ইউনাইটেডের সাথে ড্র করে পয়েন্ট হারালো লিভারপুল, চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে টটেনহ্যাম

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাথে ২-২ গোলে ড্র কর্রে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হারিয়েছে লিভারপুল। রেডসের এই ড্রয়ে গোল ব্যবধানে এগিয়ে শীর্ষস্থানেই  আছে কলো আর্সেনাল। এদিকে দিনের আরেক ম্যাচে নটিংহ্যাম ফরেস্টকে ৩-১ গোলে পরাজিত করে প্রিমিয়ার লিগ টেবিলের চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে টটেনহ্যাম।
জার্গেন ক্লপের দল ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে চির প্রতিদ্বন্দ্বি ইউনাইটেডের বিপক্ষে জিততে পারলে দুই পয়েন্টের ব্যবধানে আর্সেনালকে টপকে শীর্ষে উঠে আসতে পারতো। ২৩ মিনিটে লুইস দিয়াজের গোলে লিড পায় লিভারপুল। কিন্তু তারপরও জয় নিশ্চিত করতে পারেনি। বেশ কিছু সুযোগ হাতছাড়া করে তারা নিজেরাই নিজেদের দূর্ভাগ্য ডেকে এনেছে। জ্যারেল কুয়ানশাহর ভুলে ব্রুনো ফার্নান্দেস ৫০ মিনিটে ইউনাইটেডকে সমতায় ফেরান। ৬৭ মিনিটে কোবি মেইনু ইউনাইটেডকে এগিয়ে দিলে ক্লপ কিছুটা দু:শ্চিন্তায় পড়েন। এবারের মৌসুমে এফএ কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইউনাইটেডের কাছে হারের পনুরাবৃত্তি এড়াতে মরিয়া হয়ে উঠে লিভারপুল। তারই ধারাবাহিকতায় এ্যারন ফন-বিসাকার বিপক্ষে হার্ভি এলিয়টের আদায় করা পেনাল্টি থেকে ৮৪ মিনিটে মোহাম্মদ সালাহ লিভারপুলকে সমতা উপহার দেন।
কিন্তু তারপরও মৌসুমের শেষে ক্লপের ইউনাইটেড ছাড়ার আগে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের শেষ সফরটা স্মরণীয় করে রাখতে না পারায় পুরো লিভারপুল শিবির দারুন হতাশ হয়েছে। ৩১ ম্যাচে সমান ৭১ পয়েন্ট নিয়ে লিভারপুল এখন আর্সেনালের পরে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। কিন্তু ৯ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে গানার্সরা। তৃতীয় স্থানে থাকা ম্যানচেস্টার সিটির থেকে এই দুই দল এক পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছে। মৌসুম শেষ হতে আর মাত্র সাত ম্যাচ বাকি আছে।
ম্যাচ শেষে ক্লপ বলেছেন, ‘আমাদের এই ম্যাচটি জেতা উচিৎ ছিল, এখানে কোন দ্বিমত নেই। প্রথমার্ধে আরো একটি গোল পাওনা ছিল, কিন্তু শেষ মুহূর্তে আমরা সেটা কাজে লাগাতে পারিনি। পুরো লিভারপুল কমিউনিটিকে শান্ত থাকতে হবে। আমরা যেখানে ছিলাম সেখানেই আছি, এখন শুধু সঠিকভাবে সবকিছু কাজে লাগাতে হবে। এই মুহূর্তে আমরা যদি ১০ পয়েন্ট এগিয়ে থাকতাম তবে এত কথা হতো না। এখনো শিরোপা লড়াইয়ে টিকে আছি এবং এতেই আমি সন্তুষ্ট।’
