লোরাইড খুব কম পরিমাণে দরকার। তাই পুষ্টিবিদগণ মনে করেন যতো কম পরিমাণে লবণ গ্রহণ করা যায় ততই শরীরের জন্য ভালো।

আমাদের দেশে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগীদের কাঁচা লবণ কম খেতে উপদেশ দেয়া হয়। কিন্তু অনেকেই ভুল ভেবে রান্নায় লবণের পরিমাণ বাড়িয়ে দেন কিংবা লবণ ভেজে তারপর খান। কিন্তু লবণ ভাজলে পানি শুকিয়ে গেলেও এর সোডিয়াম ক্লোরাইডের পরিমাণ ঠিকই থাকে। তাই যতটা সম্ভব রান্নায় কম লবণ ব্যবহার করাই  উত্তম।

অতিরিক্ত লবণ খাওয়া শরীরের স্বল্প মেয়াদী এবং দীর্ঘ মেয়াদী প্রভাব ফেলে।
চলুন জেনে নেই লবণের ৫টি অপকারিতার কথা:

১. উচ্চ রক্তচাপ:

লবণের অতিরিক্ত সোডিয়াম ক্লোরাইড শরীরের রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে। এই উচ্চ রক্তচাপের কারণে হার্ট ফেইলিউর, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, কিডনি ফেইলিউরের মতো সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তাই উচ্চ রক্তচাপের রোগীকে অতিরিক্ত লবণ খেতে নিষেধ করা হয়।

২. পিপাসা বেড়ে যাওয়া:

বেশি লবণ খেলে পিপাসা বেড়ে যায়। কারণ এটি দেহের কোষে পানির ভারসাম্য রক্ষায় অসুবিধা হয়। শরীরে অতিরিক্ত পানি ধরে রাখে যা কিডনির উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।

৩. পা ফোলাভাব:

চিকিৎসকদের  মতে, অতিরিক্ত লবণ খাওয়ায় কখনো কখনো হাত ও পায়ে পানি জমে। এতে হাত ও পা ফোলা ফোলা ভাব হয়। এটি কিডনি রোগী এবং উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য খুব ঝুঁকির কারণ।

৪. অস্টিওপোরোসিস:

অতিরিক্ত লবণ গ্রহণে শরীরের পানির পিপাসা তৈরি হয়। এতে করে অতিরিক্ত পানি গ্রহণ করতে হয় এবং প্রসাবের পরিমাণ বেড়ে যায়। এতে অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম শরীর থেকে প্রসাবের মাধ্যমে বেড়িয়ে যায়। এতে হাড় দুর্বল এবং ভঙ্গুর হয়ে যায়।

৫. কিডনিতে পাথর হওয়া:

অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ কিডনিতে পাথরের সৃষ্টি করে। তাই পরিমিত পরিমাণ লবণ গ্রহণ সুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরি।

আজকের বাজার/এসএম