উবার-পাঠাও বন্ধে সিএনজি চালকদের বিআরটিএ ঘেরাও

অ্যাপনির্ভর যোগাযোগ ব্যবস্থায় যাত্রীদের সেবা দেওয়ার প্রতিষ্ঠান উবার ও পাঠাও বন্ধসহ ৮ দফা দাবি জানিয়েছে ঢাকা জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। এসব দাবিতে রোববার (১০ ডিসেম্বর) ঢাকায় বিআরটিএ কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছে সংগঠনটি। দাবি মানি না হলে ধর্মঘটের হুমকিও দিয়েছে তারা।
ঐক্য পরিষদের অপর দাবিগুলো হলো- খসড়া পরিবহন আইন থেকে ‘শ্রমিক স্বার্থবিরোধী’ ধারা বাতিল, ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়নে ব্যবহারিক পরীক্ষা বন্ধ করা, অননুমোদিত পার্কিংয়ের জন্য মামলা না করা, চালকদের ‘হয়রানি’ বন্ধ করা, নিবন্ধিত অটোরিকশা চালকদের ঢাকা জেলার সব জায়গায় চলাচলের অনুমতি দেওয়া, ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচল করা মেয়াদোত্তীর্ণ অটোরিকশা অপসারণ করে নতুন অটোরিকশা প্রতিস্থাপন, ঢাকায় চালকদের নামে পাঁচ হাজার এবং চট্টগ্রামে চার হাজার অটোরিকশা বিতরণ করা।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শ্রমিকরা মিরপুরের ডেন্টাল কলেজের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কার্যালয়ের সামনে পৌঁছান। সেখানে তাঁরা দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন। বিআরটিএ কার্যালয় ঘেরাওয়ের খবরে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয় সেখানে।


পুলিশি বাধায় বিআরটিএ-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে তাদের লিখিত দাবি-দাওয়া পেশ করেন ঐক্য পরিষদের ঢাকা জেলা কমিটির সদস্য সচিব সাখাওয়াত হোসেন দুলাল।
কর্মসূচি সফল হয়েছে দাবি করে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী দাবি আদায় না হওয়ায় আজ (রোববার) বিআরটিএ কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। বিআরটিএ ঢাকা মেট্রো সার্কেল-১ এর সহকারী পরিচালক শামসুল কবিরসহ কয়েকজন বিআরটিএ কর্মকর্তা আমাদের সঙ্গে দেখা করেন। তাদের হাতে আমরা লিখিত দাবি পেশ করেছি।’
এই পরিবহন নেতা বলেন, দাবি আদায় না হলে ঘোষণা অনুযায়ী ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর ৪৮ ঘণ্টা ঢাকা ও চট্টগ্রামে ধর্মঘট পালন করবেন অটোরিকশা চালকরা। এরপরও দাবি পূরণ না হলে ১৫ জানুয়ারি থেকে দুই মহানগরে লাগাতার ধর্মঘট শুরু হবে।
যদিও গত মাসে ঢাকা ও চট্টগ্রামে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। কিন্তু তাতে কোনো ধরনের প্রভাব পড়েনি এবং অন্যান্য সংগঠনের অটোরিকশার চালকরাও তাতে খুব একটা সাড়া দেয়নি।
‘উবার’ ও ‘পাঠাও’-এর মতো পরিবহন সেবা জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করায় ‘ট্রিপ’ কমে গেছে সিএনজিচালিত অটোরিকশার। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সিএনজিচালকরা। তাঁদের ভাষ্য, উবার-পাঠাও কম ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করছে, যার ফলে সিএনজির দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন যাত্রীরা। এ কারণে দিন শেষে তাঁদের জমার টাকা পর্যন্ত তোলা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে।


অন্যদিকে যাত্রীদের অভিযোগ, এমন পরিস্থিতির জন্য সিএনজি চালক ও মালিকরাই দায়ী। তারা যাত্রীদের জিম্মি করে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। তবে বর্তমানে অ্যাপভিত্তিক পরিবহন সার্ভিস ‘উবার’ ও ‘পাঠাও’ চালু হওয়ার পর তুলনামূলক কম ভাড়ায় যাতায়াত করতে পারছেন যাত্রীরা। ভোগান্তিও তেমন একটা না থাকায় এই সেবার দিকে ঝুকছে মানুষ।
আজকের বাজার: এনএল/সালি/ডিআইচ, ১০ ডিসেম্বর ২০১৭