ইউনাইটেড বস এরিক টেন হাগ বলেছেন, ‘সত্যিই প্রতিক্রিয়া অম্লমধুর। বেশ কয়েকটি বাজে ভুলের জন্য আমরাই দায়ী। অন্যদিকে আমি দারুন গর্বিত। সবাই আমাদের উন্নতি লক্ষ্য করছে। এই দলটির দারুন সম্ভাবনা রয়েছে।’
এদিকে লন্ডনের টটেনহ্যাম হটস্পার স্টেডিয়ামে কাল স্বাগতিকরা হয়ে উঠেছিল অপ্রতিরোধ্য। ১৫ মিনিটে ফরেস্ট ডিফেন্ডার মুরিলোর আত্মঘাতি গোলে এগিয়ে যায় আনগে পোস্তেকোগ্লুর দল। টিমো ওয়ার্নারের লো ক্রস থেকে মুরিলো বল ক্লিয়ার করতে গেলে তা নিজের জালেই জড়ায়। এন্থনি এলানগার পাস থেকে দারুন স্ট্রাইকে ২৭ মিনিটে ক্রিস উড ফরেস্টকে সমতায় ফেরান। এবারের মৌসুমে এটি উডের ১২তম গোল। ৫২ মিনিটে জোড়ালো শটে আবারো টটেনহ্যামকে এগিয়ে দেন মিকি ফন ডি ভেন। ছয় মিনিট পর ১৪ গজ দুর থেকে পেড্রো পোরোর শক্তিশালী ভলিতে টটেনহ্যামের বড় জয় নিশ্চিত হয়।
এই জয়ে গোল ব্যবধানে এ্যাস্টন ভিলাকে পিছনে ফেলে টটেনহ্যাম চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে। হাতে আবার এক ম্যাচ বেশী রয়েছে। শীর্ষ চারে থেকে লিগ শেষ করার মাধ্যমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার দৌড়ে সঠিক পথেই রয়েছে পোস্তেকোগ্লুর দল। স্পার্স বস বলেছেন, ‘প্রত্যেকেই চতুর্থ স্থানটির জন্য মুখিয়ে আছে। আমরা এখন সেই স্থানে, কিন্তু এখানেই সব শেষ হয়ে যায়নি। আমাদের এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। মৌসুম শক্তিশালী ভাবে শেষ করার লক্ষ্যে আমরা দারুনভাবে এগিয়ে যাচ্ছি।’
টেবিলের তলানির দিক থেকে চতুর্থ স্থানে থাকা ফরেস্ট গোল ব্যবধানে লুটনের থেকে কোনমতে রেলিগেশন জোন থেকে উপওে রয়েছে।
রোববার দিনের অপর ম্যাচে ওলে ম্যাকবার্নির শেষ মুহূর্তের গোলে চেলসি তলানির দল শেফিল্ড ইউনাইটেডের সাথে ২-২ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার স্টপেজ টাইমের অন্তিম মুহূর্তের দুই গোলে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে ৪-৩ গোলে পরাজিত করেছিল ব্লুজরা। গতকাল ব্রামাল লেনে ম্যাচের ১১ মিনিটে কনর গালাহারের কর্ণার থেকে থিয়াগো সিলভার দারুন ফিনিশিংয়ে এগিয়ে যায় চেলসি। ৩২ মিনটে গুস্তাভো হামেরের পাস থেকে রাইট উইং ব্যাক জেয়ডেন বোগলে ব্লেডসের সমতায় ফেরান। ৬৬ মিনিটে কোনাকুনি শটে আবারো চেলসিকে এগিয়ে দেন নোনি মাদুয়েকে। স্টপেজ টাইমের তৃতীয় মিনিটে পোস্টের খুব কাছে থেকে ম্যাকবার্নি শেফিল্ডকে সমতায় ফেরান।
চেলসি বস মরিসিও পোচেত্তিনো বলেছেন, ‘এভাবে গোল হজম করা মোটেই ঠিক হয়নি। আমরা খুবই হতাশ। আমাদের আরো বেশী সতর্ক হওয়া উচিৎ ছিল।’ (বাসস/এএফপি)