আগামী নির্বাচনে পরিস্থিতি বুঝে জোটের সিদ্ধান্ত নেবেন এরশাদ

২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট থেকে বের হয়ে আসা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আবারও পুরনো জোটে ফিরে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। এরশাদ বলেন, আওয়ামী লীগের সাথে আমাদের কোনো জোট নেই, ভবিষ্যতে কী হবে সেটা বলা যাচ্ছে না।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।

২০০৭ সালে বাতিল হওয়া নবম সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয় জাতীয় পার্টি। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনও দুই দল একসঙ্গেই লড়াই করে। মহাজোট সরকারেরও অংশীদার ছিল জাতীয় পার্টি।

তবে বিএনপি-জামায়াতের বর্জনের মুখে দশম সংসদ নির্বাচনের আগে মহাজোট ছেড়ে বের হয়ে আসেন এরশাদ। আর নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে জাতীয় পার্টিতে বিরোধ তৈরি হয়। এরশাদ ভোটে না যাওয়ার ঘোষণা দিলেও তার স্ত্রী রওশন এরশাদের নেতৃত্বে একটি অংশ ভোটে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। আর এরশাদকে নেয়া হয় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে।

এখন সংসদে জাতীয় পার্টি প্রধান বিরোধী দল হলেও তাদের দলের তিন জন নেতা মন্ত্রিসভাতেও আছে।

আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি আসবে কি না, সেই বিষয়টি এখনও নিশ্চিত না। আর এরশাদ ৩০০ আসনে আলাদা নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়ে ধর্মভিত্তিক ছোট ছোট বেশ কিছু দলের সঙ্গে জোটও করেছেন।

তবে সম্প্রতি আবার আলাদা নির্বাচনের বিষয়ে এরশাদ অন্য রকম অবস্থানের কথা জানাচ্ছেন। বিএনপি নির্বাচনে আসলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে এরশাদ আবার জোট বাঁধতে পারেন বলে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রচার আছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এরশাদ বলেন,আগামী নির্বাচনে আমরা ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবার প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে আগামী দিনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তবে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে এরশাদ যে বিএনপির দাবির সাথে একমত নন, সেটি তিনি জানিয়ে দিয়েছেন স্পষ্ট করেই। জানান, সংবিধানের আলোকেই নির্বাচন চান তিনি।

এরশাদ বলেন,আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাই না, কোন তত্ত্বাবধায়ক সরকারই সুবিচার করেনি

সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘জাতীয় পার্টি সব সময় নির্বাচনে বিশ্বাস করে, গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। নির্বাচন ছাড়া কোন কিছুই করা যায় না।’

শুক্রবার থেকে জাতীয় পার্টির নির্বাচনী প্রচার শুরু হবে জানিয়ে এরশাদ বলেন, ‘সবার আগে সিলেটে এসেছি সিলেটবাসীর ভালবাসা নিতে, হযরত শাহজালালের দোয়া নিতে। আশা করছি দোয়া কবুল হবে এবং আগামী নির্বাচনে আমরা ভালো করব।’

এ সময় দলের কো চেয়ারম্যান জি এম কাদের,মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বনমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ চৌধুরী, সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাংসদ জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু,স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা, সংসদে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য ফয়সাল চিশতি, মেজর অবসরপ্রাপ্ত খালেদ আখতার,তাজ রহমান,আতিকুর রহমান আতিক, দলের ভাইস চেয়ারম্যান আলমগীর সিকদার লোটন, সাংসদ সেলিম উদ্দিন, ইয়াহইয়া চৌধুরী,সালাউদ্দিন আহমেদ মুক্তি, এমএ মনিম চৌধুরী বাবু , পীর ফজলুর রহমান মেজবাহ , কেন্দ্রীয় নেতা- আবদুল্লাহ সিদ্দিকী, সাব্বির আহমেদ, আহাদ ইউ চৌধুরী শাহিনসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।