এডিসের লার্ভা পাওয়ায় বাড়ি মালিকদের ৫৪ হাজার টাকা জরিমানা

এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় সংশ্লিষ্ট ভবন মালিকদের ৫৪ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) ভ্রাম্যমাণ আদালত।
নগরীর ৫৪টি ওয়ার্ডে চলমান বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানের (চিরুনি অভিযান) তৃতীয় দিনে আজ ১৪ হাজার ৫৩টি বাড়ি, স্থাপনা, নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন করে ১৭৫টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। ৯ হাজার ৫৬৭টি বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশা বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ অর্থাৎ বিভিন্ন স্থানে ৩ দিনের বেশি জমা পানি পাওয়া যায়। এসকল স্থান ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা পরিষ্কার করেন এবং মশকনিধন কর্মীগণ মশার কীটনাশক প্রয়োগ করেন। এছাড়া এডিসের লার্ভা পাওয়ায় ৯টি মামলায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৫৪ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
অভিযানকালে পরিত্যক্ত টায়ার, বালতি, ফুলের টব, বোতল, পানির মিটার, গ্যারেজ, পানির হাউজ, মাটির পাত্র, ভাঙ্গা মগ, বাড়ির মেঝে, পানির ট্যাংক, প্লাস্টিকের পাত্র, ছাদের ড্রেন, দইয়ের পাত্র, পরিত্যক্ত কমোড, ডাবের খোসা, ভাঙ্গা পাতিল, দুই বাড়ির মধ্যবর্তী স্থান, বেইজমেন্ট ইত্যাদি স্থানের জমে থাকা পানিতে এডিসের লার্ভা পাওয়া যায়।
গত ৬ জুন থেকে আজ পর্যন্ত ৩ দিনে ৫৪টি ওয়ার্ডে মোট ৩৯ হাজার ৮৩৭ টি বাড়ি, স্থাপনা, নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন করে মোট ৫৩৯ টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এবং ২৭ হাজার ৮০৩ টি বাড়ি/স্থাপনায় এডিস মশা বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। এছাড়া এ ৩ দিনে মোট ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
চিরুনি অভিযান পরিচালনার উদ্দেশে প্রতিটি ওয়ার্ডকে ১০টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। আবার প্রতিটি সেক্টরকে ১০টি সাবসেক্টরে ভাগ করা হয়। প্রতিদিন প্রতিটি ওয়ার্ডের ১টি সেক্টরে অর্থ্যাৎ ১০টি সাবসেক্টরে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। প্রতিটি সাবসেক্টরে ডিএনসিসির ৪ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও ১ জন মশক নিধনকর্মী, অর্থাৎ প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রতিদিন ৪০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও ১০ জন মশককর্মী ডিএনসিসির আওতাধীন বিভিন্ন বাড়ি, স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠানে গিয়ে কোথাও এডিস মশার লার্ভা আছে কিনা, কিংবা কোথাও তিন দিনের বেশি পানি জমে আছে কিনা, কিংবা ময়লা-আবর্জনা আছে কিনা, যা এডিস মশার বংশবিস্তারে সহায়ক, তা পরীক্ষা করছে।
চলমান এই চিরুনি অভিযানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ৯ জন কীটতত্ববিদ, ডিএনসিসির ৩ জন কীটতত্ববিদ, স্বাস্থ্য বিভাগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তাগণ প্রত্যক্ষভাবে কাজ করছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডিএনসিসির চিরুনি অভিযানসহ এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন ধরনের কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করছে। আগামী ১৫ জুনের মধ্যে সমগ্র ডিএনসিসিতে চিরুনি অভিযান সম্পন্ন করা হবে।
চিরুনি অভিযান চলাকালে যেসব বাড়ি/স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা কিংবা এডিস মশা বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যাচ্ছে, তার ছবি, ঠিকানা, মোবাইল নম্বরসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে একটি অ্যাপে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এর ফলে চিরুনি অভিযান শেষে ডিএনসিসির কোন কোন এলাকায় এডিস মশা বংশবিস্তার করে তার একটি ডাটাবেস তৈরি হবে। ডাটাবেস অনুযায়ী পরবর্তীতেও তাদেরকে মনিটর করা সহজ হবে।