আসামে বিদেশি সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ

ভারতের আসাম রাজ্যে বিদেশি সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে দিল্লি। রাজ্যটির নাগরিকপঞ্জি নিয়ে যেন তারা কোনও খবর প্রকাশ করতে না পারেন সেজন্যই এমন ব্যবস্থা। ফলে ওই তালিকা নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে বিদেশি সাংবাদিকদের জন্য। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

গুয়াহাটির প্রবীণ সাংবাদিক রাজীব ভট্টাচার্যের দায়ের করা তথ্য অধিকার আইনের আওতায় এক প্রশ্নের উত্তরে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, আসাম সফরের ভিসার জন্য আবেদন করা সাত বিদেশি সাংবাদিকের আবেদন এখন সরকারের একটি ‘সংশ্লিষ্ট’ বিভাগ পরীক্ষা করে দেখছে। সাংবাদিকদের জাতীয়তা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই বিষয়ে তথ্য ‘পাওয়া যায়নি।

রাজীব ভট্টাচার্য বলেন, কেন্দ্রে বিজেপি রয়েছে, সুতরাং আমি খুব একটা অবাক হইনি যে বিদেশি মিডিয়ার উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। কয়েক মাস এবং আরও কিছু নিষেধাজ্ঞার পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবে তবে ফলাফল অন্যান্য কারণের উপরও নির্ভর করতে পারে।

রাজীব আরও বলেন, আমি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারি যে, নির্বাচনে জয়লাভই একমাত্র পরিকল্পনা। কোনও কিছুর মধ্যেই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেই। সবকিছুই নির্দিষ্ট একটা উদ্দেশ্যে করা যার ফলেই তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।

ভারতের ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার মুসলমানদের বিতাড়িত করতেই এই নিবন্ধনের আয়োজন করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে আশঙ্কা করা হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দুই ধর্মের বহু লোক এই ফাঁদে পড়ে গেছেন।

২০১৮ সালের জানুয়ারিতে প্রথম খসড়া প্রকাশ করা হয়। সেখানে মাত্র এক কোটি ৮০ লাখ মানুষের ঠাঁই হয়। অথচ আবেদন করেছিল তিন কোটি ২৯ লাখ মানুষ।

এরপর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে ১৯ লাখ লোককে রাষ্ট্রহীন ঘোষণা করা হয়েছে। নাগরিকত্বের সঠিক প্রমাণ দিতে না পারলে এসব লোকের জীবনে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসবে।

রাষ্ট্রহীন হিন্দুদের ভারতের নাগরিকত্ব দিতে পার্লামেন্টের আগামী অধিবেশনে একটি নাগরিকত্ব সংশোধন বিল উঠানোর পরিকল্পনা করেছে বিজেপি। কিন্তু দেশটিতে বসবাস করা কয়েক কোটি মুসলমানের জন্য এমন কোনো আশ্বাস নেই।

মুসলমানদের আশঙ্কা, রাজ্যটিতে জাতীয় নাগরিকত্ব তালিকা প্রণয়নের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মুসলমানকে রাষ্ট্রহীন ঘোষণা করতে পারে ক্ষমতাসীন মোদি সরকার।

আজকের বাজার/লুৎফর রহমান