ইরানে ভয়াবহ বন্যা

গত কয়েক সপ্তাহে ইরানজুড়ে একের পর এক বন্যায় ক্রমশ বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। এখনও পর্যন্ত ভয়াবহ এই বন্যায় ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আরও বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। আর এই সতর্কতা পাওয়ার পর আরও কয়েকটি শহর ও গ্রাম থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে খবর বিবিসির।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোতে ফের ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। ওই এলাকার প্রধান নদীর বাঁধগুলো বিপজ্জনকভাবে পূর্ণ হয়ে ওঠায় সেখান থেকে জল ছেড়ে দিতে হবে বলে জানিয়েছে সে দেশের প্রশাসন। ফলে বিপদের আশঙ্কায় মহিলা ও শিশুদের অপেক্ষাকৃত নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

৫০ হাজার বাসিন্দার শহর সুসানগড় ঝুঁকিতে থাকায় এর বাসিন্দাদের দ্রুত সরিয়ে নিতে হবে বলে জানিয়েছেন আধিকারিকরা। এর পাশাপাশি খুজেস্তান প্রদেশের আরও পাঁচটি এলাকার বাসিন্দাদেরও সরিয়ে নেওয়া হবে। গত সপ্তাহগুলোতে এই এলাকার প্রায় ৭০টি গ্রামের বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নিরাপদ জায়গায়। জ্বালানি কোম্পানিগুলো পাম্প দিয়ে জল সরিয়ে তেল খনি সমৃদ্ধ এই এলাকাটির বন্যা মোকাবিলায় সহায়তা করছে।

১৯ মার্চ থেকে শুরু হওয়া অতি ভারি বৃষ্টিপাতে এক হাজার ৯০০টি শহর, উপশহর ও গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হাজার হাজার সড়ক, সেতু ও ভবন ধ্বংস হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৮৬ হাজার লোক জরুরি ত্রাণ কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় এক হাজার জনকে হেলিকপ্টারে করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছিল। ব্যাপক দুর্যোগের মোকাবিলায় ত্রাণ সংস্থাগুলোকেও বেশ কঠিন পরীক্ষা দিতে হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত ৭০ বছরের মধ্যে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা বলে মন্তব্য করেছেন খুজেস্তান প্রদেশের গভর্নর গোলামরেজা শরিয়াতি। যদিও আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বৃষ্টি থামতে পারে বলে সে দেশের সরকারি টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে। পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরানে যে নিয়মিত বন্যা দেখা দিচ্ছে তার অন্যতম প্রধান কারণ দ্রুত বন কেটে ফেলা।