আজও গণপরিবহণ সংকট, দুর্ভোগে রাজধানীবাসী

গত কয়েকদিনের তুলনায় রাজধানীতে আজ রোববার গণপরিবহন সংকট আরো তীব্র হয়েছে। সড়কগুলো থেকে গণপরিবহন যেন উদাও হয়ে গেছে। এতে কর্মস্থলমুখী মানুষের গন্তব্যে যেতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ আবার অতিরিক্ত ভাড়ায় অটোরিকশা ও রিকশায় চড়ে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সড়কে যানবাহন ও চালকদের প্রয়োজনী কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যেই আজ আবার শুরু হয়েছে ট্রাফিক সপ্তাহ। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া আজ থেকে সাতদিন ট্রাফিক সপ্তাহ ঘোষণা করেন। অনেকেই মনে করছেন, এ কারণে গণপরিবহণ মালিক-শ্রমিকরা আজ সড়কে একেবারে গাড়ি বের করেনি।

শনিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার বলেন, শিক্ষার্থীরা আমাদের একটি নৈতিক ভিত্তির উপর দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। সড়কে পরিবহন ব্যবস্থাপনার যে ইতিবাচক দিকটি তারা তুলে ধরেছে আমরা তাই কাল (রবিবার) থেকে ট্রাফিক সপ্তাহ পালন করবো। অবৈধ গাড়ি ও চালকদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করবো।

রাজধানীর মিরপুরের পানির ট্যাংকির সামনে গণপরিবহনের জন্য অপেক্ষায় থাকা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সুলেমান আরেফিন বলেন, আধাঘণ্টা বাসের জন্য অপেক্ষা করছি, কিন্তু পাইনি। আজ মনে হয়, গণপরিবহন একেবারেই নেই। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা তো যান চলাচলে বাঁধা-বিঘ্ন সৃষ্টি করছে না। তাহলে গাড়ি চলতে বাঁধা কোথায় প্রশ্ন রাখেন এই চাকরিজীবী।

যাত্রাবাড়ি থেকে শান্তিনগর এসেছেন আবদুল করিম। তিনি কনকর্ড টাওয়ারের একটি শোরুমের কর্মকর্তা। বলেন, হরতাল-অবরোধেও নিয়মিত অফিস করেছেন। এভাবে হেঁটে আসতে হয়নি।

খিলগাঁও থেকে বনানী যাবেন, ষাটোর্ধ আহমেদ জারদার। তিনি বলেন, রামপুরা ব্রিজ পর্যন্ত হেঁটে এসেছেন। এখন তিন/চারগুন বেশি ভাড়ায় রিকশা ভাড়া করেছেন। আহমেদ জারদার বলেন, বেশিরভাগ যানবাহনে বৈধ কাগজপত্র নেই, চালকদের লাইসেন্স নেই। এ কারণে তারা এখন রাস্তায় বের হচ্ছে না। আবার ট্রাফিক সপ্তাহ ঘোষণা করা হয়েছে। মালিক-শ্রমিকরা মানুষকে জিম্মি করতে চাচ্ছে বলেন তিনি।

সায়েদাবাদ জনপদের বলাকা কাউন্টারের শ্রমিক মো. শরিফ ইউএনবিকে জানান, গাড়ির কাগজপত্র ঠিক আছে। চালকেরও লাইসেন্স আছে। তাহলে গাড়ি বের করেননি কেন। বলেন, নেতাদের নির্দেশ, গাড়ি বের করা যাবে না।

হানিফ পরিবহনের কাউন্টার থেকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন, দূরপাল্লায় গাড়ি নিরাপত্তার জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। মালিক ও নেতাদের নির্দেশনায় তারা গাড়ি বন্ধ রেখেছেন।

সায়েদাবাদ, মহাখালী ও গাবতলি বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে জানা যায়, এসব বাস স্ট্যান্ড থেকে দূরপাল্লার কোনো গাড়ি ছেড়ে যাচ্ছে না। অপেক্ষমান যাত্রীরা অনেকেই বলেন, গাড়ি না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। এদিকে বাস চলাচল না করায়, স্বল্প দূরত্ব ও দূরপাল্লার ট্রেনের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

 

আজকের বাজার/এমএইচ