উৎসে কর কমানোর দাবি ইএবির

আগামী ৫ বছরের জন্য রপ্তানিমুখী শিল্পে উৎসে কর বর্তমান হার থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে রপ্তানিকারকদের সংগঠন এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি)।

গতকাল ১৭ জুন শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ইএবি আয়োজিত বাজেট ভাবনা বিষয়ক অনুষ্ঠানে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়েছে।

সংগঠনটির সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, বর্তমানে রপ্তানিমুখী শিল্প বিভিন্ন প্রতিযোগিতার মধ্যে রয়েছে। বিশ্ব বাজারে ধাপে ধাপে তেলের দাম কমলেও বাংলাদেশে কমেনি। এছাড়া ব্রেক্সিটের প্রভাব, ডলারে বিপরীতে টাকার অতি মূল্যায়ন, ইউরো ও রুবলের দরপতন, পণ্যের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি, পণ্যের দাম কমে যাওয়াসহ কয়েকটি কারণে পোশাক খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এসব কারণে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা হোঁচট খাচ্ছে। তাই আগামী ৫ বছরের জন্য রপ্তানিমুখী শিল্পে উৎসে কর শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ করার জোর দাবি জানাচ্ছি।

কর্পোরেট ট্যাক্স সম্পর্কে ইএবি সভাপতি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে তৈরি পোশাক খাতে কর্পোরেট ট্যাক্স ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। আমি মনে করি দেশীয় শিল্পের স্বার্থে রপ্তানিমুখী সব শিল্পে এই হার ১০ শতাংশ করা উচিত।

প্রস্তাবিত ভ্যাট নিয়ে পোশাক খাত ভীত এমন মন্তব্য করে তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সিনিয়র সহসভাপতি ফারুখ হাসান খান বলেন, ভ্যাট নিয়ে আমরা শঙ্কায় রয়েছি। ভ্যাট নিয়ে ব্যবসায়ীরা বাড়তি চাপে পড়বে কি না তা নিয়েই উদ্যোক্তারা শঙ্কায় আছেন।

আগের চেয়ে উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ক্রেতাদের শর্তমতে কারখানার কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে মালিকদের অনেক বেশি বিনিয়োগ করতে হচ্ছে। কিন্তু পণ্যের দাম তুলনামূলকভাবে বাড়ায়নি তারা। ফলে প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় রপ্তানিতে পিছিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তাই রপ্তানি বাড়াতে সরকারের নীতিগত সহায়তা প্রয়োজন।

বিজিএমইএ সহসভাপতি মোহাম্মদ নাছির বলেন, শুধু নতুন মার্কেটে রপ্তানিতে ৩ শতাংশ নগদ প্রণোদনা পাচ্ছি। কিন্তু অন্য কোনো ক্ষেত্রে প্রণোদনা পাচ্ছি না।

কর্পোরেট ট্যাক্স ১০ শতাংশ করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, পোশাক খাতে রপ্তানি বাড়ছে না। গত ১১ মাস ধরে এ খাতে গড় রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ১৬ শতাংশ। রপ্তানি বাড়াতে দুই বছরের জন্য উৎসে কর মওকুফ করা দরকার।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যাক্সেসোরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএপিএমইএ) সভাপতি আবদুল কাদের খান বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে এক্সেসরিজে ও প্যাকেজিং খাতে কর্পোরেট ট্যাক্স কমানো হয়নি। আগের ৩৫ শতাংশই বলবৎ রাখা হয়েছে। এটা ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনার অনুরোধ করছি। একই সঙ্গে উৎসে কর আগামী ২ বছরের জন্য মওকুফ করার দাবি জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ জুট গুডস এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান এনামুল হক পাটোয়ারী বলেন, রপ্তানিতে কোনো ফি থাকা উচিত নয়। কিন্তু আমাদের অনেক ফি দিতে হয়। আমরা যেহেতু রপ্তানির মাধ্যমে সরাসরি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করি, তাই আমাদের সুযোগ দেয়া উচিত। এতে সরকারও লাভবান হবে।

এ সময় লাইসেন্স প্রাপ্তি আরও সহজ করার দাবি জানান তিনি।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে/ ১৮ জুন ২০১৭